কীর্তি আজাদ। —ফাইল চিত্র।
প্রার্থিপদ ঘোষণার পর থেকেই ‘বহিরাগত’ নিয়ে তরজায় সরগরম হয়েছিল এলাকার রাজনীতি। পশ্চিম বর্ধমানের দুই সংসদ এলাকায় তৃণমূলের দুই প্রার্থীই এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় সে নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। স্থানীয় প্রার্থীকে ভোটের দাবিতে প্রচার চালিয়েছিল তারা। ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল নানা সংগঠনও। কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুর ও আসানসোল, দুই কেন্দ্রেই জিতে গিয়েছেন তৃণমূলের কীর্তি আজাদ ও শত্রুঘ্ন সিন্হা। শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, লোকসভা ভোটে ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীর ধারণা কাজ করেনি। আবার একাংশ মনে করছে, পশ্চিম বর্ধমানের বড় অংশের হিন্দিভাষী মানুষের ভোট কীর্তি ও শত্রুঘ্নের ঝুলিতে যাওয়ার কারণেই এই ফল।
আসানসোল লোকসভা আসনে শেষ বার স্থানীয় প্রার্থী জিতেছিলেন ২০০৯ সালে। সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরী জয়ী হন সে বার। তার পরে আরও তিনটি লোকসভা নির্বাচন ও একটি উপনির্বাচনের প্রতিটিতে যাঁরা এখানে জয়ী হয়েছেন, কেউই এই শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দা নন। এলাকার সমস্যা ভাল ভাবে বোঝার জন্য ভূমিপুত্র প্রার্থী প্রয়োজন, এমন দাবি উঠছিল নানা তরফ থেকে। তবে তাতে আমল না দিয়ে আসানসোল ও বর্ধমান-দুর্গাপুর, দুই কেন্দ্রেই আদতে বিহারের বাসিন্দা শত্রুঘ্ন ও কীর্তিকে প্রার্থী করে তৃণমূল। বামেরা জামুড়িয়ার প্রাক্তন বিধায়ক জাহানারা খানকে লড়াইয়ে নামিয়ে স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার প্রচার শুরু করে। এক সময়ে রানিগঞ্জের জেকেনগরের বাসিন্দা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিকে প্রার্থী করে তাঁকেই ‘ভূমিপুত্র’ বলে দাবি করে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ময়দানে সেই তত্ত্ব কাজ করেনি।
খনি-শিল্পাঞ্চলে দেশের নানা প্রান্তের মানুষজন কর্মসূত্রে বাস করেন। তাঁদের মধ্যে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের আদি বাসিন্দা বড় সংখ্যক। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের ভোটে হারের পরে ফলাফল পর্যালোচনায় বোঝা গিয়েছিল, ওই অংশের ভোট দলের দিকে টানা যায়নি। কিন্তু ২০২২ সালের উপনির্বাচনে শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করে সেই ভোটের বড় অংশ পায় তৃণমূল। এ বারও তাঁকেই প্রার্থী করা হয়। কীর্তি আজাদকে প্রার্থী করে দুর্গাপুরের হিন্দিভাষী ভোটেও তৃণমূল ভাগ বসিয়েছে বলে অনুমান।
শুধু হিন্দিভাষী মানুষের ভোট নয়, জেলার বাঙালিদের বড় অংশের ভোটও তাঁরা পেয়েছেন বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষ ভোট দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে। উত্তর প্রদেশের ফলই প্রমাণ করে, হিন্দিভাষী মানেই বিজেপি নয়। এখানেও এর অন্যথা হয়নি।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘গত আড়াই বছর সাংসদকে কেউ চোখে দেখেননি। আগামী পাঁচ বছরও তাই হবে। মানুষ যখন ভুল বুঝবেন,
তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে।’’ সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন কারও সাংসদ হওয়া উচিত ছিল, যিনি এলাকা হাতের তেলোর মতো চেনেন, যাঁকে ডাকলেই পাওয়া যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy