Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

মহুয়ার নামগন্ধ নেই, মোদীর মুখেও মতুয়া

হেলিপ্যাড থেকে সভাস্থল পর্যন্ত রাস্তার দুই দিকে ছিল উপচে পড়া ভিড়। জনসভার মাঠে জায়গা না পেয়ে রাস্তার মোড়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে মোদীর বক্তব্য শোনেন বহু মানুষ।

সভা শেষে মোদীর রোড-শো। শুক্রবার তেহট্টের শ্যামনগরে।

সভা শেষে মোদীর রোড-শো। শুক্রবার তেহট্টের শ্যামনগরে। নিজস্ব চিত্র।

সাগর হালদার  
তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ০৮:৪১
Share: Save:

আগের দিন তেহট্টের জনসভায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বার বার ফিরিয়ে এনেছেন মতুয়া প্রসঙ্গ। কেউ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (সিএএ) আবেদন করলে পাঁচ বছরের জন্য বিদেশি হয়ে যাবেন বলেও তিনি সতর্ক করেন। শুক্রবার কৃষ্ণনগর, রানাঘাট ও বহরমপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে সেই তেহট্টে সভা করতে এসে মতুয়া প্রসঙ্গ ছুঁয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদীও। সীমান্তপার থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল বাধা দিচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের ভোট এ বার নজরকাড়া বিশেষত মহুয়া মৈত্রের কারণেই। মোদী-ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি আদানিদের বিরুদ্ধে সংসদে সরব হওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ তোলার অভিযোগ সামনে আসে, যার জেরে শেষমেশ তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। বৃহস্পতিবারের জনসভাতেই মমতা সতর্ক করেছিলেন, এ দিন বিজেপি নেতারা মিথ্যা কথা বলতে তেহট্টে আসবেন। কারণ, তাঁর মতে, “মহুয়াকে নিয়ে ওদের খুব জ্বালা।” তবে মোদী অবশ্য এ দিন মহুয়ার প্রসঙ্গ তোলেননি, যেমন এর আগে কৃষ্ণনগরের জনসভাতেও তিনি মহুয়ার বিষয়ে নীরবই ছিলেন।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

এ দিন দুপুরে নরেন্দ্র মোদীকে দেখতে কার্যত বাঁধ-ভাঙা ভিড় হয় তেহট্টের শ্যামনগরে। হেলিপ্যাড থেকে সভাস্থল পর্যন্ত রাস্তার দুই দিকে ছিল উপচে পড়া ভিড়। জনসভার মাঠে জায়গা না পেয়ে রাস্তার মোড়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে মোদীর বক্তব্য শোনেন বহু মানুষ। বিজেপির দাবি, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ক্রীড়াঙ্গনে তৃণমূল নেত্রীর সভার তুলনায় অন্তত আড়াই-তিন গুণ মানুষের জমায়েত হয়েছিল এ দিন। যদিও তা উড়িয়ে দিয়ে তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, “আমাদের সভা ছিল তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে আর ওদের সভা তিনটি লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে। এই ভিড়ে কিছু যায়-আসে না। আমরা আগের বারের চেয়ে বেশি ভোটে জিতব।”

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বেশ কিছু লোকজন রয়েছে, যাঁদের একটা বড় অংশ গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বিজেপির দিকে ঝুঁকে রয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। আর, দক্ষিণ নদিয়ার রানাঘাট কেন্দ্রের মতুয়া তথা নমঃশূদ্র উদ্বাস্তুরাই অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। গত বার বিজেপি যে রানাঘাটে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিল শুধু তা-ই নয়, গত বিধানসভা নির্বাচনেও তৃণমূল সেখানে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে ২০১৯ সাল থেকেই মতুয়াদের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকে ছিলেন। যদিও সম্প্রতি সিএএ বলবৎ হওয়ার পরে শর্ত দেখে তাঁদের অনেকেই হতাশ এবং এখনও পর্যন্ত বিশেষ কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেননি।

এ দিন মোদী দাবি করেন, কংগ্রেস এমন ভাবে দেশভাগ করেছিল যাতে অমুসলিমদের অনেকে সীমান্তের ও পারে থেকে গিয়েছিলেন। মোদী বলেন, “মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকেদের কথা শুনে আমার খুব কষ্ট হত। এই দুঃখ দূর করার জন্য এবং তাঁদের ন্যায় দেওয়ার জন্যই আমরা সিএএ নিয়ে এসেছি।” তাঁর দাবি, “লোকের আশা ছিল, তৃণমূল একে সমর্থন করবে কিন্তু তারা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করছে। সিএএ নিয়ে অপপ্রচার করছে।”

নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায় পাটই অন্যতম অর্থকরী ফসল। তাঁরা পাটের সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছেন জানিয়ে মোদী দাবি করেন, “তৃণমূল সরকার এখানকার পাট চাষিদের ক্ষতি করতেও ছাড়েননি। কিছু দিন আগে পাটের জন্য সহায়ক মূল্য ২৮৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানকার চাষিরা বলছেন, তারা ঠিক মতো টাকা পাচ্ছেন না। সব তৃণমূল বরবাদ করছে।” কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণীর নাম না করলেও মোদীর দাবি, “এখানে মৃৎশিল্প আছে। তাদের কথা ভেবে বিশ্বকর্মা প্রকল্প করা হয়। কিন্তু তৃণমূল তা করতে দিচ্ছে না।”

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই সব এলাকায় বিএসএফ বা সেনায় কাজ করা বহু মানুষজন আছেন। মোদী বলেন, “কাল আমি যখন বাংলায় আসি, প্রাক্তন সেনাকর্মীরা দেখা করতে এসেছিল। তাঁরা আমাকে ‘ওয়ান র‍্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’ মামলা মেটানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের সব কাজে তাদের সাহায্য করবেন।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE