নলহাটিতে মিঠুনের রোড-শে দেবতনুর সমর্থনে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। এ বার তারই পাল্টা দিলেন বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। বললেন, ‘‘আমি যদি গদ্দার হই, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী গদ্দারনি!’’
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের প্রচারে সোমবার নলহাটিতে এসেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন মিঠুন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি যোগ দেন বিজেপি-তে। বিধানসভা নির্বানে বিজেপির হয়ে প্রচারও করেছিলেন। এ বার করছেন লোকসভা ভোটে। সেই প্রসঙ্গ টেনে দিন কয়েক আগে উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘ভোটের সময় এই মিঠুন চক্রবর্তীকে আমি রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না, ও বাংলার আরেকজন বড় গদ্দার।’’
এ দিন সেই মন্তব্যেরই কড়া জবাব দিয়েছেন মিঠুন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে গদ্দার বলেছেন। এত দিন আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু, আমারও পরিবার আছে। ছেলে-মেয়ে, মা-বাবা রয়েছে। রামায়ণে যেমন সীতা মা আছেন, শূর্পণখাও আছে। আমিও আঘাত করব। আমাকে গদ্দার বললে এ বার থেকে মঞ্চে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে গদ্দারনি বলব!’’ তাঁর আরও দাবি, “যাঁরা দুর্নীতি করছেন তাঁরাই তৃণমূল করেছেন। পরিবর্তন দরকার এই সরকারের।”
এ দিন মিঠুনের রোড-শো দেখতে নলহাটিতে ভিড় করেছিলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থক সহ কাতারে কাতারে মানুষ। হেলিকপ্টার ১১.৫০ মিনিটে নলহাটি শহরের বর্গিডাঙা মাঠে নামে। কিছুক্ষণের মধ্যে জনতা বাঁশের ঘেরা টপকে হেলিকপ্টারের কাছে পৌঁছে যায়। এর ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তড়িঘড়ি নিরাপত্তারক্ষীরা মিঠুনকে নিয়ে নলহাটি বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি হোটেলে নিয়ে যান। এর পরে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ১টার পরে ব্লক অফিসের পাশে একটি মাঠ থেকে রোড-শো শুরু করেন মিঠুন। সঙ্গে বিজেপির প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য।
প্রচণ্ড গরম হওয়া ও এতটা দেরিতে রোড-শো হওয়ার সত্বেও কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রাস্তার পাশে ও বিভিন্ন মোড়ে অভিনেতাকে এক ঝলক দেখার জন্য অসংখ্য মহিলা দাঁড়িয়েছিলেন। রোড-শো চলাকালীন গাড়ির উপরে মিঠুনকে বাজনার তালে নাচতে দেখা যায়। রোড-শো শেষ হয় রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ডের কাছে। বিকেলে নলহাটি ২ ব্লকের আকালীপুরের মাঠে সভা করেন মিঠুন। এই সভাতেও ভিড় হয়েছিল যথেষ্ট। মিঠুন মঞ্চে উঠতেই ‘মহাগুরু’ বলে আওয়াজ তোলে জনতা।
তৃণমূলকে বিঁধে মিঠুন বলেন, ‘‘ভোট দেওয়ার আগে পাঁচ মিনিট ভেবে ভোট দেবেন। যে সরকারকে ভোট দেবেন, তাদের নেতা-মন্ত্রীরা গরু, কয়লা, শিক্ষা ছাড়াও বহু দুর্নীতির জন্য জেল খাটছে। সেই দলকে চান না দুর্নীতি-মুক্ত সরকার চান, সিদ্ধান্ত আপনাদের।’’ বক্তব্যের শেষে ফের চেনা মেজাজে ধরা দিলেন তারকা। বললেন, “আমি এমন একটা সাপ, যে গর্ত থেকে ইঁদুর ধরে। আগে আমার একটি সংলাপ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তাই পরিবর্তন করেছি।’’
মিঠুনের সফরকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, “খবর নিয়ে জানলাম, মিঠুনকে দেখার জন্য অল্প ভিড় ছিল। তবে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই জেলায়। ভোটের ফলেই তা বোঝা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy