মেদিনীপুর লোকসভার জন্য নির্বাচনী জনসভা। সেখানে বিদায়ী বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের নাম না করেই তাঁকে ফের কেন মেদিনীপুরে প্রার্থী করা হল না, সেই প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির উদ্দেশে বললেন, ‘‘মেদিনীপুরে একজন সাংসদ ছিলেন। তাঁকে সরিয়ে কেন সরিয়ে দিলেন? কেন তাঁকে আর এক বার প্রার্থী করে যাচাই করলেন না, মানুষ গ্রহণ করছে কি করছে না!’’
দিলীপের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘আমি যেখানেই দাঁড়াব, সেখানেই জিতব। কিন্তু উনি প্রথমবার ভুল করে যেখানে সাংসদ হয়েছিলেন, সেখানে হেরেছিলেন। আবার সাহস করে একবার নন্দীগ্রামে গিয়ে হেরে বাড়ি ফেরত এসেছেন।’’ মমতাকে তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘উনি কেন বসিরহাট, যাদবপুর থেকে দুই তারকাকে সরিয়ে দিয়েছেন?’’
ইচ্ছে থাকলেও দিলীপ এ বার নিজের জেতা আসনে টিকিট পাননি। দল তাঁকে পাঠিয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে। মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে বৃহস্পতিবার দাঁতনে সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বারবার দিলীপের প্রার্থী না হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘আপনারা কেন আপনাদের আগের প্রার্থীকে না দিয়ে অন্য একজনকে নিয়ে এলেন? কার জন্য? কিসের জন্য? কী করবে সে?’’ বিজেপির উদ্দেশে মমতা আরও বলেন, ‘‘এখানে প্রার্থী বদলালে, কাকের বাসায় কোকিল এসে ডিম পাড়ে। কোকিল যখন বড় হয়ে যায়, তখন কাকের বাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়।’’ কাকে কাক বলতে চেয়েছেন, কাকে কোকিল বলতে চেয়েছেন মমতা, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এ দিন তৃণমূল প্রার্থী জুনেরও কটাক্ষ, ‘‘পরিযায়ী পাখি আসছেন! কোকিল কী করে? বসন্তকালে আসে, তার পর চলে যায়।’’
এ প্রসঙ্গে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘ওঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভাষণ কেউ বুঝতে পারেন না। ওঁর দলের লোকেরাও বুঝতে পারে না। আমরা এ সব কী ভাবে বুঝব!’’
এ দিন নাম না করে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘ওঁর গুণাগুণ সম্বন্ধে আমি বলতে চাই না। কারণ আমি ব্যক্তিগত ভাবে কুৎসা করি না, তাই। তা না হল এক হাজারটা পয়েন্ট বলতে পারতাম।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, এমন কথা কোনও দায়িত্বশীল রাজনীতিকের সাজে না। জনতার কাছে তৃণমূলনেত্রীর আহ্বান, ‘‘গতবার এই সিটটা হেরেছিলাম। এ বারে আপনারা সিটটা দেবেন তো?’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)