—প্রতীকী চিত্র।
আজ ভোট হুগলি জেলার তিন কেন্দ্রে। আরামবাগ নতুন সাংসদ পাবে। কারণ, বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এ বার প্রার্থী নন। হুগলিতে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় আসন ধরে রাখতে পারবেন কি না, শ্রীরামপুর থেকে চতুর্থ বারের জন্য তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় যাবেন কি না, জবাব ইভিএমে দেবেন মানুষ।
হুগলিতে অভিনেত্রী তথা টিভির অনুষ্ঠান সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাঁড় করিয়ে ‘চমক’ দিয়েছে তৃণমূল। রচনা সরাসরি ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
প্রার্থী’ বলে দাবি দলীয় নেতৃত্বের। গতবারের হারা আসনে রচনাকে জেতানো দলের নেতা-কর্মীদের কাছেও চ্যালেঞ্জ। রচনার কথায়, ‘‘প্রচার-পর্বে অগুনতি মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। আশা করছি, ভোটবাক্সে এর
প্রভাব পড়বে।’’
গত লোকসভায় লকেট ৭৩ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন। এ বার দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব কাটিয়ে রচনাকে কতটা বেগ দিতে পারবেন, সেটাও দেখার। দলে দ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে লকেটের দাবি, মানুষ নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আছেন, তাই তিনিই জিতবেন। দুই তারকা প্রার্থীর থেকে জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে থাকলেও সিপিএমের মনোদীপ ঘোষ রাজনীতিতে অনেক পোক্ত। প্রচারে সাড়া দেখে ‘রামে’ যাওয়া ভোটের প্রত্যাবর্তনে আশাবাদী বামেরা। এই কেন্দ্রেই রয়েছে ‘শিল্পহারা’ সিঙ্গুর।
ভোট এলেই সরগরম হয় আরামবাগ মহকুমা। এ বার অবশ্য চায়ের দোকান, হাট-বাজারে, সেলুনে ভোট-চর্চা উধাও! অনেকের মতে, আরামবাগের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ‘সাড়াহীন’ ভোট হতে চলেছে। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরের একটি রেস্তরাঁর মালিক কার্তিক দেবনাথ বলেন, ‘‘অতীতে ভোট এলেই খদ্দরদের নানা বিশ্লেষণ শুনতাম যেত। এ বার তা নেই।’’ খানাকুলের ঘোষপুরের চা-দোকানি ইলিয়াস মোল্লার পর্যবেক্ষণ, ‘‘মানুষকে এত চুপচাপ কখনও দেখিনি।’’ একই বক্তব্য কামারপুকুর লাহাবাজারের চায়ের দোকানদার রাজীব লাহারও।
তৃণমূলের যুবনেতা পলাশ রায়ের অভিমত, ‘‘এই নীরবতার অর্থ
মানুষের প্রাথমিক চাহিদা তৃণমূল সরকার পূরণ করেছে। তাই কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভও নেই। মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ভিড়ই বলে দিয়েছে, মানুষ তৃণমূলের দিকে।’’ বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের ব্যাখ্যা, ‘‘মানুষ যখন স্থানীয় সরকারের বিরুদ্ধে যায়, তখনই চুপ থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক
হয়নি। মোদীজির সভায় উপচে পড়া ভিড়। মানুষ এ ভাবেই বার্তা
দিয়েছেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার মানুষ চুপচাপ। আমাদের প্রার্থীর প্রচারে তাঁর দিকে মানুষের ইঙ্গিত লক্ষ করেছি।’’
গত লোকসভায় তৃণমূল ১১৪২ ভোটে আরামবাগ ধরে রেখেছিল। ২০২১-এর বিধানসভায় আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়া, খানাকুলে বিজেপি জেতে। গত পঞ্চায়েত ভোটে খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতি-সহ খানাকুল এবং পুরশুড়া বিধানসভার মোট ১২টি পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি।
শ্রীরামপুরে সিপিএমের তরুণ প্রার্থী দীপ্সিতা ধর বামেদের আশা-ভরসা। তাঁকে ঘিরে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত মনোভাবও ধরা পড়েছে। তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে ঝাঁঝ বাড়িয়ে, কর্মসংস্থানের আওয়াজ তুলে প্রচারে ছুটে বেরিয়েছেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেত্রী। বিজেপির কবীরশঙ্কর বসু গত বিধানসভায় শ্রীরামপুরে হারেন তৃণমূলের কাছে। তার পরে লোকসভায় প্রার্থী হয়ে তিনিও যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন।
অন্য দিকে, কল্যাণও নিজের যাবতীয় অভিজ্ঞতা ঢেলেছেন প্রচারে। পাক খেয়েছেন গোটা লোকসভা। লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ রাজ্যের নানা প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছেন। অন্যান্য লোকসভায় দলের পরামর্শদাতা সংস্থা প্রচারের রূপরেখা ঠিক করলেও এখানে তারা ‘ব্রাত্য’ থেকেছে! কল্যাণ একা হাতেই সব করেছেন দলের কর্মীদের নিয়ে। এখানে আইএসএফের প্রার্থীও আছেন। তিনি কতটা ভোট পান, তাতে কার লাভ বা লোকসান, থাকছে সেই অঙ্কও।
উত্তর মেলাবেন মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy