(বাঁ দিকে) দিলীপ ঘোষ এবং শাহিনা মমতাজ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিপক্ষ দলের প্রার্থীর প্রতি ‘অভব্য’ আচরণের ঘটনায় এক জন প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিলেন নিজেরই দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আর এক জন আবার বিপক্ষ দলের জখম কর্মীকে দেখতে গেলেন হাসপাতালে। প্রথম জন হলেন মুর্শিদাবাদের নওদার তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজ। আর দ্বিতীয় জন পূর্ব বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। ভোটের আবহে শনিবার মমতাজ ও দিলীপের এমনই ‘সৌজন্য-রাজনীতি’র সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ। সাম্প্রতিক কালে রাজ্য-রাজনীতিতে যা বিরল বলেই মনে করছেন অনেকে।
শনিবার বেলার দিকে শাহিনার বিধানসভা এলাকায় প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী। তাঁর উদ্দেশে গো ব্যাক স্লোগানও দেন শাসকদলের লোকেরা। যা ঘিরে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিকেলে সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন শাহিনা। দলীয় কর্মীদের আচরণ সমর্থন না করে বিধায়ক বলেন, ‘‘যা হয়েছে, সেটা অসভ্যতা এবং নোংরামি। এমন কাজকে মোটেই সমর্থন করছি না।’’ শাহিনীর বক্তব্য, বিরোধী দলের প্রার্থী হিসাবে অধীরের অধিকার রয়েছে প্রচার করার। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেন নোংরামো করবে? এই ধরনের নোংরামো একদমই ঠিক নয়।’’
নজর কেড়েছেন দিলীপও। পূর্ব বর্ধমানের প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই লাগাতার শাসক তৃণমূলকে নিশানা করেছেন তিনি। ‘রাজনৈতিক সংঘর্ষে’ জখম হওয়া এক তৃণমূল কর্মীকে দেখতে শনিবার আচমকা সেই দিলীপের হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়া অনেককেই চমকে দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১০ এপ্রিল পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে স্বপন মল্লিক নামে এক তৃণমূল কর্মী জখম হন। তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে পরে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শনিবার সেখানেই যান দিলীপ। পরিবার জানিয়েছে, ইদের উপহার দিতে স্ত্রী রূপা মল্লিক এবং এক নাতনিকে নিয়ে মেয়ের বাড়ি শিড়রাই গ্রামে গিয়েছিলেন স্বপন। শিড়ারাই আর পোতনার মাঝামাঝি জায়গায় তাঁর উপরে হামলা হয়। বাইক আটকে স্বপনকে লাঠি এবং টাঙ্গি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, নিজের দল তৃণমূলের একটি বিরুদ্ধ-গোষ্ঠীই স্বপনের উপর হামলা চালিয়েছে।
স্বপনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে দিলীপও দাবি করেছেন, ‘‘চুরি বা যে কোনও অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করলেই তৃণমূল নেতারা আক্রমণ করছে। তাতে তৃণমূল কর্মীরাও রেহাই পাচ্ছেন না। বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজন ১০০ দিনের কাজের টাকা লুট করেছে। স্বপন তার প্রতিবাদ করেছিলেন। তাই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা স্বপনের পরিবারের পাশে আছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওঁরা খুবই গরিব। যতটা পারলাম সাহায্য করেছি। আগামী দিনেও আমরা সাহায্য করব।’’ তৃণমূল অবশ্য এর পিছনে সহানুভূতির রাজনীতি দেখছে। তৃণমূল মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাই সহানুভূতি আদায়ের জন্য হাসপাতালে গিয়েছেন।’’
শাহিনার মন্তব্য নিয়ে বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তৃণমূল বিধায়কের ‘প্রতিবাদে’ মুগ্ধ কংগ্রেস। তাদের দলের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলে কিছু বিবেকবান ভাল মানুষ আছেন। তাঁরা অন্যায় সহ্য করলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিবাদ করেন। নওদার বিধায়ক হয়তো ভাল মানুষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy