—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে, বাম আমলের শেষভাগে পাথরপ্রতিমায় উত্থান শুরু হয়েছিল তৃণমূলের। ২০০৮ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে তৃণমূল।
পাশাপাশি সে বার ১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টিতেই জিতেছিল তৃণমূল। মাত্র তিনটি জেতে সিপিএম। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত সব নির্বাচনেই কার্যত একাধিপত্য ছিল ঘাসফুল শিবিরের।
তবে এর মধ্যেই এলাকায় মাথাচাড়া দিয়েছে বিজেপি, আইএসএফ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের অভিযোগের মধ্যেও ভাল ফল করেছে বিরোধীরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নদী-সমুদ্রঘেঁষা এই বিধানসভা এলাকা থেকে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল। তবে গোষ্ঠীকোন্দল, দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ তৃণমূলকে ভোগাতে পারে বলে মত দলেরই অনেকের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গোপালনগর, দুর্বাচটি, রামগঙ্গা, দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর, ব্রজবল্লভপুর, জি প্লট পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল বার বার প্রকাশ্যে এসেছে।
সাংগঠনিক, প্রশাসনিক পদ নিয়েই কোন্দল বেধেছে নেতাদের। দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর এবং ব্রজবল্লভপুর এলাকায় তৃণমূল একাধিক গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছে।
এর মধ্যেই গত কয়েক বছরে এলাকায় বিজেপির যেমন উত্থান হয়েছে, তেমনই উঠে এসেছে আইএসএফ। দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর, দক্ষিণ রায়পুর এবং লক্ষ্মীজনার্দনপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সংগঠন মজবুত করেছে আইএসএফ। পঞ্চায়েত ভোটে বহু আসনে তারা প্রার্থী দিয়েছিল। কিছু আসনে জয়লাভও করে।
কিছু দিন আগে দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েত এলাকার মতিলাল মাদ্রাসায় পরিচালন সমিতির ভোটে আইএসএফ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায়। পাঁচটি আসনে তৃণমূল কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। গত পঞ্চায়েত ভোটে এলাকার ১৫টি পঞ্চায়েতের ৩০৪ আসনের মধ্যে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ-সহ বিরোধীরা প্রায় ৭০টি আসন পায়। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪৫টির মধ্যে কংগ্রেস ২টি, সিপিএম ১টি, বিজেপি ১টি এবং আইএসএফ ১টি আসন দখল করে।
তৃণমূলের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে তাদের আটকাতে এক হয়ে গিয়েছিল বাম, কংগ্রেস, বিজেপি, আইএসএফ। বিরোধীরা অবশ্য সেই অভিযোগ মানেনি।
বিরোধীদের দাবি, একশো দিনের কাজ, বাঁধ মেরামতি, খেয়া ঘাটের ডাক ও আবাস যোজনার টাকা নিয়ে প্রচুর দুর্নীতি করেছে তৃণমূলের লোকজন। কিছু এলাকায় সম্প্রতি রাজ্য সরকারের দেওয়া একশো দিনের কাজের টাকা পেয়েছেন অনেকে। কিন্তু অভিযোগ, অনেকেই কাজ না করে টাকা পেয়েছেন।
সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে তৃণমূল নেতাদের দেওয়ার জন্য চাপও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। অবশ্য প্রকাশ্যে এই বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি।
এক দিকে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ও দুর্নীতিকে হাতিয়ার করছে বিরোধীরা। আবার অন্য দিকে, বিজেপির সাংগঠনিক পদ নিয়ে ব্লক এলাকায় নিজেদের মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব রয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রের খবর।
পাথরপ্রতিমা ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি শুভ্রাংশু নায়েক বলেন, “দুই চোর তৃণমূল ও বিজেপি। এক জন ক্ষমতা ধরে রাখা এবং অন্য জন ক্ষমতা পাওয়ার আশায় কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। আমরা প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছি।”
পাথরপ্রতিমা ব্লকের বিজেপির সাংগঠনিক নেতা নন্দদুলাল দাস বলেন, “আমরা মথুরাপুরে বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। পাথরপ্রতিমাতেও ভাল ফল হবে। যে ভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তৃণমূল বেশি ভোট পাবে না।”
আইএসএফ নেতা তাজ মহম্মদের কথায়, “আমাদের প্রার্থী এখনও প্রচার শুরু না করলেও আমরা বুথভিত্তিক মিটিং করছি। আশা করছি, পাথরপ্রতিমা থেকে ভালই ভোট আইএসএফ পাবে।”
পাথরপ্রতিমার তৃণমূল বিধায়ক সমীরকুমার জানা বলেন, “আমাদের কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। গত লোকসভা ভোটে ৩৬ হাজার ভোটে পাথরপ্রতিমা থেকে লিড ছিল। এ বার সেটা আরও বাড়বে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy