Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

সাংসদ হবেন এলাকারই, বাড়তি উৎসাহ গোঘাটে

লোকসভা ভোটে বিধানসভাভিত্তিক কোন দলের কী অবস্থা? প্রচারে কারা কোন বিষয়কে তুলে ধরছে? আজ, গোঘাট বিধানসভা কেন্দ্র।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৪ ০৯:৪০
Share: Save:

এক পক্ষ প্রচারে ‘মোদীর গ্যারান্টি’র কথা তুলছে। তার প্রতিপক্ষ বলছে, ‘দিদির গ্যারান্টি’র কথা।

শুধুমাত্র বিজেপি-তৃণমূলের ওই প্রচারকে ঘিরে নয়, নির্বাচন নিয়ে এ বার কিছুটা বাড়তি উৎসাহ দেখা যাচ্ছে গোঘাটের ভোটারদের মধ্যে। প্রধান তিন দলের যে প্রার্থীই জিতুন, তিনি তো ‘ঘরের লোক’ই হবেন, বলছেন বহু গ্রামবাসী। তাঁদের আশা, এ বার সাংসদকে হাতের কাছে পাওয়া যাবে।

মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর একজন ‘ভূমিকন্যা’, অন্য জন ‘ভূমিপুত্র’। তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগের বাড়ি হাজিপুর পঞ্চায়েত এলাকার দাতপুরে। বিজেপি প্রার্থীর বাড়ি কাছেই, কামারপুকুর পঞ্চায়েতের দ্বারিয়াপুরে। সিপিএম বিপ্লবকুমার মৈত্র গোঘাটের না হলেও আরামবাগ মহকুমারই বাসিন্দা। বাড়ি খানাকুলের পূর্ব রাধানগরে। ফলে, লোকসভা ভোটে কে জিতবেন, সেই চর্চা ছাপিয়ে গোঘাটের মানুষ মশগুল এই প্রথম এলাকার সাংসদ পাওয়ার আশায়। সব দলের প্রচারেই সমান অভ্যর্থনা করে চলেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় জয়-পরাজয়ের আগাম হিসাব মেলাতে নানা অঙ্ক করে চলেছে দলগুলি।

মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল ও বিজেপি মনে করছে, তাদের প্রার্থীর ভাগ্যে সাংসদ পদের শিকে ছিঁড়বে কি না, তা নির্ভর করবে সিপিএম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের উপর। সিপিএমের দাবি, প্রচারে যে সাড়া মিলছে, তাতে অনেক হিসাব ওলটপালট হয়ে যেতে পারে।

এলাকার ‘নাড়িনক্ষত্র’ চেনা তৃণমূলের দাপুটে নেতা ফরিদ খান মানছে, মানুষের সিদ্ধান্ত বোঝা যাচ্ছে না। বাড়িতে প্রচারে গেলে মহিলারা লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন ঠিকই, সঙ্গে প্রশ্ন তুলছেন ঘরে বসে থাকা বিএ-এমএ পাশ ছেলেমেয়েদের চাকরি নিয়ে।’’ ফরিদ মনে করছেন, যে-ই জিতুন, কম ব্যবধানে জিতবেন। তাঁর দলের ‘বিক্ষুব্ধ’দের ভোট কোন দিকে যাবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে তাঁর। একই রকম সংশয় প্রকাশ করেছেন আরও কয়েক জন নেতা। তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ রায়ের দাবি, “গত লোকসভা ভোটে আমরা প্রায় ৮ হাজার এবং বিধানসভা ভোটে প্রায় ৪ হাজার ভোটে হারি। সব ঠিকঠাক থাকলে এ বার জেতার সম্ভাবনাই দেখছি।”

তবে, শেষ পর্যন্ত ‘বিক্ষুব্ধ’ কেউ থাকবেন না জানিয়ে তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বলেন, “আমি সবার ঘরের মেয়ে। ডাকলে-হাঁকলেই মানুষ আমাকে পান। ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। এ বার লোকসভার প্রার্থী হয়েও পাব বলেই বিশ্বাস।”

বিজেপি পাল্টা দাবি করছে, এ বার তাদের ভাগ্যেই শিকে ছিড়বে। গোঘাটের দলীয় বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন, “এ বার আরও বেশি ভোটে জিতব আমরা।” বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দিগার বলেন, “মানুষের ঢল বিজেপির দিকেই আছে। মোদীজির উন্নয়নে মানুষ ভরসা রাখছেন।”

কার দিকে পাল্লা ভারী তা নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চাইছেন না ভোটাররা। তাঁরা প্রত্যাশার কথা বলছেন। যেমন, বদনগঞ্জের মুকুন্দ হাজরা, হাজিপুরের সুশান্ত মালিক, কামারপুকুরের সুবিমল ঘোষ প্রমুখ জানান, যে-ই জিতুন সাংসদ এ বার নিজের এলাকার থাকছেন। ভোটারদের দায় খালি ভাল দল এবং প্রার্থীকে বেছে নেওয়া। তাঁরা চান, এ বার অপ্রাপ্তি যেন মেটে।

বছর দশেকেরও বেশি সময় ধরে তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণে ভাবাদিঘি এবং পশ্চিম অমরপুরে জট রয়ে গিয়েছে। ঘোষণা হলেও গোঘাটের ঐতিহাসিক গড়মান্দারণে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়নি। সর্বোপরি, বর্ষায় বিপন্ন করে তোলা দলকার জলা সংস্কারের কাজ আজও হয়নি।

পশ্চিম অমরপুরের ফটিক কাইতি নামে এক প্রৌঢ় বলেন, “ভোট তো দিতেই হয়। এ দিকে কেন্দ্র ও রজ্য সরকারের দুর্নীতির বহরে আমরা দিশেহারা। তুলনামূলক কম দুর্নীতি করেছে, এমন দলকেই শেষমেশ বাছতে হয়।”

তৃণমূলের ভোট কাটার আশঙ্কা নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর রায়ের বক্তব্য, “কারও ভোট আমরা কাটছি না। তৃণমূল এবং বিজেপিতে চলে যাওয়া আমাদের ভোট ফিরে আসছে।” তিনি জানান, গত বিধানসভার ৭ শতাংশ প্রাপ্ত ভোট পঞ্চায়েত ভোটে বেড়ে প্রায় ২২ শতাংশ হয়েছে। এ বার ভোটের হার আরও বাড়বে বলেই তাঁর আশা। একই মত প্রকাশ করেছেন গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শিবপ্রসাদ মালিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Goghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy