Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

ভোট দেওয়ায় অনীহা ক্যানিং পশ্চিমের গ্রামে

এ বার লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকেই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিচ্ছে। রবিবার থেকে আরও এক কোম্পানি বাহিনী ক্যানিংয়ে এসেছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রসেনজিৎ সাহা
ক্যানিং  শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১৯
Share: Save:

ভোটদানেই আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বহু মানুষ।

কিন্তু কেন? গত পঞ্চায়েত ভোটে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সব ক’টি আসনেই এখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। শাসক দলের বিরুদ্ধে উঠেছিল সন্ত্রাসের অভিযোগ। অন্য দিকে, তৃণমূলের দাবি ছিল, বিরোধীদের সংগঠন তলানিতে, তাই এই হাল। বিরোধীদের সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছিল ঘাসফুল শিবির।

এ বার সাধারণ ভোটারদের অনেকেরই মত, যতই কেন্দ্রীয় বাহিনীর আশ্বাস মিলুক না কেন, ভোট দিতে যেতেই আর উৎসাহ নেই তাঁদের। ভোটের নামে এখানে ‘প্রহসন’ হয় বলে তাঁদের অনেকেরই মত। মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষের প্রাণের ঝুঁকি যেন না হয়, সে কথাও বলছেন তাঁরা।

গত পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী দলের কোনও প্রার্থীই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। ত্রিস্তর মিলিয়ে ২৭৪টি আসনেই ভোট হয়নি। শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়, গত বিধানসভা নির্বাচনেও ক্যানিংয়ের ইটখোলা, গোপালপুর, দাঁড়িয়া, হাটপুকুরিয়া, বাঁশড়া-সহ ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার প্রায় সব ক’টি পঞ্চায়েত এলাকায় বুথ দখল, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। বহু মানুষ সে বারও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

এ বার লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকেই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিচ্ছে। রবিবার থেকে আরও এক কোম্পানি বাহিনী ক্যানিংয়ে এসেছে। মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছেন জওয়ানেরা নির্ভয়ে, বলছেন ভোট দিতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ভরসা পাচ্ছেন কি মানুষজন?

হাটপুকুরিয়ার বাসিন্দা সুকুর গাজি গত পঞ্চায়েত ও বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। সুকুর বলেন, “ভোট দিয়ে আর কী হবে! ভোট দিলেও যা, না দিলেও তা। পঞ্চায়েত ভোট তো হলই না। আর গত বিধানসভা ভোটে স্ত্রীকে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েও ফিরে এসেছি বুথ থেকে। শুনেছিলাম, আমাদের ভোট নাকি হয়ে গিয়েছে। এ বারও কেউ না কেউ আমাদের ভোট ঠিকই দিয়ে দেবে!” সুকুরের মতোই নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ না করতে পারায় অনেকে ক্ষুব্ধ। ইটখোলা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা রাজীব সর্দার বলেন, “এখন থেকেই সন্ত্রাস শুরু হয়ে গিয়েছে। নানা ভাবে হুমকি চলছে এলাকায়। বিরোধী দল করলেই নানা অত্যাচার হচ্ছে। বাহিনী এসেছে ঠিকই, কিন্তু আদতে কিছুই হবে না’’— হতাশা ঝরে পড়ে তাঁর গলায়।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ক্যানিংয়ে প্রতিবাদ সভায় যোগ দিতে এসে জানিয়েছেন, প্রতিটি বুথে ছ’জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন। শুধু তাই নয়, ভোটপর্ব মিটে গেলেও যাতে বাহিনী দু’তিন মাস থাকে, সেই ব্যবস্থাও তিনি করবেন। কিন্তু বিরোধী দলনেতার এই আশ্বাসেও কার্যত ভরসা পাচ্ছেন না মানুষ। তাঁরা বলেন, “নেতারা তো কত কথাই বলেন! এখানে থাকতে হবে আমাদের, ভুগতেও হবে আমাদের।”

বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, “ক্যানিং এলাকায় বিরোধীদের উপরে লাগাতার অত্যাচার চলছে। গত বিধানসভা ভোটের পরে আমাদের কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। শাসক দলের লাগামহীন সন্ত্রাসে মানুষ আতঙ্কিত।’’ জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী মেঘনাদ হালদার বলেন, “সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। এলাকায় বিরোধী দল করলে তাঁদের উপরে হামলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ ভোট কতটা শান্তিতে দিতে পারবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।”

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা প্রার্থী পায়নি ভোটে দাঁড় করানোর। এ বারও উন্নয়নের নিরিখেই ভোট হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বুথে বুথে। বিরোধীরা শুধু ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Canning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy