Advertisement
E-Paper

সংখ্যালঘু ভোটের নড়াচড়ায় জয়ের অঙ্ক কষছে সব পক্ষ

বিজেপির ঘরে কতটা থাবা বসানো গিয়েছে, তা নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের সন্দেহ রয়েছে। আর তৃণমূলের দাবি, তাদের সংখ্যালঘু ভোট অটুট রয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৯:১২
Share
Save

সংখ্যালঘু ভোট একমুখী, না কি তাতে ‘ভাঙন’ ধরেছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট চাইল বিজেপি। আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। এ সপ্তাহেই বর্ধমান সদরের দলীয় কার্যালয়ে জেলা পর্যায়ের ভোট-পরবর্তী বিশ্লেষণী বৈঠকও হবে। বিজেপির ধারণা, সংখ্যালঘু ভোটের অন্তত ৫% ঘাসফুল ছেড়ে লাল শিবিরে ফিরেছে। সিপিএমও মনে করছে, নিশ্চিত ভাবে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ এ বার তৃণমূলকে ভোট দেয়নি। সেই ভোট গিয়েছে তাদের কাছে। বামেদের দাবি, গত লোকসভায় জেলায় পাওয়া ১১% ভোট এ বার অনেকটাই বাড়বে। তবে বিজেপির ঘরে কতটা থাবা বসানো গিয়েছে, তা নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের সন্দেহ রয়েছে। আর তৃণমূলের দাবি, তাদের সংখ্যালঘু ভোট অটুট রয়েছে। বরং অনেক বিধানসভায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের সৌজন্যে মহিলাদের ভোট বেড়েছে।

পূর্ব বর্ধমানের মোট ভোটের ২১% সংখ্যালঘু ভোট। বিজেপি নেতাদের দাবি, সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের সঙ্গে থাকল না তাতে সিপিএম ভাঙন ধরাতে পারল, তার উপর বর্ধমান-দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব লোকসভার জয়-পরাজয়ের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করছে বেশ কিছুটা। বর্ধমান-দুর্গাপুরের মধ্যে মন্তেশ্বর, ভাতার ও গলসিতে সংখ্যালঘু ভোট ভাল পরিমাণে রয়েছে। আবার বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের রায়না, জামালপুরেও সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত এলাকাগুলির অধিকাংশ জায়গায় দলীয় এজেন্ট ছিল না। সেই হিসাবে বর্ধমান-দুর্গাপুরে তিনশোর বেশি বুথে ও বর্ধমান পূর্বে দু’শোর বেশি বুথে বিজেপির এজেন্ট ছিল না। সেই সব বুথের অনেকগুলিতেই সিপিএম এজেন্ট উপরে ভর করেই বিজেপিকে ভোট করিয়েছে। নেতারা এখন সেই সব বুথের সংখ্যালঘু ভোটারদেরই মন বুঝতে চাইছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে গেরুয়া শিবিরের ধারণা, সে বছর সংখ্যালঘুরা ঢেলে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। লোকসভার চেয়ে বিধানসভায় সিপিএমের দুই শতাংশ মতো ভোট কমেছিল। সেই ভোট গিয়েছিল তৃণমূলের ঝুলিতে।

বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, “ভোটের বিশ্লেষণ করতে গেলে সব তথ্যই প্রয়োজন হবে। সে সব তথ্য বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। তারপর বিশ্লেষণী বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।”

গত লোকসভার থেকে ভোটের হার তুলনামূলক কমেছে এ বার। কাদের ভোট বুথে এল না, এজেন্টদের থেকে সেই তথ্যও জোগাড় করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সিপিএমের জেলা কমিটির মূল্যায়ণ, গত লোকসভায় জেলায় তাদের ১১% ভোট ছিল। পঞ্চায়েতের গ্রামস্তরের ভোট এসেছিল ২৪.৫%। এ বার তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে যেমন ভাঙন ধরেছে, তেমনি বিজেপির তফসিলি ভোটও তাদের দিকে আসবে, দাবি সিপিএম নেতাদের। সব মিলিয়ে ২২% মতো ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরা অবশ্য মনে করছেন, সংখ্যলঘু ভোটের একাংশ পেলে জেলা পরিষদে প্রাপ্ত (১৯.৪২%) ভোটের কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে দল। বিজেপির ভোট ফিরে আসবে বলে তাঁরা মনে
করছেন না।

তৃণমূলের দাবি, সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন তো দূর, আরও এককাট্টা হয়েছে। জামালপুর, মেমারি, কালনা, কাটোয়া, পূর্বস্থলী উত্তর ও দক্ষিণ, মন্তেশ্বরে মহিলা ভোট পুরুষদের তুলনায় বেশি পড়েছে বলেও মনে করাচ্ছেন দলের নেতারা। জেলাস্তরে পুরুষে পড়েছে ৮১.৭৩% আর মহিলা ভোট পড়েছে ৮৩.৭২%। জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলামের দাবি, “বিজেপি-সিপিএম যতই হিসাব করুক সংখ্যালঘুরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রয়েছেন। বরং লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য মহিলারাও একচেটিয়া তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 minority vote Bardhaman

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}