(বাঁ দিকে) দেব। হিরণ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল সওয়া ৮টা: কেশপুরের একটি বুথের সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বচসায় জড়ালেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থী দেব তথা গত দু’বারের সাংসদ তখনও ঘাটালে তাঁর অস্থায়ী আস্তানায়।
সকাল পৌনে ৯টা: কেশপুরের অন্য একটি বুথে যাওয়ার পথে ধু-ধু মাঠের মাঝে হিরণের কনভয় আটকে দিল পুলিশ। ফের বচসা। দেব তখনও ভোট দেখতে বার হননি।
সকাল ১০টা ২০ মিনিট: কেশপুরের একটি বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ফুঁসতে ফুঁসতে হিরণ বললেন, ‘‘তৃণমূল, পুলিশ আর কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলে ম্যাচ ফিক্সিং করে নিয়েছে।’’ দেব তখন ঘাটালের একটি বুথে হাসিমুখে এক বৃদ্ধার পা ছুঁয়ে প্রণাম করার ছবি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করলেন। সেই বৃদ্ধা দেবের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করছেন।
বেলা সাড়ে ১১টা: কেশপুরে হিরণের কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়লেন এক দল লোক। থমকে গেল কনভয়। হিরণ গাড়ির ভিতরে বসে সংবাদমাধ্যমের সামনে চিৎকার করছেন, ‘‘এই দেখুন, এই দেখুন তৃণমূলকে। আমায় আটকাতে ওরা কী করছে।’’ পুলিশের দিকে তাকিয়ে আরও গলা তুলে বললেন, ‘‘দেখতে পাচ্ছেন না? দেখতে পাচ্ছেন না আপনারা?’’ দেব তখন অন্য এলাকায়। বুথের বাইরে হাসিমুখে গল্প করছেন এক তরুণের সঙ্গে। যিনি ভোটকেন্দ্রে এসেছেন হুইলচেয়ারে চেপে।
দুপুর সওয়া ১২টা: হিরণ কেশপুরের বুথের সামনে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি করছেন। দেব তখন দাসপুরের একটি বুথের সামনে গাড়ির উপরে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন মানুষের উদ্দেশে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যস্ত সেই ভিড় সরাতে।
দুপুর ১টা: হিরণের তখন কেশপুরকে দেখে ‘পাকিস্তান’ মনে হচ্ছে। দেব তখন তাঁর কেন্দ্রের একটি গ্রামে পৌঁছে সিঁড়ির ধাপে বসে প্রথম-ভোটারদের সঙ্গে নিজস্বী তুললেন।
বিকাল ৪টে: হিরণ কেশপুরে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন, গোটা কেশপুরে পুনর্নির্বাচন চান। বললেন, ‘‘ভোট কোথায়? শুধু পাগলু ডান্স হয়েছে।’’ দেব তখন এক গ্রামীণ বুথের সামনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
এই ছিল ঘাটালে দুই ফুলের দুই অভিনেতা প্রার্থীর মেজাজ। হিরণ কেশপুরবন্দি হয়ে রইলেন প্রায় দিনভর। সকাল থেকে চিৎকার করতে করতে বিকেলের দিকে শরীরটা যেন ছেড়ে দিয়েছিল! আর দেব কখনও গাড়িতে, কখনও মোটরসাইকেলে চষে ফেললেন একাধিক বিধানসভা এলাকা। হিরণ যখন কেশপুর থেকে বার হতেই পারলেন না (বা বেরোলেন না), দেখা গেল দেব তখন কেশপুরমুখোই হলেন না।
ভোটের দিন প্রার্থীদের মেজাজ কেমন, তা দেখে অনেকেই ফলাফল অনুমান করেন। সাধারণ ধারণা, যে প্রার্থী বেশি চেঁচামেচি করছেন, তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে। সেই নিরিখে হিরণের শরীরী ভাষায় দিনভর রাগ, হতাশাই ঝরে পড়েছে। আর দেব থেকেছেন হাসিমুখে। তাঁর কথায়, ‘‘বিন্দাস।’’ এই ধারণা, অনুমান যে সব সময় মেলে, তা-ও নয়। তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলেছিলেন, ঘাটালের ফলাফল কী হবে, তা নির্ভর করবে কেশপুরের লিড কেমন হবে তার উপর। সেই কারণেই দিনভর কেশপুরে হিরণ পড়েছিলেন কি না তা-ও কৌতূহল। তবে তা স্পষ্ট হবে ৪ জুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy