(বাঁ দিক থেকে) সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দেবাংশু ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
ব্যবধান কমলেও উত্তর কলকাতায় জিতেছেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে টানা চার বার। সূত্রের খবর, শনিবার কালীঘাটে দলের বৈঠকে সেই জয়ের নেপথ্য কাহিনি বলেছেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাহিনি প্রার্থী সুদীপও জানতে পারেননি বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূলনেত্রী। পাশাপাশিই, প্রচারের কাজে তমলুকের তরুণ তৃণমূলপ্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য যে ‘শিথিলতা’ দেখিয়েছেন, তা নিয়ে তাঁকে মৃদু ভর্ৎসনা করেছেন ‘দিদি’।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবারের বৈঠকে মমতা বলেছেন, শেষ তিন দিন তাঁকেই উত্তর কলকাতা নিয়ে পড়ে থাকতে হয়েছে। সুদীপ জানতেও পারেননি, তিনি কী ভাবে ওই আসনটি ‘বার করে’ এনেছেন। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘‘দিদি বলেছেন, শুধু উত্তর কলকাতার জন্য তিনি ৩০০ ফোন করেছেন!’’ সূত্রের খবর, মমতা এ-ও বলেছেন যে, কুণাল ঘোষ, বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালদের তিনি ঘনঘন ফোন করেছেন উত্তর কলকাতা সংক্রান্ত বিষয়ে।
উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে ভোট ছিল শেষ দফায় ১ জুন। তার আগে মমতা তিনটি কর্মসূচি করেছিলেন সুদীপের কেন্দ্রে। নরেন্দ্র মোদী যে পথে রোড-শো করেছিলেন, পরের দিন সেই পথেই পদযাত্রা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই পদযাত্রাতেই বিজেপির ‘প্রতীকী মৃত্যুঘণ্টা’ বানিয়েছিল তৃণমূল। শনিবারের বৈঠকে মমতা বলেছেন, সেটি বানানোর নেপথ্যে ছিলেন বিধায়ক পরেশ।
এ বারে উত্তর কলকাতার লড়াই ‘চিত্তাকর্ষক’ হয়ে উঠেছিল বিবিধ কারণে। তার মধ্যে অন্যতম, তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া তাপস রায়কেই পদ্মশিবির প্রার্থী করেছিল ওই আসনে। তৃণমূলে থাকার সময়ে সুদীপের সঙ্গে তাপসের সম্পর্ক যে কতটা ‘মধুর’ ছিল, তা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় কারণ, দলের মধ্যে থেকে কুণাল-সহ নেতাদের একাংশের সুদীপের প্রকাশ্য সমালোচনা।
শনিবারের বৈঠকে মমতা এমনও মন্তব্য করেছেন যে, উত্তর কলকাতায় কংগ্রেস-বিজেপির ‘বোঝাপড়া’ হয়েছিল। সূত্রের খবর, মমতা বলেন, কে কার থেকে কী ‘খেয়েছেন’, তিনি সব জানেন। তাঁর কাছে সব খবর রয়েছে। উত্তর কলকাতার বাতাসে গুঞ্জন ছিল, সুদীপের বিরুদ্ধে ‘অন্তর্ঘাত’ করতে দলের একাংশ জোট বেঁধেছে। দলের অনেকের মতে, মমতা শনিবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, সকলের অজান্তেই তিনি সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছেন। যা সুদীপও জানতে পারেননি।
অন্যদিকে, তমলুকের প্রার্থী দেবাংশুর প্রচারসূচি নিয়ে শনিবারের বৈঠকে ‘ক্ষোভ’ জানিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, মমতা বলেছেন, দেবাংশুর বয়সে তিনি সকাল ৭টা থেকে রাস্তায় থাকতেন। বেলা ১২টার সময় বাড়ি থেকে বেরোতেন না। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের কাছে তমলুক থেকে এই মর্মে অভিযোগ এসেছে যে, দেবাংশুকে সকাল সকাল প্রচারে পাওয়া যেত না।
এ বার ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন অধিকাংশ সময়েই বাংলায় তাপপ্রবাহ চলেছে। তাই সব দলের প্রার্থীরাই সাতসকালে বেরিয়ে ১১টার মধ্যে দিনের প্রচার মিটিয়ে নিতেন। আবার সূর্য ডুবলে শুরু করতেন বিকালের প্রচার। কিন্তু দেবাংশুকে সকালে পাওয়া যায়নি বলেই দলের একাংশের অভিযোগ। শনিবার তা নিয়েই ওই তরুণ নেতাকে ‘ভর্ৎসনা’ করেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy