হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের রাজ্যেই বেশি মন দিতে হয়েছিল তাঁকে। তাই উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যে সেই ভাবে সময় দিতে পারেননি। এমনই দাবি করে লোকসভা ভোটে উত্তর-পূর্বে বিজেপির মন্দ ফল নিয়ে নিজের দায় ঝাড়লেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা নেডা জোটের আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সেই সঙ্গে ফের দাবি করলেন, একটি বিশেষ ধর্মের নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালানোয় হার হয়েছে বিজেপি প্রার্থীদের। জবাবে, হিমন্তকে অবিলম্বে নেডা থেকে পদত্যাগের পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। মেঘালয়ের শিলং কেন্দ্রে জিতে হিমন্তের তীব্র সমালোচনা করলেন ভিপিপি দলের সভাপতি আর্ডেন্ট বাসোইয়াওমাইতও।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে অসমে বিজেপি সরকার গঠনের দিনে অমিত শাহ হিমন্তকে মুখ্য আহ্বায়ক করে কংগ্রেস-বিরোধী দলগুলির জোট নেডা তৈরি করেছিলেন। নেডার উদ্দেশ্য ছিল, উত্তর-পূর্বকে কংগ্রেসমুক্ত করা। সফলও হয়েছিলেন হিমন্ত। কিন্তু সাম্প্রতিক ফলাফল প্রসঙ্গে হিমন্ত বলেছেন, আগে তিনি অসমের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, তাই অন্যান্য রাজ্যে সময় দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু এখন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় তাঁর দায়িত্ব বেড়েছে। ফলে নেডায় বা অন্য রাজ্যে সময় দিতে পারছেন না। তাঁর দাবি, “এ বার অরুণাচলের বিধানসভা ভোট বাদে উত্তর-পূর্বে কোথাও আমি প্রচারে যাইনি। অরুণাচলে বিজেপি ৪৬ আসনে জিতেছে। কিন্তু বাকি রাজ্যের ভিতরের বিষয় নিয়ে আমি সম্যক অবহিত নই। তবে মণিপুর, তুরার মতো ক্ষেত্রে ফলাফল সত্যিই অপ্রত্যাশিত। কিন্তু যেখানে ধর্মীয় নেতারা মাঠে নামেন, সেখানে রাজনৈতিক নেতাদের পিছু হটতে হয়।”
এই মন্তব্যের পাল্টা গৌরব বলেছেন, হিমন্তের তা হলে নেডার আহ্বায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মণিপুরে বিপর্যয়ের দায় এড়াতে একটি সম্প্রদায়কে দায়ী করা দায়িত্বজ্ঞানহীন ও হঠকারী কাজ। হারের দায় স্বীকার করার প্রাপ্তমনস্কতা তাঁর নেই বলেই এ ভাবে একটি সম্প্রদায়কে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। গগৈ সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে হিমন্তের মন্তব্যের নিন্দা করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘‘বিভাজন বা মেরুকরণ নয়, উত্তর-পূর্বের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের আদর্শ রক্ষা করাই আমাদের কর্তব্য।’’
মেঘালয়ের ভিপিপি দলের সভাপতি আর্ডেন্ট বলেন, ‘‘হিমন্তের মন্তব্য ভিত্তিহীন ও চরম সাম্প্রদায়িক। তাঁর নিজের দলের দিকে মন দেওয়া উচিত। মেঘালয়ে গির্জা কখনও রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে না। এনপিপি নিজের দোষে হেরেছে। জনতা তাদের প্রত্যাখান করেছে। মেঘালয়ের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, সংবিধানে বিশ্বাসী দলকেই বেছে নেবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘খ্রিস্টান হিসেবে আমি কখনওই এমন দলকে ভোট দেব না, যারা সংবিধান বা সংখ্যালঘুদের স্বার্থবিরোধী কাজ করে।’’
গৌরব আরও দাবি করেছেন, ‘‘এ বারের ভোট সেমিফাইনাল ছিল। দু’বছর দিল্লিতে কাজ করে আমি ২০২৬ সালের ফাইনাল খেলায় (বিধানসভা ভোটে) রাজ্য রাজনীতিতে ফিরব। ফের জনতার জয় হবে।’’ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বিধায়কেরা ফের দলে ফিরতে চাইলে কী হবে জানতে চাইলে গৌরব জানান, কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিজেপিতে এখন পুরনো কর্মীদের কোনও গুরুত্ব নেই। পুরনো কর্মীদের পরামর্শ কানে তোলেন না হিমন্ত। কিন্তু কংগ্রেস তেমন দল নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy