রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সেই চিঠি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিতর্কের জেরে উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, ভোটের সময় তিনি মানুষের পাশে থাকতে চেয়েছিলেন। এ ব্যাপারে সংবিধানে কোনও বাধা না থাকলেও তাঁর সফর ঘিরে অযথা রাজনীতি হচ্ছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি চান না তাঁর দফতরের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হোক এবং তাঁকে রাজনীতির দাবার বোর্ডে কেউ বোড়ে হিসাবে ব্যবহার করুক। তাই তিনি তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারই রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নালিশ করেছিল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ ছিল, নির্বাচনী বিধি ভেঙে ভোটের দিন এবং আগের দিন উত্তরবঙ্গের লোকসভা ক্ষেত্রে সফর করতে চলেছেন রাজ্যপাল বোস। অন্য দিকে, রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ছিল, ‘‘রাজভবনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রাজ্যপাল একদম ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন!’’
সেই বিতর্কের পরই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানান রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকব বলেই ভোটের সময় পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার সেই সফরের রাজনীতিকরণ হচ্ছে। আমার দফতরের মর্যাদা কাউকে নষ্ট করতে দেব না। সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালের গতিবিধি কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিন্তু আমি নিজেকে রাজনীতির বোড়ে হিসাবে ব্যবহার করতেও দেব না।’’
শুক্রবার প্রথম দফার লোকসভা ভোট উত্তরবঙ্গে। তার আগে রাজ্যপাল আলিপুরদুয়ারে যেতে পারেন বলে নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল । সেই চিঠিতে তারা লিখেছিল, ‘‘রাজ্যপালকে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার কোচবিহারে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল কমিশন। কারণ, শুক্রবার কোচবিহারে ভোট এবং ভোটের আগে সেখানে ‘সাইলেন্ট পিরিয়ড’ চলছে। কিন্তু তৃণমূল বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, রাজ্যপাল তার পরেও উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন। তাঁর ইচ্ছে রয়েছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে যাওয়ার। শুক্রবার সেখানেও ভোট রয়েছে। কমিশনের পরামর্শ মানলে সেখানেও যেতে পারেন না রাজ্যপাল।’’ বিষয়টি জানিয়ে কমিশনকে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছিল তৃণমূল। এ-ও লিখেছিল, রাজ্যপাল ভোটের আদর্শ আচরণবিধি ভাঙছেন।
যদিও রাজভবন সূত্রে খবর ছিল, রাজ্যপাল আলিপুরদুয়ারে নয়, শিলিগুড়িতে যাচ্ছেন।শুক্রবার উত্তরবঙ্গের যে তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে, সেই জলপাইগুড়ি, কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে শিলিগুড়ি পড়ে না। কারণ, উত্তরের এই শহর দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। তাই সেখানে গেলে কমিশনের বিধিভঙ্গের দায়ে পড়ছেন না রাজ্যপাল। যা উচিত সিদ্ধান্ত বলে মতপ্রকাশ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গে যাওয়া এবং তৃণমূলের নালিশ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘ঠিকই হয়েছে। গতকাল রাজভবনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার মতে, রাজ্যপালের শিলিগুড়িতে থাকার দরকার আছে। কাল যদি উদয়ন গুহের মতো গুন্ডারা ভোট লুট করতে যায়, তখন রাজ্যপাল মহোদয় ওখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার পর দ্রুত পৌছে যেতে পারবেন।’’ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল রাজ্যপাল নিজেই সেই সিদ্ধান্ত বদল করলেন।
বৃহস্পতিবার রাজভবনের বিবৃতিতে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বাংলার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা তিনি যুক্ত থাকবেন ফোন এবং ইমেলের মাধ্যমে। থাকবেন পিস রুমেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy