তখন বসন্ত: ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের কর্মিসভায়। ঘাটালের ভগীরথপুরে। ফাইল চিত্র।
নিভৃতে আলোচনা সারলেন গুরু-শিষ্য।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্প্রতি কোলাঘাটের তারা যুক্ত হোটেলে বৈঠকে বসেছিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব (দীপক অধিকারী) এবং এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলুই। দু’জনের মধ্যে ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, কয়েক দফায় নাকি আবেগঘন কিছু মুহূর্তও তৈরি হয়েছিল। চলেছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং মান-অভিমানের পালাও।
সিনেমা থেকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়ার সময় শঙ্করকেই রাজনৈতিক গুরু মেনেছিলেন দেব। প্রকাশ্যে সে কথা বলতেও শোনা যেত তাঁকে। তবে সে বছর দশেক আগের কথা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিলাবতীর পলি জমেছে সম্পর্কে। নদীর দু’পাড়ের মতোই সমান্তরাল থেকেছেন দেব এবং শঙ্কর। তবে সম্পর্কে টানাপড়েন হলেও শঙ্করকে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক গুরুর মর্যাদা দিতে এখনও কুণ্ঠা বোধ করেন না দেব। এ বারও নাটকীয় পর্বের শেষে ঘাটালে প্রার্থিপদ চূড়ান্ত হওয়ার পর ঘাটালে যখন প্রথম দেব পদার্পণ হল সে দিনও গুরুকে ফোন করেছিলেন শিষ্য। প্রচারে পদযাত্রায় কিছু সময়ের জন্য হলেও পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল দু’জনকে। তবে গুরু হেঁটেছেন। তবে তিনি অনুগামীদের সে ভাবে অনুপ্রাণিত করেননি বলেই তৃণমূলের অন্দরের খবর। সেটা নজর এড়ায়নি দেবেরও। ফলে দেব-শঙ্করের সমীকরণে কিছুতেই স্বত:ফূর্ততা দেখা যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে কোলঘাটের হোটেলের দু’জনের বৈঠক হল। শঙ্কর মানছেন, “ সোমবার কোলাঘাটে দেবের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দেব দলের প্রার্থী। বৈঠক হবে এটাই তো স্বাভাবিক।” দেবও জানিয়েছিলেন, শঙ্করের সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই।
ঘন্টা খানেকের ওই বৈঠকে অতীত বর্তমানের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। তাতে ঘাটালের সামগ্রিক বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। দু’জনের সমস্যা কেন শুরু হয়েছিল, তার শেষ কোথায় একান্তে দু’জনের আলোচনা হয়েছে। অন্যদিকে এক সময় দেবের সারথী যে শঙ্করই ছিলেন, উঠে আসে সেই প্রসঙ্গও। দেব আগের নিবার্চন গুলিতে ভোট কিম্বা সংগঠন নিয়ে মাথা ঘামাতেন না, প্রচারের দিকটা যে শঙ্করই সামলে নিতেন বৈঠকে স্থান পাই সেই পুরানো কথাও। এ বারে প্রচারে শঙ্করের গুটিয়ে থাকার কারণ, সমস্যা কোথায় আলোচনা হয়। তার সমাধান কী ভাবে এই নিয়ে দু’জনের নাকি গুরু গম্ভীর আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর থেকে রাজনৈতিক জমি হারাতে শুরু করেছিলেন দেবের গুরু। কর্তৃত্ব বাড়ছিল শিষ্যের। তারপর শিশুমেলার কমিটি গঠন, ভাইরাল অডিয়োর মতো একাধিক বিতর্কের জেরে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদপ্রাপ্তির কয়েক মাস পরেই তা হারাতে হয় শঙ্করকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, উল্লেখযোগ্য সবদিক নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
শিষ্য গুরুকে ছাপিয়ে গেলেই নাকি গুরুর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হয়। এ নীতির প্রতিফলন ঘটবে ঘাটালের রাজনীতিতে? গুরু সব অভিমান ভুলে ফের শিষ্যের সারথী হয়ে মাঠে নামবেন? নাকি শিষ্যের আচরণে গুমরে থাকা গুরু শুধুমাত্র দল নির্দেশিত দায়িত্ব-কতর্ব্য পালন করেই ক্ষান্ত হবেন?
উত্তর জানে ভবিষ্যৎ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy