—প্রতীকী চিত্র।
এক পক্ষের লক্ষ্য আসন পুনরুদ্ধার। অন্য পক্ষের লড়াই আসন দখলে রাখা। বাকি দলগুলিও জয়ের আশায় আসরে নেমেছে। দলগুলির আদর্শ ভিন্ন ভিন্ন হলেও সবার প্রার্থীই কুড়মি সম্প্রদায়ের। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল থেকে বিজেপি, কংগ্রেস থেকে ফরওয়ার্ড ব্লক, এমনকি এসইউসি পর্যন্ত প্রার্থী নির্বাচন করেছে মাহাতো সম্প্রদায় থেকেই। অথচ কুড়মি সম্প্রদায় থেকে আগে এই কেন্দ্রে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেও তাঁরা জনজাতি স্বীকৃতি আদায়ে ভূমিকা নেননি, এই অভিযোগে এ বার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতোও।
রাজনৈতিক দলগুলির একাংশের দাবি, পুরুলিয়া কেন্দ্রের মোট ভোটারের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ কুড়মি সম্প্রদায়ের। এর বাইরেও বিশাল সংখ্যক অন্য সম্প্রদায়ের ভোট আছে। তৃণমূলের সমীক্ষা অনুযায়ী, জনজাতি ভোটার ১৮.৪ শতাংশ, তফসিলি জাতি ১৮.৫ শতাংশ, সংখ্যালঘু ৬.৮ শতাংশ, মাহাতো বাদ দিয়ে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় (ওবিসি) ১৭.১৫ শতাংশ এবং সাধারণ শ্রেণি ১২.০৫ শতাংশ।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মাহাতো তথা কুড়মি সম্প্রদায়ের ভোটারের পাল্লা ভারী হওয়ায় সেই বাধ্যবাধকতা থেকে দলগুলি হয়তো তাঁদের মধ্যে থেকে প্রার্থী নির্বাচন করছে। কিন্তু সবাই কুড়মি-প্রার্থী করায় ওই অংশের ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে জয়ীর ভাগ্য নির্ধারণ করতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন অন্য সম্প্রদায়ের ভোটারেরা। বিষয়টি সব রাজনৈতিক দলের নেতারা একান্তে মেনে নিলেও তাঁরা জানাচ্ছেন, পুরুলিয়া লোকসভার অতীত দেখেই এই কেন্দ্রে কুড়মি সম্প্রদায়ের বাইরে প্রার্থী করার ঝুঁকি নিতে চাননি শীর্ষ নের্তৃত্ব। ষাটের দশকে লোকসেবক সঙ্ঘের ভজহরি মাহাতো থেকে কংগ্রেসের দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো, ফব-র চিত্তরঞ্জন মাহাতো, বীরসিং মাহাতো, নরহরি মাহাতো, তৃণমূলের মৃগাঙ্ক মাহাতো, বিজেপির জ্যোর্তিময় সিং মাহাতোকে সাংসদ হিসেবে দিল্লিতে পাঠিয়েছেন পুরুলিয়ার বাসিন্দারা। এ বারেও বড় দলগুলির প্রার্থীতালিকায় সেই চিরাচরিত ধারাই দেখা গিয়েছে। ২০১৪ ও ২০০৯ সালে অন্য ছোট ও নির্দলের তরফে অন্য সম্প্রদায়ের বেশ কিছু প্রার্থী থাকলেও অধিকাংশ প্রার্থীই ছিলেন কুড়মি সম্প্রদায়ের।
যদিও বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘আমাদের পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর উন্নয়নমুখী ভূমিকা দেখেই দল ফের তাঁকেই প্রার্থী করেছে।’’ তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার ব্যাখ্যা, ‘‘লোকসভায় প্রার্থী স্থির করে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভার মতো বড়মাপের নির্বাচনে প্রার্থী স্থির করার পিছনে অনেক সমীকরণ ও বিচার্য বিষয় থাকে। সেই সমস্ত দিক দেখেই দক্ষ রাজনীতিবিদ শান্তিরাম মাহাতোকে প্রার্থী করেছেন নেতৃত্ব।’’ এসইউসির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঙ্গলাল কুমার দাবি করেন, তাঁদের দলে প্রার্থী কোন সম্প্রদায়ের, সেটা বিচার্য নয়। গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই তাঁরা নির্বাচনে লড়াই করেন। প্রার্থী বাছাইতে দেখা হয়, তিনি গণআন্দোনের কষ্ঠিপাথরে যাচাইকৃত কি না।’’ তবে আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রার্থী অজিত মাহাতোর দাবি, ‘‘কুড়মি ভোট ব্যাঙ্ককে লক্ষ করেই বিভিন্ন দল মাহাতোদের প্রার্থী করে। অথচ জেতার পরে কুড়মি সম্প্রদায়ের জাতিসত্তার দাবির কথা তাঁরা সংসদে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ বার সেই দাবি সংসদে তুলে ধরতেই আমরা লড়াইয়ে নেমেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy