Advertisement
Back to
Dilip Ghosh BJP

থামছেনই না দিলীপ ঘোষ! ‘কাঠিবাজি’ মন্তব্যের পর আবার নতুন পোস্ট, তিন শব্দে কি বার্তা দলকেই?

বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে ১ লক্ষ ৩৭ হাজারের বেশি ভোটে হেরে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তার পরেই দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে ‘কাঠিবাজি’র অভিযোগ করেছিলেন। শনিবার আবার নতুন পোস্ট করলেন।

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ১০:১৯
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তিনি। চেনা মেদিনীপুর আসন থেকে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুদূর বর্ধমান-দুর্গাপুরে। সেখানে প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে। হারের পর থেকে তাই থামানো যাচ্ছে না দিলীপ ঘোষকে। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি একের পর এক মন্তব্য করে চলেছেন। শনিবারও নতুন পোস্ট করলেন এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে। তিন শব্দের সেই পোস্টে দলের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

এক্সে দিলীপ শনিবার সকাল সকাল যে ছবিটি পোস্ট করেছেন, তাতে তিনটি মাত্র শব্দ রয়েছে— ‘ওল্ড ইজ় গোল্ড’। যার বাংলা তর্জমা করলে হয়— ‘পুরনো জিনিস সোনার মতো দামি’। এই পোস্টের সঙ্গে আর একটি শব্দও খরচ করেননি দিলীপ।

এর আগে ভোটে হেরে যাওয়ার পরেই দিলীপ দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে ‘কাঠিবাজি’র অভিযোগ করেছিলেন। স্পষ্টই বলেছিলেন, ‘‘আমাকে যে কাঠি করে মেদিনীপুর থেকে সরানো হয়েছে, সেটা তো সকলেই জানে!’’ তাঁর বিরুদ্ধে ‘চক্রান্ত’ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। সরাসরি কারও নাম না নিতে না চাইলেও তাঁর মন্তব্যে দল যে অস্বস্তিতে, তা সহজেই বোধগম্য। দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘আমি হারিনি। বিজেপি হেরেছে। আমাকে হারাতে গিয়ে মেদিনীপুর আসনটাও হাতছাড়া হয়ে গেল! আগে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় দেখি, তার পরে আমি আমার সিদ্ধান্ত নেব।’’

দিলীপ আরও বলেছিলেন, ‘‘প্রার্থিতালিকা তৈরির আগে আমাকে দল কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা এর কারণ ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ওখানে (‌মেদিনীপুর) সংগঠন তৈরি ছিল। তার পরেও কেন সরানো হল, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।’’ মেদিনীপুর থেকে লড়লে এক লক্ষের বেশি ভোটে জিততেন বলেও দাবি করেন তিনি। হারের পর অটলবিহারী বাজপেয়ীর একটি উক্তি পোস্ট করেছিলেন দিলীপ। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমার একটা কথা মাথায় রেখো, দলের পুরনো এক জন কর্মীকেও ভাঙতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে নতুন কার্যকর্তাদের ১০ জন আলাদা হয়ে যাক। কারণ পুরনো কার্যকর্তারাই আমাদের বিজয়ের ‘গ্যারান্টি’। খুব দ্রুত নতুন কার্যকর্তাদের উপর ভরসা করা উচিত নয়।’’ অটলের এই উক্তিকে ‘সময়োপযোগী’ বলেও দাবি করেছিলেন দিলীপ।

দিলীপ কারও নাম না নিলেও তাঁর অনুগামীরা স্পষ্ট করেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে আঙুল তুলছেন। তাঁদের দাবি, শুভেন্দু নিজের পছন্দের প্রার্থীর (অগ্নিমিত্রা পাল) হাতে দিলীপের তৈরি করা মেদিনীপুরের জমি তুলে দিতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই আসানসোলের বিধায়ককে নিয়ে আসা হয়েছিল মেদিনীপুরে। কিন্তু অগ্নিমিত্রাও জিততে পারলেন না। দিলীপের হারেও দলের বড় ক্ষতি হল।

শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। সরকার গঠনের পর বিরোধী দলনেতার পদও পান। সেই সময়ে আরও অনেক নেতা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে দলের অন্দরে নব্য এবং পুরাতনের বিভাজন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। দিলীপ বরাবরই সেই পুরাতনের দলে, যাঁরা শুরু থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠন গড়ে তোলার কাজে লেগে আছেন। বিজেপিতে যোগ এবং নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেওয়ার পর দলে শুভেন্দুর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। কিন্তু লোকসভা ভোটে অঙ্ক মেলাতে পারেননি শুভেন্দু। রাজ্য বিজেপি মাত্র ১২টি আসন পেয়েছে, যা আগের বারের চেয়ে অনেক কম। অনেকের মতে, হারের পর দিলীপের সেই চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। বহুল প্রচলিত তিন শব্দ পোস্ট করে আবার দলকে তিনি হয়তো মনে করিয়ে দিলেন, তিনি পুরাতন, তিনিই সোনার মতো দামি।

হারের পর আপাতত নিজেকে কিছু দিন গৃহবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিলীপ। রাজনীতিতে আসার পর এই প্রথম তিনি কোনও নির্বাচনে পরাজিত। তবে রাখঢাক না করেই জানিয়ে দিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন, তার পর নিজের সিদ্ধান্ত নেবেন। ভবিষ্যতে তিনি কী পদক্ষেপ করেন, তা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy