খড়্গপুরে চা-চক্রে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
বিধায়কের সাংসদ পদে লড়াইয়ের টিকিট ‘কনফার্মড’। বিজেপির সাংসদ রয়েছেন ‘ওয়েটিং লিস্টে’। আপাতত নাম ছাড়া দেওয়াল লেখার রুটিনে অভ্যস্ত দিলীপ ঘোষ শাসক দলের প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না। ‘কনফার্মড’ টিকিট পেয়ে রাজনীতিতে তাঁর অগ্রজ দিলীপকে নাছোড় লড়াইয়ের বার্তা দিলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া।
মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র দিলীপ তাঁর সাংসদ এলাকায় মাটি আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন সেই পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই। করেছেন বুথ ভিত্তিক বৈঠক, সভা। বিজেপি প্রথ দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেও সেখানে নাম নেই দিলীপের। সেই অর্থে এখনও তিনি ‘ওয়েটিং লিস্টে’। কিন্তু তাতে কী বা এসে যায়! দিলীপ থাকেন দিলীপেই। বরাবরের মতো এখনও তিনি চাঁচাছোলা। খড়্গপুরে নিয়মিত আসেন সাংসদ। রেলশহরে ছিলেন সোমবারও। সাউথসাইডে ছিলেন এক চা-চক্রে। রবিবার ব্রিগেডের ‘জনগর্জন’ সভা থেকে তৃণমূল তাঁদের প্রার্থী তালিকায় ঘোষণা করেছে মেদিনীপুরের প্রার্থীর নামও। প্রথমবার মেদিনীপুর শহর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী জুন মালিয়াকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল। জুন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এ দিন বিজেপির সাংসদ দিলীপ বলেন, “আমার মনে হয় ওরকম সুন্দর মুখ দেখে মানুষ ভোট দেবে না। কারণ সেই অভিজ্ঞতা লোকের ভাল নয়।” পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে হাসিমুখে তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার প্রতিক্রিয়া, “আমি মনে করি আমার সুন্দর মুখের মতোই মনটাও সুন্দর। দিলীপদার মতো যোদ্ধা যদি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হন লড়াই ভাল হবে। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না।”
অবশ্য দিলীপ এমন মন্তব্যের আগে জুনকে শুভেচ্ছা জানাতেও ভোলেননি। সঙ্গে শুধু সুন্দর মুখ দেখে ভোট না দেওয়ার যে তত্ত্ব তিনি সামনে এনেছেন তার পিছনে কী কারণ সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মেদিনীপুরের সাংসদ। নিজের লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে এ দিন দিলীপ বলেন, “জুন মালিয়াকে আমার শুভেচ্ছা থাকল। তাঁর দল তাঁকে প্রার্থী করেছে। মেদিনীপুরের মানুষ অনেক লড়াই দেখেছে। এখানে বড় লড়াই হয়েছে। রাজনীতির বড় নেতাদের দেখেছে। অনেক বিশিষ্ট নেতা যারা সারা ভারতবর্ষে বিখ্যাত ছিলেন তাঁরা মেদিনীপুর থেকে গিয়েছেন। গত লোকসভায় মানস ভুঁইয়ার মতো বড় প্রার্থী এখানে এসেছিলেন।” সঙ্গে তাঁর লোকসভা এলাকায় গত পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে দিলীপ যোগ করেন, “মানুষ নরেন্দ্র মোদীর দিকে তাকিয়ে উন্নয়ন দেখেছে। সে দিকেই ভোট দেবে। এখানে কাঁসাই সেতু নতুন করে শুরু করতে ৩০৪কোটি টাকা অনুমোদন করেছি। হাইওয়ে, রানওয়ে হচ্ছে। নতুন রেললাইন, হচ্ছে, ট্রেন চলছে। সার্বিকভাবে রেলের মাধ্যমে খড়্গপুরের চেহারা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ এটা দেখবে।”
দিলীপের এমন মন্তব্যেও জয়ে প্রত্যয়ী জুন বলেছেন, “দিলীপদা রাজনীতিতে আমার অগ্রজ। ওঁর সঙ্গে আমার যখন দেখা হয়েছে ভাল কথাও হয়েছে। তবে ওঁর মতো যোদ্ধা যদি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হন তবে লড়াইটা খুব ভাল হবে বলে মনে হয়। আমি তো এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না। সে ক্ষেত্রে দিদির উন্নয়নকে সামনে রেখে এগিয়ে যাব। মেদিনীপুরের মানুষ যে ভাবে আমাকে গত বিধানসভা নির্বাচনে আশীর্বাদ করেছিলেন সে ভাবেই এ বার লোকসভা নির্বাচনে বাকি ছ’টি বিধানসভা এলাকার মানুষও আশীর্বাদ করবেন।”
রাজনীতিতে কখন কী ঘটে যায় কিছু বলা যায় না। তবে শেষপর্যন্ত যদি দিলীপকেই বিজেপি প্রার্থী করে তবে কি মেদিনীপুরে লড়াই হবে ‘সুন্দর মুখ’ বনাম ‘পিচ্ছিল মুখে’র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy