দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
পরিবারতন্ত্র নিয়ে গান্ধী পরিবারকে বারে বারেই আক্রমণ করে গেরুয়া শিবির। এ বার লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্রে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী প্রার্থী হওয়ার পরে এই নিয়ে পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপি। মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ অবশ্য কাঁথির অধিকারী পরিবারের পাশেই থাকলেন। বিজেপির অভ্যন্তরে শুভেন্দু ও দিলীপের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা নতুন কিছু নয়। তার মধ্যে লোকসভা নির্বাচনের আগে দিলীপের মুখে অধিকারী পরিবারের প্রশংসা অন্য মাত্রা এনেছে। উল্লেখ্য, বিজেপির প্রথম দফায় প্রার্থী তালিকায় দিলীপ ঘোষের নাম নেই। এ দিন মেদিনীপুরে এই নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নিজের প্রার্থী হওয়ার জল্পনাও উস্কে দিয়েছেন দিলীপ।
রবিবার মেদিনীপুরে দিলীপ বলেছেন, ‘‘ওই পরিবার (অধিকারী পরিবার) ওখানে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ। মানুষ তাঁদের চায়। তাঁরা আমাদের দলে আসার আগেই ওখানে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ। তাঁদের একটা সমর্থন রয়েছে।’’ কিন্তু সৌমেন্দু প্রার্থী হওয়ায় কেউ কেউ তো ‘পরিবারতন্ত্রে’র খোঁচা দিচ্ছেন? দিলীপের জবাব, ‘‘আমরা কোনও নতুন পরিবারতন্ত্র তৈরি করি না। তবে যে জিতে আসছে, তাঁকে তো জেতাতেই হবে।’’
এ দিন সকালে মেদিনীপুরে এসে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চা চক্রে শামিল হন দিলীপ। পরে স্টেশন রোড ও তার আশেপাশের এলাকায় জনসংযোগে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দলের প্রচার করেছেন। গিয়েছেন গেট বাজারে। জনসংযোগ সেরেছেন। অনেকে মনে করাচ্ছেন, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা সময়ে নানা বিষয়ে মতান্তর সামনে এসেছে। অনেকেই এরমধ্যে বিজেপির ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ লড়াই দেখেছেন। বিভিন্ন সময়ে নানা জল্পনায় এসেছে দু’জনের দুই মেরুতে থাকার কথা। একই দলে থেকেও তাঁরা না কি ‘ভিন্নমুখী’! ওই ‘দূরত্ব’ কি কমছে, দিলীপের এ দিনের বক্তব্যের পরে চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, তবে কি লোকসভা ভোটের আগেই দলে ‘ভারসাম্য’ প্রতিষ্ঠা হবে!
দিলীপ কি এবার মেদিনীপুরে প্রার্থী হবেন না? সেই নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিন মেদিনীপুরে অবশ্য দিলীপ বলেছেন, ‘‘অনেকে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেন, অনেক সময় সেটা কিন্তু ভুল হয়ে যায়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দল বিভিন্ন সিটকে ক্যাটাগরি করে সেখানে প্রস্তুতি আলাদাভাবে শুরু করেছে। কিছু বিশেষ সিটে হয়তো বিশেষ প্রয়াস করতে হবে। সে জন্য আগেই ঘোষণা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নিজস্ব পদ্ধতিতে কাজ করছে। ভোট এলে, ভোটের কাজ শুরু হয়। আমাদের সংগঠন মেশিনের মতো। চলতেই থাকে সারা বছর। গত নভেম্বর থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছি মেদিনীপুরে।’’ তিনি মনে করিয়েছেন, ‘‘যাঁরা লোকসভায় লড়বেন, সবাইকে বলা হয়েছে নিজের এলাকায় কাজ শুরু করুন। আমরা সেটাই করছি। আমাকেও কমিটি (কেন্দ্রীয় কমিটি) থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে নিজের এলাকায় কাজ করার জন্যই।’’
এ দিন কেশিয়াড়িতে নিজের সাংসদ তহবিলের অর্থে নির্মিত একটি সেতুর উদ্বোধন করেন দিলীপ। ২০০৮ সালে বন্যায় জরাজীর্ণ কংক্রিটের সেতু ভেঙেছিল। তারপর আর নির্মিত হয়নি। ঝুঁকি নিয়েই কাঠের পাটাতনের ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হত মানুষকে। কেশিয়াড়ির সাঁতরাপুর পঞ্চায়েতের কুমারডুবি এলাকায় খালের ওপর কংক্রিটের সেতুর উদ্বোধন করেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। অভিযোগ সেতুর পাশেই মাটিতে পোঁতা ছিল তৃণমূলের একাধিক পতাকা। মিছিল থেকে দিলীপের সামনেই তৃণমূলের পতাকা তুলে খালের জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘এতদিন নিজেরা সেতু করতে পারল না। তারউপর রাজনীতি করছে তৃণমূল। একেবারেই উচিত কাজ হয়েছে। এরা মানুষের কথা ভাবে না অথচ রাজনীতি করছে।’’ কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু বলেন, ‘‘টিকিট না পেয়ে দিলীপ ঘোষের মাথা খারাপ হয়েছে। তাই এমন আচরণ করছেন। তৃণমূলের পতাকা দেখে ক্ষিপ্ত হওয়ার কি আছে! ভয় পেয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy