কারখানার গেটে প্রতীকী চাবি হাতে প্রতীক-উর রহমান। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ফের শিরোনামে প্রতীকী চাবির গোছা! সৌজন্যে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী প্রতীক-উর রহমান। মে দিবসের দিন নিজের লোকসভা কেন্দ্রের আমতলা, বিষ্ণুপুর, বজবজ, মহেশতলা, ফলতার একাধিক বন্ধ কারখানার গেটে প্রতীকী চাবির গোছা নিয়ে ঘুরলেন প্রতীক-উর। বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললেন। আশ্বাস দিলেন, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী জয়ী হলে লোকসভায় তিনি বন্ধ কল-কারখানা খোলার বিষয়ে সরব হবেন।
হাওড়া সদর কেন্দ্রে ১৯৮৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে দীর্ঘ দিনের সাংসদ, সিপিএমের সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি। প্রচারে হাওড়া জুড়ে প্রতীকী চাবির গোছা নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছিলেন প্রিয়। যুব সমাজকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি জিতলে হাওড়ার সব বন্ধ কারখানার গেট খুলে দেবেন! সেই নির্বাচনে প্রায় ৯৪ হাজার ভোটে জয়ী হন প্রিয়। সে বারই যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমের সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারিয়ে দেওয়ার মতো হাওড়ার নির্বাচনী ফলাফলও ছিল চমকপ্রদ। এই বার ফের প্রতীকী চাবির গোছা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নেমে ডায়মন্ড হারবারে প্রতীক-উর কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, সে দিকে আগ্রহ থাকবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
কেসি কম্বাইন্ড, গণ্টারম্যান পাইপার্স, জেজে স্পেক্ট্রাম, ওয়ান্ডার, উত্তম ল্যামিনেট, সিল ডার্ক, সোনি রবার-সহ মহেশতলা, জোকা, পৈলান, আমতলার বিভিন্ন বন্ধ কারখানা সামনে বুধবার সকালে পৌঁছে যান ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী। বন্ধ কারখানার গেটে প্রতীকী চাবি নিয়ে ঘুরেছেন, শ্রমিক মহল্লায় কথা বলেছেন। কারখানার গেটে শ্রমিকদের কেউ কেউ সিপিএম প্রার্থীর হাতে টাকাও তুলে দিয়েছেন।
শ্রমিক দিবসের দিন শ্রমিক মহল্লায় এমন অভিনব প্রচার নিয়ে কী মত প্রার্থীর নিজের? প্রতীক-উর বলেন, ‘‘কেউ এক জন বলেন ডায়মন্ড হারবার মডেলের কথা! আজ ডায়মন্ড হারবার মডেলের কঙ্কালটা সবার সামনে এনে দিয়েছি। বিষ্ণুপুর হোক কিংবা ফলতা, আমতলা হোক কিংবা বজবজ, মহেশতলা— সব ক’টি জায়গায় একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। শ্রমিকেরা দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছেন। সাংসদ একটি কথাও সংসদে এই নিয়ে বলেননি। আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি। অনেকে এসেছিলেন। আমি প্রতীকী চাবির গোছা নিয়ে গিয়েছিলাম। বলেছি, যদি জিতি, তা হলে সংসদে এই নিয়ে সরব হব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এই অসম লড়াইয়ে তাঁরা আমার সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমাদের কোনও নির্বাচনী বন্ড নেই। তাই কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কাজহারা, বন্ধ কারখানার শ্রমিকেরা আমাকে যাঁর যেমন সামর্থ্য, তেমন সাহায্য করেছেন। সেই সাহায্য আমার কাছে লক্ষ, কোটি টাকার সমান!’’
কামালগাজি এলাকায় এ দিনই বিকালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বসেছিলেন প্রতীক-উরেরই সতীর্থ এবং আর এক সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। কলকারখানার শ্রমিক, পরিবহণ শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, গৃহ-সহায়িকাদের অনেকে এসে তাঁদের সমস্যার কথা জানান, খাতায় সে সব নোট করে রাখেন সৃজন। তাঁরও আশ্বাস, যাদবপুর তাঁকে নির্বাচিত করে পাঠালে সংসদে শ্রমজীবীদের হয়ে সরব হবেন। মে দিবসে কারখানার গেটে, শ্রমিক এলাকায় ঘুরেছেন প্রতীক-উর, সৃজনদের অভিজ্ঞ নেতা, দমদমের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। কলকাতায় শহিদ মিনার ময়দানে বিকালে মে দিবসের সমাবেশও করেছে সিটু-সহ শ্রমিক সংগঠনগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy