Advertisement
E-Paper

শ্রীরামপুরে সিপিএমের বাজি দীপ্সিতা, হুগলিতে মনোদীপ

দীপ্সিতা ডোমজুড় বিধানসভার নিশ্চিন্দার বাসিন্দা। অর্থাৎ, তিনি শ্রীরামপুর লোকসভারই ভোটার।

শ্রীরামপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা হতেই ডানকুনিতে দেওয়াল লিখন শুরু বামেদের। 

শ্রীরামপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা হতেই ডানকুনিতে দেওয়াল লিখন শুরু বামেদের।  নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪৭
Share
Save

প্রতিপক্ষ তিন বারের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে শ্রীরামপুর লোকসভায় সিপিএমের বাজি তরুণ নেত্রী দীপ্সিতা ধর। রাজনীতির আঙিনায় তিনি পরিচিত মুখ। বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের তরফে নাম ঘোষণা হতেই প্রচারে নেমে পড়েছেন তিনি। বিজেপি এই কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি।

হুগলিতে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিপিএম দাঁড় করিয়েছে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য মনোদীপ ঘোষকে। তিনি চুঁচুড়ার চাঁপাতলার বাসিন্দা।

দীপ্সিতার মতো তরুণ তথা ‘লড়াকু মুখ’ প্রার্থী হওয়ায় শ্রীরামপুরের সিপিএম নেতা-কর্মীরা অনেকটাই উজ্জীবিত। তৃণমূলকে একহাত নিয়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতার অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। ‘মাসলম্যান’ দিয়ে নির্বাচন করার প্রবণতা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে, তাঁদের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করা।

দীপ্সিতা ডোমজুড় বিধানসভার নিশ্চিন্দার বাসিন্দা। অর্থাৎ, তিনি শ্রীরামপুর লোকসভারই ভোটার। এলাকার সাংসদ কল্যাণকে নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন, বিজেপির জনবিরোধী নীতি, সাম্প্রদায়িকতা বা রাষ্ট্রায়ত্ত জিনিস বেচে দেওয়ার বিরুদ্ধে লোকসভায় কল্যাণের যথাযথ ভূমিকা ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির সরকারকে হারাতে হলে, তার নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে, এমন কাউকে লোকসভায় পাঠাতে হবে যাঁরা স্বার্থহীন ভাবে রাজনীতিতে এসেছেন, শুধুমাত্র টিকিট না পেয়ে যাঁরা অন্য দলে যাবেন না। আদর্শগত ভাবে আমাদের লড়াই বিজেপি-তৃণমূল দুই দলের বিরুদ্ধেই।’’

কল্যাণ অবশ্য বিজেপি বা সিপিএম কোনও দলকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শ্রীরামপুর লোকসভায় কাউকে গুরুত্ব দিতে হবে? শ্রীরামপুরের মানুষ তিন বার আমাকে জিতিয়েছেন। আমার উপরে তাঁরা আস্থা, বিশ্বাস রাখেন। আমিও শ্রীরামপুরের মানুষকে ভালবাসি। বিশ্বাস, শ্রদ্ধা করি। আমার পারফর্ম্যান্স মানুষ দেখেছেন। আমি প্রতিদিনের পড়ুয়া।’’ তৃণমূলের দাবি, বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে কল্যাণ সব সময়েই সরব। এ ক্ষেত্রে বামেদের থেকে তিনি অনেক বেশি সরব। কল্যাণের দাবি, হেরে যাওয়ার পরে বিরোধীদের এলাকায় দেখা যায় না। করোনা-পর্বেও কাউকে দেখা যায়নি। তাঁরা শুধু ‘ভোটের রাজনীতি’ করতে আসেন। পাল্টা দীপ্সিতা বলেন, করোনার সময় হাওড়া-হুগলি জুড়ে রেড ভলান্টিয়াররাই মানুষের পাশে ছিলেন।

এই আসনে সিপিএম নেতৃত্ব আইএসএফের সঙ্গে বোঝাপড়া চাইছে। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘আইএসএফ শ্রীরামপুরে প্রার্থী দিলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। ভোট ভাগাভাগিতে বিজেপির সুবিধা হবে।’’ বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিপিএম দিবাস্বপ্ন দেখছে। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ বিজেপিকে জেতানোর ব্যাপারে মনস্থির করে নিয়েছে।’’

হুগলির সিপিএম প্রার্থী বছর বাহান্নর মনোদীপের বাম রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রাবস্থায়। দীর্ঘদিন দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা পোড়খাওয়া এই নেতার ভোটে লড়াই অবশ্য এই প্রথম। নাম ঘোষণার পরেই সন্ধ্যায় বাড়ির কাছে কামারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে কর্মীরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। প্রার্থীকে নিয়ে মিছিল বের হয়। জনসংযোগ সারতে সারতে মিছিল আখনবাজারে শেষ হয়। মনোদীপের কথায়, ‘‘লড়াই কঠিন। তবে মেহনতি মানুষ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছেন। তাই এই ভোট আমাদের কাছে সম্ভাবনাময়ও বটে।’’

লকেট বলেন, ‘‘সিপিএম বুঝদার। তৃণমূলের সঙ্গে কোনও দিন জোট করেনি। তাই ওদের কর্মীদের বলব, এটা প্রধানমন্ত্রী ঠিক করার লড়াই। সেখানে নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প নেই। তাই, আপনাদের ভোটটা নষ্ট করবেন না!’’ তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সিপিএম ভোটে প্রাসঙ্গিক হবে না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPIM Dipshita Dhar

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}