বারাসতের ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী প্রবীর ঘোষ। —ফাইল চিত্র ।
বারাসতের ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী যুক্ত রয়েছেন বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে! এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় ‘অস্বস্তিতে’ পড়েছেন বামেদের রাজ্য নেতৃত্ব। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বারাসত কেন্দ্র থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা প্রবীর ঘোষকে প্রার্থী করেছে বামেরা। অভিযোগ উঠেছে তাঁকে নিয়েই।
অভিযোগ, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা প্রবীর বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি, বিজেপির শিক্ষক সেলের হয়ে বিকাশভবনে স্মারকলিপিও জমা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। এ নিয়ে বুধবার দুপুরেই জরুরি বৈঠকে বসছে ফরওয়ার্ড ব্লক। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রার্থী প্রবীর। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপি বা বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের কোনও ‘আঁতাঁত’ নেই।
বিতর্কের সূত্রপাত মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ্যে আসার পর (যদিও সেই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে বিকাশভবনে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন প্রবীর। ছবিতে দেখা যায়, তাঁর গলায় যে ফিতেয় বাঁধা পরিচয়পত্রটি ঝুলছে, তার রং গেরুয়া। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরে। দলের ভিতরে কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। বারাসতে বাম মনোনীত প্রার্থী বদলের জল্পনাও তৈরি হতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। ফলে প্রার্থীকে নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন জেলা তথা রাজ্য ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। যদিও ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যায়ের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে রাজি নন তাঁরা। এই নিয়ে বুধবারেই ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা সম্পাদকমণ্ডলী রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। সেখানেই প্রবীরকে নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তথা রাজ্য ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।
বুধবার সকালে সঞ্জীব বলেন, ‘‘প্রার্থী সম্পর্কে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পার্টি কোনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবে না। এই নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বুধবার দুপুরেই আলোচনায় বসবে। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা বুধবার বিকালেই ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে জানাবেন বলেও সঞ্জীব জানিয়েছেন।
‘বিতর্কিত’ প্রার্থী প্রবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রবীরের দাবি, ‘‘আমি বিজেপির শিক্ষা সেলের সঙ্গে যুক্ত নই। ওরা একটা ছবি ছেড়েছে। যার কোনও যথার্থতা নেই। আমি যদি কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে একটা জায়গায় যাই এবং কেউ যদি সেই ছবি ছেড়ে দিয়ে কোনও দাবি করে, তা হলে আমার কী করার আছে? আমি বামফ্রন্ট মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী। আমাকে নিয়ে প্রচারও চলছে।’’
ছবি সম্পর্কে প্রবীর বলেন, ‘‘আমি কোনওদিন বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে কোথাও গিয়েছি বলে আমার মনে পড়ছে না। যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তা আমার বন্ধুরা আমাকে দেখিয়েছেন। আমি কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। আমার কাজ ছিল। আমাকে তাড়াহুড়ো করে ডাকা হয়েছিল। অনিচ্ছাসত্ত্বেও গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম ওঁদের সঙ্গে। এর মানে যে আমার সঙ্গে বিজেপির বা বিজেপির কোনও সেলের যোগ রয়েছে, তেমনটা নয়। ওঁরা ওঁদের কাজে এসেছিলেন। আমি আমার কাজে গিয়েছিলাম। কেউ যদি এখন ছবি তুলে অন্য দাবি করে তো আমি কী করতে পারি?’’ যদিও ওই ‘গেরুয়া ফিতে’ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি প্রবীর।
এই বিতর্কের সূত্রেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, বারাসতে কি তা হলে প্রার্থী বদল করবে বামফ্রন্ট? এই জল্পনার ফলে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে দলের কর্মীদের মধ্যেও। প্রবীরকে নিয়ে জায়গায় জায়গায় দেওয়াল লিখনের কাজ প্রায় শেষ। তাঁকে নিয়ে প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। তার মধ্যেই এই অভিযোগ ওঠায় বামেরা ‘অস্বস্তিতে’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy