জয়রাম রমেশ। — ফাইল চিত্র।
ভোট যত এগিয়ে আসছে, দেশের আর্থিক অবস্থা, বেকারত্বের হার, মূল্যবৃদ্ধি— এই সব প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি-বিরোধিতার সুর চড়াচ্ছে কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদী সরকার বেকারত্ব প্রসঙ্গে যে সব কথাবার্তা বলছে, তা ‘পরিসংখ্যান নিয়ে ভোজবাজি’ বলে, আজ মন্তব্য করল কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন, বর্তমানে বেকারত্বের হার গত চার দশকের মধ্যে সব থেকে বেশি।
গত সপ্তাহে একটি অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর মন্তব্য করেছিলেন, ভারত এত দিন ধরে আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানের উপরে নির্ভর করে এসেছে। কিন্তু এখন বিভিন্ন জাতীয় সংস্থা যে তথ্য ও পরিসংখ্যান পেশ করে, তা-ও সমান গ্রহণযোগ্য। মন্ত্রীর সেই দাবির প্রসঙ্গ তুলে আজ জয়রাম বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-র রিপোর্টকে অবজ্ঞা করেছেন মন্ত্রী। তাঁর মতে এই রিপোর্টকে মান্যতা দেওয়া ভারতের ক্রীতদাস মানসিকতার প্রকাশ। সেই রিপোর্ট নস্যাৎ করে মন্ত্রী দাবি করেছেন যে, আর্থিক বর্ষ ২০২০ ও ২০২৩-এর মধ্যে নাকি সংগঠিত ক্ষেত্রে ৫ কোটি ২০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। এই দাবি সম্পূর্ণ অবাস্তব।’’
রমেশের মতে, বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন যে আর্থিক বর্ষ ২০২০ ও ২০২৩-এর মধ্যে খুব বেশি হলে ২ কোটি ২৭ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। রমেশের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথা দিয়েছিলেন যে, প্রতি বছর তিনি দু’কোটি বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই সংখ্যার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি তাঁর সরকার।’’
রমেশ আরও বলেন, ইপিএফও, ইএসআই এবং জাতীয় পেনশন স্কিমের তথ্যের ভিত্তিতে অনুরাগ সংগঠিত ক্ষেত্রে এই বিপুল সংখ্যার নতুন কর্মসংস্থানের দাবি করেছেন। কিন্তু ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ জারি করেছিল, যে-কোনও সংস্থার কর্মীর সংখ্যা যদি ২০-র বেশি হয়, তা হলেই সেই সংস্থার চুক্তিভিত্তিক কর্মীদেরও ইপিএফও বা প্রভিডেন্ট পান্ডের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ফলে ইপিএফও-র তথ্য বিশ্লেষণ করে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া, ইপিএফও-র তথ্যভান্ডারে যে সব কর্মী এত দিন ধরে প্রভিডেন্ট ফান্ড পেয়ে আসছেন, তাঁদের তথ্যও রয়েছে। ইপিএফও তথ্যভান্ডারে নাম নথিভুক্তিকরণের পদ্ধতি এখন অনেক সহজ-সরল হয়ে গিয়েছে। কোনও সংস্থার পুরনো কর্মীদের নতুন করে নথিভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে শুধু ইপিএফও-র তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন কর্মীদের তথ্য সেখান থেকে কী ভাবে পাওয়া যাবে, প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতা। উদাহরণ হিসেবে জয়রাম আরও বলেন, ‘‘ধরুন কোনও সংস্থায় ১৯ জন কর্মী ছিলেন। কোনও আর্থিক বর্ষে কর্মীর সংখ্যা ১৯ থেকে বেড়ে ২০ হল। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মীদের ইপিএফও নথিভুক্ত করা হল। মন্ত্রী এই তথ্যকে ‘২০টি নতুন চাকরি’ বলে জনসাধারণের সামনে পেশ করছেন। কিন্তু বাস্তবে, নতুন চাকরি হয়েছে মাত্র একটি।’’ একেই ‘পরিসংখ্যান নিয়ে ভোজবাজি’ বলে উল্লেখ করেছেন জয়রাম। তাঁর কথায়, ‘‘এই সব পরিসংখ্যান দিয়ে যে ভোজবাজিই সরকার দেখানোর চেষ্টা করুক, বাস্তব ঢেকে রাখা যাবে না। আর বাস্তব এটাই যে, বর্তমানে বেকারত্বের হার গত চার দশকের মধ্যে সব থেকে বেশি।’’ এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্টও পেশ করে জয়রাম বলেন, ‘‘৫ কোটি ২০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের যে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেছেন, তা যে লোকঠকানো, তা সংবাদমাধ্যমও বুঝতে পেরেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy