বেলেঘাটায় ঝামেলার পরে সেখানে পুলিশি প্রহরা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল বেলেঘাটা। মারধর, হাতাহাতির জেরে দিনেদুপুরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোটা এলাকা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ পৌঁছলে তাদেরও বেগ পেতে হয়। সংঘর্ষে দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেলেঘাটা মেন রোডে এই ঘটনা ঘটে। তৃণমূল ও বিজেপি, দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।
জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশন এ বছরও বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মতো এ দিন বেলেঘাটার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক বৃদ্ধ এবং এক জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যুবকের বাড়িতে গিয়ে ভোট গ্রহণ করার কথা ছিল। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নির্দিষ্ট দুই বাড়িতে ভোট গ্রহণ করতে ঢোকার পরপরই গন্ডগোলের সূত্রপাত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা আসার কিছু ক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে আসেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের অধিকাংশই এলাকার কর্মী নন বলে অভিযোগ। তাঁরা এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বাধা দেন। বিজেপি ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে, এই অভিযোগ তুলে পাল্টা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। দু’পক্ষের কর্মীরা স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। এর মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। তাঁকেও এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়ে। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা। মারধরের ঘটনায় বিজেপির এক কর্মীর মুখে আঘাত লাগে। তৃণমূলের তিন মহিলা কর্মীও আহত হয়েছেন বলে পাল্টা দাবি উঠেছে।
এ দিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যায় বেলেঘাটা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। আসে আশপাশের একাধিক থানার পুলিশও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সরিয়ে দেওয়া হয় দু’দলের কর্মীদের। এ দিন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি আশুতোষ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি বাইরে থেকে লোক এনে ঝামেলা করার চেষ্টা করেছে। নির্বাচনের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এলাকার লোকজন প্রতিবাদ
করেছেন।’’ বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘দুটো ভোট নিয়েই এই ঘটনা হলে ভোটের দিন কী হবে? আমরা নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয়টি জানাব।’’
যদিও রাস্তায় দু’দলের সংঘর্ষ রণক্ষেত্রের চেহারা নিলেও দুই ভোটারের ভোট নির্বিঘ্নেই নেওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমনকি, বাইরে গোলমালের বিষয়টি জানতে পারেননি বাড়িতে বসে এ দিন ভোট দেওয়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সুমন দলুই। ঘরে বসে বছর তেত্রিশের যুবক বলেন, ‘‘একা একা ভোট দিয়েছি। গত বছরও বাড়িতে বসে এই ভাবে ভোট দিয়েছিলাম। নির্বিঘ্নেই তো হল, কোনও অসুবিধা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy