Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

চেলিডাঙায় ‘ছাপ্পা ভোট’, আমরাইয়ে বাধল সংঘর্ষ

আসানসোলের চেলিডাঙায় ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে গোলমাল, দুর্গাপুরের আমরাইয়ে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি, তানসেন রোড, কুলটির লালবাজারেও গোলমাল হয়।

বিকেলেও ভোটারদের লম্বা লাইন বুথে। সোমবার দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর প্রাথমিক স্কুলে।

বিকেলেও ভোটারদের লম্বা লাইন বুথে। সোমবার দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর প্রাথমিক স্কুলে। ছবি: বিকাশ মশান।

সুশান্ত বণিক ও সুব্রত সীট
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৫:৪৫
Share: Save:

বিক্ষিপ্ত গোলমালে মিটল পশ্চিম বর্ধমানের ভোটগ্রহণ। আসানসোলের চেলিডাঙায় ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে গোলমাল, দুর্গাপুরের আমরাইয়ে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি, তানসেন রোড, কুলটির লালবাজারেও গোলমাল হয়।

সোমবার সকালে বিজেপি ও তৃণমূলের অশান্তি বাধে দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি গার্লস হাই স্কুলে। বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ও তাঁর অনুগামীদের কার্যত এলাকাছাড়া করার অভিযোগ ওঠে দুর্গাপুরের প্রাক্তন বরো চেয়ারম্যান তৃণমূলের রমাপ্রসাদ হালদার ও দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। লক্ষ্মণের অভিযোগ, বিজেপির পোলিং এজেন্টকে বুথে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, এই খবর পেয়ে তিনি দ্রুত পৌঁছন। বুথে এজেন্টকে ঢুকিয়ে তিনি বাইরে বেরোতেই তৃণমূলের লোকজন তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন। তিনি প্রতিবাদ করতেই বচসা বাধে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।

রমাপ্রসাদের পাল্টা দাবি, বিজেপি বিধায়ক সকাল ৬টা থেকে বুথের সামনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন। স্থানীয় কাউকে না পেয়ে বাইরে থেকে এজেন্ট এনে বুথে ঢোকান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিধায়ক ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভয় দেখাচ্ছিলেন। আমরা প্রতিবাদ করি। এলাকার মানুষ বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীদের এলাকাছাড়া করেন।’’ লক্ষ্মণের পাল্টা দাবি, ‘‘হারের ভয়ে তৃণমূল অশান্তি করার চেষ্টা করে।’’

দুপুরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয় দুর্গাপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আমরাইয়ে। অভিযোগ, তৃণমূলের কিছু লোকজন মোটরবাইকে এসে হামলা চালায় বিজেপি কর্মীদের উপরে। তাঁদের দু’টি বাইক ভাঙচুর করা হয়। জখম হন ২ জন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে বিজেপির আরও কর্মী সমর্থক জড়ো হন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা আমিনুর রহমান ওরফে মণি সেখান গেলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সকালে স্থানীয় কান্ডেশ্বর এলাকায় তাঁদের ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। যদিও মণির দাবি, ‘‘কে বা কারা এমন করেছে আমাদের জানা নেই। যদি দলের কেউ যুক্ত থাকেন, দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’ ঘটনাস্থলে বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ গেলে তাঁকে পুলিশ আটকে দেয়।

বিকালে তৃণমূল-সিপিএমের অশান্তি হয় ডিএসপি টাউনশিপের তানসেন রোডে। ‘সবুজ সেনা’র নাম করে বেআইনি ভাবে বুথে তৃণমূলের জমায়েতের অভিযোগ তোলে সিপিএম। সিপিএম ও তৃণমূল পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ তোলে। সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘আমাদের ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে তৃণমূল। আজকের দিনে কেউ তো চুপ করে বসে থাকবে না!’’ দলের এক মহিলা কর্মী, পোলিং এজেন্ট-সহ ৩ জন প্রহৃত হন বলে অভিযোগ তাঁর। তৃণমূলের ১ নম্বর ব্লক সভাপতি রাজীব ঘোষের পাল্টা দাবি, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট চলছিল। বিকেলে আচমকা সিপিএম ও বিজেপির লোকজন মিলে আমাদের ক্যাম্পে ভাঙচুর করে। আমাদের কয়েক জন কর্মী জখম হয়েছেন।’’ বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাতে বিজেপির চার কর্মীকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে থানায় গিয়ে বচসায় জড়ান বিধায়ক লক্ষ্মণ-সহ বিজেপি কর্মীরা।

এ দিন দুপুরে আসানসোলের ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের চেলিডাঙায় ৭৩ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়ে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, প্রথমে তাঁকে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। জোর করে ঢোকার পরে প্রিসাইডিং অফিসার তাঁকে জানান, তাঁর ভোট পড়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে যান বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানান। পরে ওই ব্যক্তিকে ফের ভোট দিতে দেওয়ার দাবি তোলেন। খানিক পরে সেখানে তৃণমূল কর্মীরা গিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেন, বিজেপি ভোট বানচাল করতে চাইছে। দু’পক্ষের গোলমাল বাধে। তৃণমূল কর্মীরা বুথের সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ঘটক। বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দুর দাবি, ‘‘সকাল থেকে এখানে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ রয়েছে। অনেককেই ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ তৃণমূল নেতা অভিজিতের পাল্টা দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভোটারদের আতঙ্কিত করতে চাইছে বিজেপি।’’

ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে কুলটির লালবাজারে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। অভিযোগ, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে দু’টি বুথে সকালে সদলবলে ভিড় জমান কুলটি ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি বিমান দত্ত। বিজেপি কর্মীরা পাল্টা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। স্থানীয় বিজেপি নেতা অমিত ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ভোটারদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছিল।’’ বিমানের দাবি, ‘‘ভোটারদের কোনও ভাবে প্রভাবিত করিনি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy