—প্রতীকী চিত্র।
ভোটে লড়ে জামানত খোয়ালেন পুরুলিয়া কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো। প্রশাসন সূত্রে খবর, পুরুলিয়া কেন্দ্রে এ বারে মোট ভোট পড়েছে ১৪,৩৫,৩৩৯টি। নিয়ম অনুযায়ী মোট ভোটের ৬ শতাংশ না পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট মাত্র ১৪,৫৭২টি। এমনকি, নোটাতেও এর চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে। এই ফলে কি পুরুলিয়ায় অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ল ফরওয়ার্ড ব্লক, শুরু হয়েছে চর্চা।
এ বারের লোকসভা ভোটে রাজ্যে বাম-কংগ্রেস যৌথ ভাবে লড়াই করেছিল। ওই সমঝোতায় ফরওয়ার্ড ব্লকের চেয়ে তাদের শক্তি বেশি, এই যুক্তিতে পুরুলিয়া আসনটি দাবি করে কংগ্রেস। তবে ১৯৭৭ সাল থেকে টানা দশ বার পুরুলিয়া আসনটি দখলে রাখা ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসের সেই দাবি মানতে চায়নি। ফ্রন্টের সঙ্গে রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের সমঝোতায় পুরুলিয়া আসনে কে লড়বে তা স্থির হওয়ার আগেই, তারা ওই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয়। পরবর্তীতে ফ্রন্টের তরফে জোটধর্ম পালন করে প্রার্থী প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও তাতে আমল দেয়নি ফরওয়ার্ড ব্লক।
তবে ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, শুধু জামানত খোয়ানোই নয়, পুরুলিয়া লোকসভার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দু’টিতে ‘নোটা’র চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন দলের প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের বছরে, অর্থাৎ ২০১১-য় জয়পুর কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। জয়পুরে এ বারে পঞ্চম স্থানে লড়াই শেষ করেছেন ধীরেন্দ্রনাথ।
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অসীম সিংহ বলেন, “আমাদের মতাদর্শগত ভোটও এ বারে বিজেপিতে চলে গিয়েছে। বাঘমুণ্ডি বা জয়পুরে আমাদের যে ভোট রয়েছে, সেই ভোটও এ বারে আমরা পাইনি। কেন এমন হল, আমরা তা পর্যালোচনা করব।” স্রোতের বিপরীতে এ বারে ভোট হয়েছে জানিয়ে তাঁর যদিও দাবি, বিধানসভায় এমনটা হবে না। প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথের কথায়, “এই বিপর্যয়ের প্রধান কারণ আমাদের ভোট গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়া। যেহেতু আমরা লড়াইয়ে নেই, তাই তৃণমূলকে হারাতে অনেকে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে খোঁজ নিয়ে জেনেছি। বামফ্রন্টের জোটে না থাকাও প্রভাব ফেলেছে।” বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী নেপাল মাহাতোর যদিও মত, ফরওয়ার্ড ব্লকের যা ভোট রয়েছে, তারা সেটাই পেয়েছে। আরও কিছু ভোট হয়তো পেত। সেগুলি যে বিজেপিতে গিয়েছে, তা অনেকাংশে সত্যি।
যদিও বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরা জানাচ্ছেন, ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরুলিয়া আসন থেকে টানা দশ বার জেতার লড়াইয়ে তাদের দলেরও অবদান ছিল। ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে দু’বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া বর্তমানে জয়পুরের বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতোরও স্বীকারোক্তি, “সিপিএমের অবদান তো অস্বীকার করতে পারব না। যেহেতু ওই দল থেকে বেরিয়ে এসেছি, তাই এই মুহূর্তে ওই দল নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ রায় বলেন, “এখনও ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য বামফ্রন্টের শরিক। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার রাজ্য ফ্রন্ট নেতৃত্বই বলবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy