জে পি নড্ডা। —ফাইল চিত্র।
বিজেপির দরজা খোলা। কিন্তু বিজেপি ছেড়ে অন্য কোনও দলে গেলে ফেরার দরজা আর খুলবে না বলে জানিয়ে দিয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা। লোকসভা ভোটের মধ্যে রাজ্যে প্রথম বার প্রচারে এসে জোড়া নির্বাচনী সভা থেকে সন্দেশখালি-কাণ্ড এবং দুর্নীতির প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণও করেছেন নড্ডা।
নদিয়ার রানাঘাট কেন্দ্রের বগুলায় দলীয় প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সমর্থনে রবিবার সভা করেছেন নড্ডা। সেখানেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেছেন, “আমাদের এখানে আসার রাস্তা খোলা। কিন্তু যাঁরা চলে গিয়েছেন, তাঁদের জন্য ফেরার রাস্তা খোলা নেই। এটা মনে রাখতে হবে।” এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী ছিলেন বিজেপি বিধায়ক। লোকসভা ভোটের মুখে দল বদলে তিনি রাজ্যের শাসক দলের প্রার্থী হয়েছেন। রানাঘাটে নড্ডার মন্তব্য মুকুটমণিকে মাথায় রেখেই, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
মুকুটমণি অবশ্য নড্ডার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে অর্জুন সিংহের ব্যারাকপুর থেকে প্রার্থী হওয়ার উদাহরণ সামনে এনেছেন। মুকুটমণির বক্তব্য, “ব্যারাকপুরের অর্জুন সিংহের কথা কি উনি ভুলে গেলেন? অর্জুন সিংহকে ফিরিয়ে টিকিট দিলেন কেন?” তৃণমূল প্রার্থীর সংযোজন, “এই সব কথা কাকে বলছেন, জানি না। আমি আর ও-পথ মাড়াব না, সেটা বলতে পারি। আমি একশো শতাংশই ফেলে এসেছি।” ব্যারাকপুর থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে পরে তৃণমূলে গেলেও অর্জুন অবশ্য সাংসদ-পদ ছাড়েননি। এ বার তিনি আবার বিজেপিরই প্রার্থী। দল বদল প্রসঙ্গে নড্ডার উদ্দেশে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের তোপ, “ওঁর দলে চোরেদের জন্য দরজা খোলা। যাঁদের নাম সিবিআই, ইডি-র খাতায় আছে, তাঁদের নিয়েই দল ভর্তি। তাই অন্য কাউকে দলে নেওয়ার জায়গা নেই!”
বহরমপুরের দলীয় প্রার্থী নির্মল সাহার সমর্থনে বড়ঞার সভা থেকে এ দিন সন্দেশখালি ও দুর্নীতির বিষয়টি সামনে রেখেও তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নড্ডা। সম্প্রতি শিক্ষক-নিয়োগ দুর্নীতিতে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে ২০১৬-র গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছে। নড্ডার তোপ, “রাজ্য কুশাসনে ভরে গিয়েছে। নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত তৃণমূল নেতারা। এই রাজ্যে পর পর দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসছে। তৃণমূল নেতাদের বাড়ি-গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হচ্ছে।” কেন্দ্রের পাঠানো চাল পর্যন্ত তৃণমূল চুরি করেছে বলে অভিযোগ করে বগুলার সভাতেও রাজ্য সরকারকে ‘চাল চোর’ বলে আক্রমণ করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতা। তাঁর কটাক্ষ, “অনুপ্রবেশকারীরা জমি জবরদখল করছে। ঘুষ এবং তোলা ছাড়া তৃণমূলের রাজ্যে কোনও কাজ হয় না।”
সেই সঙ্গে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা সন্দেশখালির নারী-‘নির্যাতনের’ প্রশ্নে তৃণমূলকে বিঁধে যে একের পর এক তোপ দাগছেন, এ দিন নড্ডাও সেই পথেই হেঁটেছেন। তাঁর কথায়, “মা-মাটি-মানুষের নাম করে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল। অথচ এখানে মায়েদের সম্মান নেই। মহিলারা সুরক্ষিত নন। সন্দেশখালিতে মহিলারা তৃণমূল নেতাদের হাতে দিনের পর দিন অত্যাচারিত হয়েছেন।” সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আড়াল করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন নড্ডা। রাজ্যে এসে এ দিন একটি ভিডিয়ো-বার্তাতেও নড্ডা দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতন, অস্ত্র মজুত করা-সহ যাবতীয় ঘটনার মাসুল তৃণমূলকে ভোটে দিতে হবে।
তৃণমূল নেতা কুণাল অবশ্য দেশের নানা প্রান্তের নারী ‘নির্যাতনের’ প্রসঙ্গকে সামনে রেখে নড্ডা ও বিজেপিকে বিঁধেছেন। তাঁর বক্তব্য, “উনি উন্নাও, হাথরস, প্রয়াগরাজ, বিলকিস বানো নিয়ে সুর চড়ালেন না কেন? সোনার মেয়ে সাক্ষী মালিকদের অভিযোগের পরেও ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন না কেন? ওঁরা তো ব্রিজভূষণের বন্ধু। সংসদে পাশাপাশি বসেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy