Advertisement
Back to
Shantanu Thakur

বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের আচরণে বিড়ম্বনায় বিজেপি, শাহের শরণাপন্ন হতে চায় দলের একাংশ

বিজেপির বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে বনগাঁর প্রার্থীর মন্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যই খণ্ডন হয়ে যাওয়ায়! শাহ বলেছিলেন, সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।

Shantanu Thakur

শান্তনু ঠাকুর। ছবি: এক্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:১৬
Share: Save:

আসন জয়ের প্রশ্নে বিজেপি শিবিরে আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। তবু ‘মসৃণ’ কেন্দ্রে দলের প্রার্থী এবং বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সাম্প্রতিক কাজকর্ম বিড়ম্বনায় ফেলছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে। দলীয় সূত্রের খবর, বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী যে সব মন্তব্য এবং আচরণ করছেন, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এ বারের রাজ্য সফরের সময়ে বিষয়টি তাঁর কানেও তুলতে চান দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।

রাজ্যে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ও উদ্বাস্তু ভোটের বড় অংশ এসেছিল বিজেপির ঝুলিতে। এ বার লোকসভা ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিধি কার্যকর হওয়ায় মতুয়া-অধ্যুষিত বনঁগা ও রানাঘাট আসনে তাদের জয় আরও নিশ্চিত বলে বিজেপি শিবিরের আশা। কিন্তু এরই মধ্যে দলে গোল পেকেছে বনগাঁর সাংসদ শান্তনুর মন্তব্যে। তিনি কখনও বলেছেন, তৃণমূলের সমর্থক কেউ যাতে সিএএ-র দৌলতে নাগরিকত্ব না পান, দেখা হবে। যারা সিএএ-র বিরোধিতা করছে, তাদের কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও যাচাই করার সময়ে বিষয়টি দেখে নেওয়া হবে। সেই সূত্রেই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তৃণমূলের কাউকে নাগরিকত্ব নয়। কখনও আবার দাবি করেছেন, বিজেপি না হয় এখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) করল না। কিন্তু পরে যদি কেউ করে এবং রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে বেনাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়, তখন কী হবে! তাঁর ওই সব মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, সিএএ-কে কেন্দ্র করে যে ‘আতঙ্কের পরিবেশ’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে চাইছেন, খোদ শান্তনুর মন্তব্য তাতে সহায়ক হচ্ছে!

বিজেপির বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে বনগাঁর প্রার্থীর মন্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যই খণ্ডন হয়ে যাওয়ায়! শাহ বলেছিলেন, সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এতে কারও নাগরিকত্ব হারানোর প্রশ্ন নেই। আর শুভেন্দুও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারে’র অভিযোগ করে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, এই আইনের ফলে কেউ নাগরিকত্ব হারালে তিনি নাকখত দেবেন! প্রায় একই কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তার পরে শান্তনু তৃণমূলকে ‘হুঁশিয়ারি’ দিতে গিয়ে যা বলেছেন, তাতে শাসক দলেরই সুবিধা হয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মত। ক্ষুব্ধ এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা না পারছি গিলতে, না পারছি উগরোতে!’’

এখানেই শেষ নয়। দু’দিন আগে ঠাকুরবাড়িতে প্রয়াত ‘বড়মা’র ঘরে ঢোকার জন্য তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বসবাসের অংশে যে ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে লোকজন নিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করেছেন, তাতেও বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশ স্তম্ভিত! দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সেই রাতে পরিস্থিতি সামলাতে বাড়তি বিএসএফের বাহিনী পাঠানো হয়েছিল বিজেপিরই এক নেতার হস্তক্ষেপে। বিজেপির এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘ওই ঘরে প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য আইন-আদালত এবং নানা সুস্থ রাস্তা ছিল। তা-ই বলে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা সাংসদ এই কাজ করবেন?’’

ঠাকুরবাড়ির ঘটনার পরে শান্তনু আবার লস্কর-ই-তইবার নামে হুমকি চিঠির যে অভিযোগ সামনে এনেছেন, তার বয়ান দেখেও নানা সংশয় তৈরি হয়েছে বিজেপি শিবিরে। দলের একাংশ চাইছে, পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে বনগাঁর প্রার্থীকে ‘সতর্ক’ করে দেওয়া হোক। শান্তনু অবশ্য মঙ্গলবার দাবি করেছেন, তিনি নিজেই ওই হুমকি-চিঠির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টির তদন্ত হবে। আমি পূর্ণাঙ্গ সিবিআই তদন্তের দাবি করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Shantanu Thakur Lok Sabha Election 2024 BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy