এই ছাপানো আবেদন পত্র নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কথা তৃণমূলের। নিজস্ব চিত্র senguptadayal@gmail.com
ভোট প্রচারে লক্ষ্মীর ভান্ডার আছে। আছে কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনার’ জবাব দিয়ে ১০০ দিনের বকেয়া মজুরি মেটানোর কথা। এ বার কি আবাস নিয়ে অঙ্গীকারকে প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার করতে চায় তৃণমূল? শুক্রবার সিউড়িতে শাসকদলের নির্বাচন কমিটির বৈঠক সূত্রে তেমনই খবর। যদিও এতে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হতে পারে বলে অভিযোগ বিজেপির।
শুক্রবার বিকেলে সিউড়ি জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে বেশ কয়েকটি ভোট-কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র কথা উস্কে দিয়ে আবাস নিয়ে শাসকদলের অঙ্গীকারকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রসঙ্গ। সে জন্য ইতিমধ্যেই রঙিন লিফলেটের ধাঁচে আবেদন পত্র ছাপানো হয়ে গিয়েছে। তাতে লেখা, ‘আমার আবাস, আমার অধিকার/ তৃণমূলে ভোট আমার অঙ্গীকার।’ এখানেই শেষ নয়। লেখা রয়েছে, ‘লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরেই আপনার জন্য পাকা বাড়ি সুনিশ্চিত করে দেবে তৃণমূল সরকার।’
শাসকদল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনই ওই আবেদন পত্র নিয়ে আবাস প্রাপকদের (যাঁদের নাম উপভোক্তা তালিকায় থাকা সত্বেও টাকা পাননি) বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কাজ শুরু করতে চায় শাসকদল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ ভাবে প্রচার বিধিভঙ্গের আওতায় পড়বে বলে অভিযোগ বিজেপির।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এপ্রিল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দের জন্য অপেক্ষা করবে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে না পেলে, পয়লা মে থেকে রাজ্যই তালিকাভুক্ত উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করবে। কিন্তু সেটা যাতে আমজনতার কাছে পৌঁছে যায়, এ বার সেই লক্ষ্যেই আবাস নিয়ে অঙ্গীকারের কথা প্রচারের কৌশল নিয়েছে শাসকদল।
শাসকদল সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে তারাপীঠের নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত নেতা, কর্মীদের তিনি জানিয়েছিলেন, আবাসের বকেয়া টাকা যদি কেন্দ্র না দেয়, সেটা রাজ্য সরকার দিয়ে দেবে বলে কথা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটাই হতে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (আবাস প্লাসে) জেলায় ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট’-এ নাম রয়েছে এক লক্ষ ৬৫ হাজারের কিছু বেশি উপভোক্তার। ওই তালিকার মধ্যে গত অর্থবর্ষেই (আবাসের অগ্রাধিকার তালিকা অনুসারে) ৬২ হাজার ৬২১ জন প্রাপকের বাড়ি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় তাঁদের বাড়ি তৈরি হয়নি। একই অবস্থা পুর এলাকায় ‘হাউস ফর অল’-এর বাড়িগুলির একাংশের ক্ষেত্রেও।
বৈঠকে উপস্থিত জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস প্রাপকদের তালিকা (পদ্ধতিগত ভাবে সব হয়ে যাওয়া সত্বেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জেরে টাকা পাননি) ধরে বাড়ি বাড়ি পৌঁছতে হবে। সেখানে গিয়ে উপভোক্তাদের জানানো হবে, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলে রাজ্য সরকার টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরি করে দেবে। পাশাপাশি, কোন উপভোক্তা, কোন পঞ্চায়েত এলাকার তাঁর বাড়ি, ফোন নম্বর কী, তাও নথিবদ্ধ করা হবে। দেওয়া আছে একটি ফোন নম্বরও।’’ ওই নেতা জানান, এমন দু’টি আবেদন পূরণ করে একটি উপভোক্তার কাছে, অন্যটি দলের জনপ্রতিনিধি বা নেতা বা কর্মী নিয়ে কেন্দ্রীয় অফিসে জমা দেবেন। দলের নেতা, কর্মীরা প্রত্যেকের বাড়িতে পৌঁছলেন কি না তা নিশ্চিত করতে একটি ‘মিসড কল’ করতে বলা হয়েছে বলেও জানান ওই নেতা।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাসের অবশ্য দাবি, ‘‘কোনও ব্যক্তিগত নম্বর থেকে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করা ট্রাইয়ের নীতিবিরুদ্ধ। ভোট প্রচারে এই প্রতিশ্রুতিও বিধিভঙ্গের মধ্যে পড়বে। এমন ঘটলে আমরা
অভিযোগ জানাব।’’ এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু স্পষ্ট করেননি। তবে বৈঠকে উপস্থিত জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘বিধিভঙ্গ হবে না। কমিশনের ছাড়পত্র নিয়েই কাজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy