সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। —ফাইল চিত্র।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হলেন সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া। বুধবার বিজেপির তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে। আসানসোলের সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হার বিরুদ্ধে লড়বেন ‘ভূমিপুত্র’ সুরেন্দ্র।
প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পরে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় অহলুওয়ালিয়া বলেছেন, “এই মাত্র জেনেছি। প্রার্থীর তালিকা দেখেই জানলাম। বৃহস্পতিবারেই আসানসোল যাচ্ছি।” প্রসঙ্গত, আসানসোলে সুরেন্দ্রের নাম যে বিবেচনার মধ্যে রয়েছে এবং তিনিই যে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন, মঙ্গলবারেই সেই খবর দিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সুরেন্দ্রের ক্ষেত্রে এটাও উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৯ সালে তিনি নিজে থেকে দার্জিলিঙে প্রার্থী হতে চাননি। সব প্রার্থীর নাম ঘোষণার শেষে বিজেপি জানায় বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে প্রার্থী হবেন তিনি। সে বার দিন পনেরো সময় পেয়েছিলেন প্রচারে। এ বারেও নাম ঘোষণা আর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনের মাঝে সময় ঠিক ১৫ দিন। বর্ধামান-দুর্গাপুর আসনে এ বার দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করার পরে তিনি কোনও কথাই বলেননি। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে ‘আত্মবিশ্বাসী’ সুরেন্দ্র জানিয়েছিলেন, দল তাঁকে প্রার্থী করবেই আর তিনি জিতে আসবেনই।
আসানসোলে সুরেন্দ্রের নাম ঘোষণার পরে রাজ্যে বিজেপির মাত্র একটি আসনেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাকি রইল— ডায়মন্ড হারবার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি কাকে প্রার্থী করবে, তা নিয়েই আপাতত কৌতূহল বাড়ছে।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে পর পর তিনটি লোকসভা ভোটে সুরেন্দ্রকে রাজ্যের তিনটি আসন থেকে টিকিট দেওয়া হল। প্রথম বার তিনি জিতেছিলেন দার্জিলিং আসন থেকে। সে বার তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বার সুরেন্দ্রকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে। সে বারেও তিনি জেতেন। তবে দ্বিতীয় বার আর তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। তৃতীয় বারেও তাঁর আসন বদলাল। তাঁকে টিকিট দেওয়া হল আসানসোল থেকে।
সুরেন্দ্রের ‘সুবিধা’ বলতে তিনি যেমন আসানসোলের ‘ভূমিপুত্র’, তেমনই অবাঙালি। কিন্তু বাংলাও ঝরঝরে বলতে পারেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, আসানসোল উপনির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জেতা শত্রুঘ্নের মোকাবিলা করতে পারবেন সুরেন্দ্র। প্রসঙ্গত, আসনসোল আসনের প্রার্থী নিয়ে বিজেপি প্রথম থেকেই ‘বেকায়দায়’ ছিল। প্রথমে নাম ঘোষণা করা হয়েছিল ভোজপুরি গায়ক-অভিনেতা পবন সিংহের। কিন্তু তৃণমূলের আইটি সেলের কড়া আক্রমণের মুখে তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজেকে ভোটের লড়াই থেকে সরিয়ে নেন। তার পরে ওই আসনে এলাকার ‘দাপুটে’ নেতা তথা পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগে তাঁর সঙ্গে এনআইএ-র এক শীর্ষ অফিসারের বৈঠকের ঘটনা ‘নথিপত্র’ সহযোগে প্রকাশ্যে আনে তৃণমূল। তার পরেই ওই অফিসারকে তলব করে দিল্লি। তাঁর বদলে পটনায় কর্মরত এক অফিসারকে নিয়োগ করা হয়। পাশাপাশিই, আসানসোল আসনে জিতেন্দ্রের সম্ভাবনা কমতে থাকে। কারণ, শাসক তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, জিতেন্দ্র একটা ‘সাদা প্যাকেট’ নিয়ে ওই বৈঠকে ঢুকেছিলেন। বেরোনোর সময় তাঁর হাত ছিল খালি। ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট ছিল। সে ইঙ্গিত বা অভিযোগ সত্য না মিথ্যা, তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু তাতে যে জিতেন্দ্রের সম্ভাবনা নষ্ট হচ্ছিল, তা বিজেপির রাজ্য নেতারাও মেনে নিচ্ছিলেন। কার্যক্ষেত্রেও দেখা গেল তা-ই। জিতেন্দ্র নয়, আসানসোলে প্রার্থী করা হল সুরেন্দ্রকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy