সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য এবং অবস্থানকে ফের কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার হাবড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে এসেছিলেন শুভেন্দু৷ সিএএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন সিএএ মানে এনআরসি। সিএএ-তে আবেদন করলে নাগরিকত্ব চলে যাবে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, সিএএ আইনে আবেদন করলে যদি এক জনেরও নাগরিকত্ব যায়, তা হলে আমি বিধায়ক হিসাবে পদত্যাগ করব। আর যদি এক জনেরও নাগরিকত্ব চলে না যায়, আপনি পদত্যাগ করবেন তো?’’ এরপরেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি জানি চ্যালেঞ্জ নিতে পারবেন না। কারণ, আপনি লোকজনকে ভয় দেখাতে চান।’’
এ দিন শুভেন্দু সভা করেন হাবড়ার কইপুকুর পল্লিমঙ্গলের মাঠে। ১২ মার্চ এই এলাকার কাছেই বাণীপুরে প্রশাসনিক সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের কড়া সমালোচনা করেছিলেন তিনি। এ দিন শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা সভা করেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যাচারীর মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমি এখানে এসেছি।’’ প্রায় ৫০ মিনিটের বক্ততায় শুভেন্দু মূলত সিএএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানকে আক্রমণ করেন। ডাঙ্কা-নিশান নিয়ে বহু মতুয়া ভক্ত সভায় এসেছিলেন। শুভেন্দু মতুয়া উদ্বাস্তুদের ভরসা দিয়ে বলেন, ‘‘সিএএ আইনে আবেদন করতে কোনও কাগজ লাগবে না। এই ফর্ম (আবেদনপত্র দেখিয়ে বলেন) এখানে সেলফ ডিক্লারেশন (নিজে থেকে ঘোষণা) দিলেই হবে। যে কোনও সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে লিখে আনলেই হবে যে আপনি বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত হওয়ায় এ দেশে এসেছেন।’’
শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘উনি পদত্যাগ করতেই পারেন। কিন্তু আবেদন করার পরে যে মানুষটির নাগরিকত্ব চলে যাবে, তাঁকে ডিটেকশন ক্যাম্পে চলে যেতে হবে, তাঁর কী হবে?’’ পার্থের প্রশ্ন, ‘‘নতুন করে কেন মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে? কেন শর্তহীন নাগরিকত্ব হবে না?’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)