তৃণমূল ভবনে শশী পাঁজা (বাঁ দিকে) এবং মমতাবালা ঠাকুরের (ডান দিকে) উপস্থিতিতে যোগদান সিরিয়া পারভিনের (মাঝে)। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়। সরস্বতী পুজোর দিন। সকাল সকাল উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল টাকি। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তাঁর উপস্থিতিতেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। সুকান্ত উঠে পড়েছিলেন পুলিশের গাড়ির বনেটে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল বিজেপির এক নেত্রীকে। নাম সিরিয়া পারভিন। বিজেপির বসিরহাট জেলা সাধারণ সম্পাদক সেই সিরিয়া এ বার যোগ দিলেন তৃণমূলে। বৃহস্পতিবার শশী পাঁজা এবং মমতাবালা ঠাকুরের উপস্থিতিতে তৃণমূল ভবনে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন তিনি।
তৃণমূলের তরফে সিরিয়ার যোগদান উপলক্ষে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। সেখানেই সিরিয়া ‘মনের কথা’ জানান। সন্দেশখালি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। জানিয়েছেন, তাঁর মন ভেঙে গিয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনা যে বিজেপি টাকা দিয়ে সাজিয়েছে, সেই অভিযোগও করেছেন।
তৃণমূলে যোগ দিয়ে সিরিয়া বলেন, ‘‘আমার লড়াই মহিলাদের সম্মানের জন্য। সন্দেশখালিতে মহিলারা নির্যাতিত, ধর্ষিত শুনে তাঁদের হয়ে আমি লড়াই করছিলাম। কিন্তু অনেক দিন ধরেই এ বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন মনে উঁকি মারছিল। সন্দেশখালিতে গিয়ে সে সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি। তার পরে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
সিরিয়া আরও বলেন, ‘‘বসিরহাটের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর আমি সন্দেশখালিতে যাই। কিন্তু গিয়ে দেখলাম, এটা সম্পূর্ণ বানানো গল্প। সেখানে আন্দোলন করার জন্য মহিলাদের টাকা দেওয়া হত, মোবাইল দেওয়া হত। কবে, কী হবে, আগে থেকে মিডিয়াকে খবর দিয়ে দেওয়া হত। ২০১৬ সাল থেকে আমি পার্টির সঙ্গে ছিলাম। এ সব দেখে মন ভেঙে যায়।’’
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে গত ১৫ মে-র ঘটনার বর্ণনা করেন সিরিয়া। বলেন, ‘‘১৫ মে সন্দেশখালিতে আবার এক মহিলা নতুন করে শ্লীলতাহানি এবং ধর্ষণের অভিযোগ করেন। আমার কাছে ফোন আসে, সন্দেশখালি যেতে হবে। মেসেজ আসে, ‘এটা আমাদের তৈরি করা’ বলে। গিয়ে দেখলাম, পুলিশের এফআইআরে বলা হয়েছে, মহিলার শ্লীলতাহানি হয়েছে। পরের দিন ওই মহিলা গোপন জবানবন্দি দিতে গিয়ে বলেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সে দিনই আমার মন আরও ভেঙে যায়।’’
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মহিলাদের ‘পিঠে বানানোর’ জন্য রাতবিরেতে ডেকে পাঠানোর অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সে প্রসঙ্গে সিরিয়া বলেন, ‘‘পিঠে আসলে বিজেপির লোকজন বানান। বিজেপিতে পিঠে বানিয়ে দিলে বাড়তি অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। সন্দেশখালির ঘটনার কারণে বাংলায় আমরা নারীদের সম্মানের সঙ্গে রাজনীতির রং গুলিয়ে ফেলেছি। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে সন্দেশখালিতে। আরও অনেক কিছু ঘটানো হবে।’’
উল্লেখ্য, সুকান্তের সঙ্গে পুলিশের গাড়ির বনেটে উঠে প্রথম বার খবরের শিরোনামে এসেছিলেন সিরিয়া। সে সময় তাঁকে হাসনাবাদ থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরে জামিন পান সিরিয়া। বিজেপির বিরুদ্ধে সন্দেশখালির আন্দোলন সাজানোর অভিযোগ উঠেছে আগেই। ‘স্টিং’ অপারেশনের একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে (সে সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার পর তৃণমূলে যোগ দিয়ে একই অভিযোগ করলেন সিরিয়াও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy