শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
একটা সময় পর্যন্ত বিতর্ক দিলীপ ঘোষের ছায়াসঙ্গী ছিল। তবে এখন তিনি সে সব থেকে খানিক দূরত্ব তৈরি করেছেন। দলের বাইরের লোকেদের বিরোধিতা তো বটেই, দলের অন্দরেও দিলীপকে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অনেক বারই নানা বিষয়ে তাঁর দ্বিমত তৈরি হয়েছে দিলীপের সঙ্গে। দিলীপ-শুভেন্দু ‘মধুর’ সম্পর্ক মেরামত করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও অনেক সময়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এ বার দিলীপ নিজেই স্বীকার করে নিলেন, শুভেন্দুর সঙ্গে কোনও দিনই তাঁর গভীর বন্ধুত্ব ছিল না। তবে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একই সঙ্গে শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর শত্রুতা ছিল না বলেও দাবি করেছেন দিলীপ।
দিলীপ রাজ্য সভাপতি থাকার সময়েই শুভেন্দু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দেন। দিলীপ জমানাতেই শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হন। সেই সময়েই দিলীপকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে শুভেন্দু দিল্লি যাওয়ায় প্রকাশ্যে চলে আসে বিজেপির অন্দরের বিতর্ক। তবে বিজেপি নেতারা বলেন, প্রকাশ্যে না এলেও অনেক কিছু নিয়েই দুই নেতার মধ্যে মতের অমিল দলে অস্বস্তি তৈরি করেছিল। তবে কি দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব নেই? ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’ সাক্ষাৎকারে দিলীপের কাছে প্রশ্ন ছিল, তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর সম্পর্কে এত খারাপ কেন? জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘কোনও দিন বেশি খারাপও ছিল না, কোনও দিন বেশি ভালও ছিল না।’’
শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তাঁদের সম্পর্ক কেমন ছিল, তা-ও জানিয়েছেন দিলীপ। বলেছেন, ‘‘উনি যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন মেদিনীপুরে গিয়ে আমার সম্পর্কে নানা কথা বলে আসতেন। আমিও কখনও কিছু বলতাম। পরে দেখা হলে বলতেন, কী, কাল আমার নামে অনেক কিছু বলেছেন? আমি হেসে বলতাম, আপনার নাম যাতে খবরে আসে, সে জন্য বলেছি।’’ আর বিজেপিতে যোগদানের পরে? ‘বিতর্কিত অধ্যায়’ এড়িয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘বিজেপিতে আসার পরে একসঙ্গে কাজ করলাম। আমি যত দিন রাজ্য সভাপতি ছিলাম, তত দিন ওঁকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করেছি। এখন অন্য সভাপতি। তাঁর সঙ্গে মিলে একসঙ্গে কাজ করছেন। তবে যখন আন্দোলন হয় তখন একসঙ্গে হাঁটি।’’
ইদানীং বিজেপিতে দিলীপ কি ‘বন্ধুহীন’? এখন কি আদৌ তাঁর কোনও বন্ধু রয়েছেন বিজেপিতে? দিলীপ বলেন, ‘‘শত্রুও নেই।’’ কিন্তু প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো বন্ধু? দিলীপ বলেন, ‘‘সুব্রত চট্টোপাধ্যায় আর আমি ৪০ বছর একসঙ্গে কাজ করেছি। প্রচারকদের মধ্যে সম্পর্কটা আলাদা। সেখানে কোনও স্বার্থ থাকে না। কিন্তু স্বার্থ ছাড়া রাজনীতি হয় না। তাই তো আমি সেট হতে পারছি না।’’
বিতর্ক তেমন না হলেও দিলীপের সমালোচনার শেষ নেই বিজেপির অন্দরে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ‘স্বপ্নভঙ্গ’ হওয়ার পরে তাঁর সমালোচনা আরও বেড়ে যায়। তবে সে সবকে বিশেষ পাত্তা দিতে না চেয়ে নিজস্ব ভঙ্গিতে দিলীপ বলেন, ‘‘সমালোচনা না হলে সে আবার নেতা কিসের? আমি রাজনীতিতে এলাম। কিন্তু সমালোচনা হল না। তা হলে আর কী করলাম?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy