মনোজ টিগ্গা। —ফাইল চিত্র।
চা-বলয় প্রধান আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র। যে চা-বলয়কে কেন্দ্র করে গত লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছিলেন। অথচ, এ বার সেই চা বলয়েই ‘সে অর্থে’ নেই বিজেপির প্রচার! যে অভিযোগকে ঘিরে লোকসভা নির্বাচনের আগের মুহূর্তে সরগরম আলিপুরদুয়ারের গেরুয়া শিবির বিজেপি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দলের কোর কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। চা বলয়ে কেন দল সে ভাবে প্রচার শুরু করছে না, বৈঠকে সে প্রশ্ন তুলে সরব হন বিজেপি নেতাদের একাংশ। এ দিকে আবার বিজেপি প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন ‘বিটিডব্লিউইউ’-এর নেতাদের একাংশের বক্তব্য, ‘বঞ্চিত’ চা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া না মেটালে, প্রচারে যোগ দেবেন না তাঁরা। লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা বলেছেন, “চা বলয়ে দলের প্রচার চলছে। কিন্তু প্রার্থীকে সামনে রেখে চা বলয়ে যে প্রচার শুরু হওয়ার কথা, সেটা
সর্বত্র শুরু হয়নি।”
লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে গত বারই প্রথম জয় পায় বিজেপি। ওই নির্বাচনে দলের প্রার্থী জন বার্লা প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে পরাজিত করেন। কিন্তু এ বার সেই বার্লার বদলে মাদারিহাটের বিধায়ক তথা দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মনোজ টিগ্গাকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তার পরে প্রকাশ্যেই টিগ্গার বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা যায় বার্লাকে। পরে, বার্লা অবশ্য সুর নরম করে টিগ্গার হয়ে প্রচারে নামার আশ্বাস দেন। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, সম্প্রতি দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে বৈঠকেও টিগ্গার হয়ে বার্লাকে প্রচারের নির্দেশ দেন নড্ডা। এ দিন বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বার্লা ফোন কেটে দেন।
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের কথায়, চা বলয় প্রধান আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বাগান শ্রমিকদের ভোটের উপরেই যে, যে কোনও নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করে তা সকলেই জানেন। অথচ, প্রার্থী নিয়ে বার্লা ক্ষুব্ধ হওয়ার পরে, এক দিকে এই কেন্দ্রের চা বলয়ে যেমন ‘ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ বা ‘বিটিডব্লিউইউ’-কে সে অর্থে ভোট প্রচারে নামতে দেখা যাচ্ছে না, অন্য দিকে, দলের নেতাদেরও বাগানগুলিতে ভোট-প্রচারে দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিটিডব্লিউইউ-এর নেতাদের একাংশের আবার এ-ও বক্তব্য, চা শ্রমিকদের উন্নয়নে তাঁদের দাবি মানা না হলে লোকসভা ভোটের প্রচারে নামবেন না তাঁরা। এ বিষয়ে সংগঠনের নেতা তৌফিল সোরেনের অভিযোগ, ‘‘চা শ্রমিকদের সঙ্গে দিনের পর দিন বঞ্চনা হয়ে আসছে। আমরা তা আর সহ্য করব না। আমরা চাই, চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চালু হোক, জমির পাট্টার বদলে খতিয়ান দেওয়া হোক এবং অবসরের বয়স ৫৮ বছর থেকে ৬০ বছর করা হোক। এই বিষয়গুলি ইস্তাহারেও তুলে ধরতে হবে। নয়তো আমরা দলের হয়ে প্রচার তো দূরে থাক, কোনও কিছুতেই যোগ দেব না।’’ মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘দলের কিছু সদস্য কয়েক’টি দাবি রেখেছেন। তা আমি ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে।’’
যদিও সংগঠনের সভাপতি যুগলকিশোর শাহের হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে দল-বিরোধী কাজ করছেন তাঁদের অনেক আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বার তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ এ বিষয়ে তৃণমূলের লোকসভা প্রার্থী তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকের খোঁচা, ‘‘মনোজ টিগ্গা কখনও শ্রমিকদের সমস্যা, দাবি নিয়ে সরব হননি। সেটা ওঁর দলের সদস্যেরাই বলেছেন। এ জন্যই হয়তো শ্রমিক সংগঠন ক্ষুব্ধ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy