Advertisement
Back to
করোনার সময় কোথায় ছিলেন, প্রশ্ন লকেটকে
Lok Sabha Election 2024

১৫ শ্রমিককে ‘গেট বাহার’, বিক্ষোভে কাজ বন্ধ জুট মিলে 

১৫ জন শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়ার (গেট বাহার) অভিযোগে এবং তাঁদের অবিলম্বে কাজে নেওয়ার দাবিতেই এ দিন মিলের গেটের সামনে ত্রিপল টাঙিয়ে বিক্ষোভ চলে।

An image of group

মিলের গেটের সামনে বিক্ষোভ শ্রমিক ও তাঁদের পরিজনদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩১
Share: Save:

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক যন্ত্র বসানো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের বিবাদের জেরে প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুট মিলের উৎপাদন। পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের আলোচনার ভিত্তিতে গত শনি ও রবিবার অল্প কিছু শ্রমিক নিয়ে কাজ চলে। কিন্তু শ্রমিক অসন্তোষের জেরে সোমবার ফের বন্ধ হল ওই জুট মিলের উৎপাদন। চলল বিক্ষোভ। সেখানে এসে শ্রমিকদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

১৫ জন শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়ার (গেট বাহার) অভিযোগে এবং তাঁদের অবিলম্বে কাজে নেওয়ার দাবিতেই এ দিন মিলের গেটের সামনে ত্রিপল টাঙিয়ে বিক্ষোভ চলে। মিল খোলা থাকলেও কোনও শ্রমিক কাজে যোগ দেননি। শ্রমিক পরিবারের লোকেরাও ধর্নায় শামিল হন। পুলিশ আসে। পুলিশের অনুরোধে ত্রিপল খুলে নেওয়া হলেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। শ্রমিকদের দাবি, পুরনো চুক্তি অনুযায়ী কাজ চালাতে হবে। বসিয়ে দেওয়া শ্রমিকদের নিঃশর্তে কাজে ফিরিয়ে নিতে হবে।

লোকসভা ভোটের আবহে এই ধর্নায় এসে উপস্থিত হন বিজেপি প্রার্থী তথা এলাকার বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সিআইটিইউ নেতারাও আসেন। এক প্রৌঢ়া কান্নায় ভেঙে পড়লে লকেট তাঁকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দেন। পাশে দাঁড়ানো এক মহিলা লকেটকে প্রশ্ন করেন, ‘‘করোনার সময় কোথায় ছিলেন? আমরা যখন না খেয়ে মরছিলাম, তখন আসেননি তো!’’ লকেট তাঁকে বলেন, ওই সময় তিনি এসেছিলেন। কথা-কাটাকাটি শুরু হতেই বিজেপি কর্মীরা স্লোগান তোলেন।

মিলের অচলাবস্থার দায় লকেট চাপিয়েছেন তৃণমূলের উপরে। লকেট বলেন, ‘‘শ্রমিকদের না জানিয়েই বৈঠক করে শ্রমিকদের অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এর মূলে আছে তৃণমূল।’’ ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা প্রলয় চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘‘উনি (লকেট) এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির জন্য এ সব মনগড়া কথা বলছেন।’’ প্রলয়ের বক্তব্য, ‘‘শ্রমিকদের বলা হয়েছিল, সোমবার পর্যন্ত মিল যেমন চলছে চলুক, মঙ্গলবার আলোচনা করা হবে। মিল কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছিলাম, কাউকে যেন মিলের বাইরে রাখা না হয়। মিল চলুক। শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনা হোক।’’

শ্রমিকদের একাংশ নেতানেত্রীদের আনাগোনায় বিরক্ত। তাঁদের দাবি, সামনে ভোট থাকায় সব দলের নেতানেত্রীরা আসছেন। কিন্তু শ্রমিকদের সমস্যা মিটছে না। বিক্ষোভকারীদের একাংশের অভিযোগ, শ্রমিকদের সমস্যার দিকে না তাকিয়ে এবং তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মালিকপক্ষের স্বার্থে কাজ চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিকে, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে প্ররোচনার অভিযোগে রবিবার ১৫ জন শ্রমিকের বাড়িতে ‘গেট বাহারের’ নোটিস পাঠিয়ে তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়। তাতে শ্রমিকদের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে।

এ নিয়ে মিল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা কোনও মন্তব্য করেননি। জেলা সিআইটিইউ সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায়ের অভিযোগ, ‘‘শ্রমিকদের শোষণ করা হচ্ছে। দেওয়ালে পিঠ না ঠেকলে কেউ রাস্তায় বসেন না। মিল কর্তৃপক্ষ যন্ত্র এবং শ্রমিকের অনুপাত মেনে কাজ করাচ্ছেন না। শ্রমিকদের বদলি করা বা বসিয়ে দেওয়া বেআইনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Labours Jute Mill Locket chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy