বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। —ফাইল চিত্র।
নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনের মধ্যে ২টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনে বিভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিলেন বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায়। ‘যুযুধান’ দুই গোষ্ঠীর দুই নেতাকে প্রকাশ্যে মঞ্চে হাত মিলিয়েও দিলেন।
শনিবার রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন মাসড়া, কাষ্ঠগড়া, দখলবাটি— এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের সঙ্গে শতাব্দী আলাদা আলাদা করে সভা করেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাসড়া ও দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দল ভাল ফল করলেও কাষ্ঠগড়া গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। এই প্রথম কাষ্ঠগড়া পঞ্চায়েত তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিজেপি দখল করেছে।
১৩ আসনের কাষ্ঠগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল পেয়েছে মাত্র ৩টি আসন। ৭টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। বাকি ৩টি আসনে জয়ী হয়েছে সিপিএম। পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল মাত্র ১টি আসন পেয়েছে। ২টি আসন পেয়েছে বিজেপি। কাষ্ঠগড়া গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার পরেই অঞ্চল সভাপতি সঞ্জয় দত্তকে সরিয়ে তপন মণ্ডলকে অঞ্চল সভাপতি করা হয়। তৃণমূল সূত্রে দাবি, পঞ্চায়েতে হারের পর্যালোচনায় দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং সঠিক প্রার্থী নির্বাচন না হওয়া— এই দুই কারণ উঠে আসে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, কাষ্ঠগড়া নিয়ে দলের কর্মীদের মনোমালিন্য দূর করার জন্য এলাকার বিধায়ক তথা দলের কোর কমিটির সদস্য আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বৈঠকও করেন। তাতেও কাজ হয়নি বলেই খবর। উল্টে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগকারী দলের কর্মীদের একাংশদের প্রাধান্য দেওয়ার জন্য আশিসের প্রতি দলের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশও করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাষ্ঠগড়া পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের ফলে কর্মীদের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তেমন সক্রিয়তা দেখা যায়নি। শনিবার কর্মী বৈঠকে শতাব্দী কাষ্ঠগড়া অঞ্চলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ পেয়েই বিবাদমান দুই দলীয় নেতা সঞ্জয় দত্ত ও নিখিল কোনাইকে মঞ্চে ডেকে নেন এবং তাদের দু’জনের মধ্যে হাত মিলিয়ে দেন। শতাব্দী একসঙ্গে কাজ করার কথা মাইকে দু’জনকেই বলতে বলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে প্রতি বুথ থেকে লিড দেওয়ার বার্তা দিয়ে শতাব্দী রায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে হারা ভোট পুনরুদ্ধার করার জন্য কর্মীদের বলেন। মাসড়া এবং দখলবাটি দুই জায়গার কর্মিসভায় পঞ্চায়েতের থেকে আরও ভাল ফল করার নির্দেশ দেন শতাব্দী। মাসড়ার কর্মিসভায় তারাচুয়া মৌজার অধীন কিছু জায়গায় পানীয় জলের সমস্যা এবং নিরিষা মোড় থেকে মলুটি যাওয়ার রাস্তা সংস্কারের জন্য শতাব্দীর কাছে দাবি জানান কর্মীরা।
শতাব্দী রায় যখন রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির মাসড়া অঞ্চল-সহ কাষ্ঠগড়া অঞ্চলে কর্মিসভা নিয়ে ব্যস্ত তখন বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর দখলবাটি অঞ্চলে প্রচারে ছিলেন। দখলবাটি অঞ্চলের বামদেবপুর, কুতুবপুর যাওয়ার পথে বিজেপি প্রার্থী দাবি করেন, বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, আবাস যোজনায় বাড়ি না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এ ক্ষেত্রে বিদায়ী সাংসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবাশিস বলেন, ‘‘তিন বারের সাংসদ এ সমস্ত বিষয়গুলি গুরুত্ব দেন নি। সে জন্য আজকে প্রচারে মানুষ আমার কাছে আবেদন জানাচ্ছেন। দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়া এ দিন বিজেপি প্রার্থীর আয়াস অঞ্চল ও সন্ধ্যায় রামপুরহাট শহরে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy