প্রচারে কেন সচিনের ছবি? তা নিয়ে বহরমপুর লোকসভায় তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে কংগ্রেস। এ বার তা নিয়ে অধীর চৌধুরীকে পাল্টা আক্রমণে গেলেন ভারতের হয়ে জোড়া বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ইউসুফ। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘বিশ্বকাপ তো আমি জিতেছি। সেই ছবি ব্যবহার করা নিয়ে অন্যের আপত্তি কেন মানতে যাব!’’
আরও পড়ুন:
কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রচারের ব্যানারে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্ত ব্যবহার করেছেন পাঠান। অভিযোগ, তিনি সেখানে ‘ভারতরত্ন’ সচিনের মতো ব্যক্তিত্বের ছবি ব্যবহার করেছেন, যা আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। এই মর্মে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। কমিশনকে যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে কংগ্রেস বলেছে, ‘‘ক্রিকেট বিশ্বকাপের জয়ের মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে পোস্টারে। যেখানে রয়েছেন ‘ভারতরত্ন’ সচিন তেন্ডুলকর এবং অন্যরা। এই মুহূর্ত গোটা দেশের জন্য যেমন গর্বের তেমনই আবেগেরও বটে। রাজনৈতিক লাভের জন্য এই মুহূর্তকে ব্যবহার করা উচিত নয়। সর্বোপরি এর ফলে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছি।’’ কংগ্রেস একে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ বলে মনে করলেও পাঠান নিজে বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছেন না। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমি বিশ্বকাপ জিতেছি। তাই বিশ্বকাপের সঙ্গে আমার ছবি আছে।’’ পরবর্তী কালেও ২২ গজে নিজের কৃতিত্ব ভোটারদের কাছে তুলে ধরতে পিছপা হবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বে ২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১১ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। দু’টি দলেরই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন পাঠান। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর ইউসুফ নেমেছেন ভোটের ময়দানে। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেসের ‘গড়’ বলে পরিচিত বহরমপুর আসনে। যেখানে ১৯৯৯ সাল থেকে টানা জিতে চলেছেন প্রদেশ সভাপতি অধীর। তবে, এ বার অধীর-কাঁটা উপড়াতে জোড়া বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য পাঠানকে বহরমপুরে প্রার্থী করে প্রথম রাউন্ডে প্রতিপক্ষকে ‘বাউন্সার’ দিয়েছে তৃণমূল। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ‘ব্যাট চালিয়েই’ প্রচার সারছেন পাঠানও। তা করতে গিয়ে নিজের বিশ্বকাপ জয়ের ছবি প্রচারে ব্যবহার করছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, যে ছবিতে বিশ্বকাপ, পাঠান ছাড়াও রয়েছেন সচিন। কংগ্রেস আমলে ‘ভারতরত্ন’ পাওয়া সচিনের ছবি ব্যবহার নিয়েই আপত্তি অধীরদের। তাদের অভিযোগ, সচিনের ছবি দেখিয়ে ভোট চাইছেন পাঠান। কিন্তু পাঠান এই অভিযোগ মানতে চান না। এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে ইউসুফ বলেন, ‘‘ভারতে খুব কম লোকের কাছে এই সুযোগ এসেছে। খুব কম লোকই হাতে বিশ্বকাপ নিতে পেরেছেন বা বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হতে পেরেছেন। আমি পরিশ্রম করে তা অর্জন করেছি। দেশবাসী তার সাক্ষী। সবাই এটা মেনে নেবেন। যদি কোনও আইনি সমস্যা থেকে থাকে, তা হলে তা আমার লিগাল টিম (আইনি পরামর্শদাতা দল) দেখবে।”