বাঁ দিক থেকে, এডিএমকে প্রধান পলানীস্বামী এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে ‘মিশন ৪০০’-র লক্ষ্য সফল করতে তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল এডিএমকে-কে এনডিএ জোটে ফেরাতে সক্রিয় হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নিশানা করলেন এডিএমকে প্রধান তথা সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন পলানীস্বামী। তিনি বুধবার বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে আমরা একক ভাবে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, চলতি মাসের গোড়ায় এনডিএ-তে ফেরানোর লক্ষ্যে এডিএমকে-এর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে এক ঝাঁক নেতা এডিএমকে ছেড়ে বিজেপিতে গেলে দূরত্ব বাড়ে। বিজেপির সঙ্গে জোট করার প্রশ্নে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার রাতে নিয়ে বৈঠক করেন পলানীস্বামী। বৈঠকে ঠিক হয় তামিল ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোটে যাবে।
পলানীস্বামী বলেন, ‘‘আমরা গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিজেপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। তার পর থেকে, আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গুজব ছড়াচ্ছে যে আমরা পরোক্ষ ভাবে বিজেপির সঙ্গে জোটে আছি। তাই আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানাচ্ছি, এনডিএ-তে ফেরার কোনও প্রশ্ন নেই। দ্রাবিড় রাজনীতির আর এক প্রধান দল ডিএমকে গত দু’দশক ধরে কংগ্রেসের সহযোগী। ডিএমকে প্রধান তথা তালিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠনে সক্রিয় ভূমিকাও নিয়েছেন। এই আবহে এডিএমকের সিদ্ধান্ত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিকে কিছুটা বিপাকে ফেলল বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দ্রাবিড় রাজনীতির দুই বৃহৎ শক্তিকে বাদ দিয়ে অন্য দ্রাবিড় দলগুলিকে নিয়ে জোট করতে পারে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে সদ্যপ্রয়াত চিত্রতারকা বিজয়কান্তের দল ডিএমডিকের পাশাপাশি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বহিষ্কৃত এডিএমকে নেতা ও পন্নীরসেলভমের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অম্বুমণি রামাডসের দল পিএমকের নাম নিয়ে জল্পনা রয়েছে। আলোচনায় রয়েছে, একদা প্রয়াত জয়ললিতার ছায়াসঙ্গিনী শশীকলার ভাইপো প্রাক্তন এডিএমকে প্রধান টিটিভি দীনকরণের দল এএমএমকে-ও।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তামিলনাড়ুতে বিজেপি এবং এডিএমকে জোট বেঁধে লড়েছিল। কিন্তু সে রাজ্যের ৩৯টির মধ্যে তারা পেয়েছিল মাত্র একটি। ৩৮টি গিয়েছিল ডিএমকে-কংগ্রেস-বাম এবং আরও কয়েকটি ছোট আঞ্চলিক দলকে নিয়ে গঠিত বিরোধী জোটের ঝুলিতে। বিজেপির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বরে এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন পলানীস্বামী। সেই সিদ্ধান্তেই অনড় থাকার বার্তা দিলেন তিনি।
এডিএমকের একটি সূত্রের মতে, গত পাঁচ বছরে উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের মানসিক দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তামিল ভূমিতে হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ রয়েছে। যে বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করেছে প্রতিপক্ষ ডিএমকে। এই আবহে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে তামিল-বিরোধী তকমা জোটার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আপাতত ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে চান এডিএমকে নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy