Advertisement
Back to
Abhishek Banerjee

অসম উৎসবে টাকা দিল, বাংলা ভাঙা ঘর বানানোর টাকা দিতে পারবে না? প্রশ্ন অভিষেকের, লক্ষ্য কমিশন

জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া বাড়ি নতুন করে গড়ে দেওয়ার টাকা দিতে চায় রাজ্য সরকার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার অনুমতি দিচ্ছে না। বুধবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন অভিষেক।

রাজভবনের বাইরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজভবনের বাইরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৯
Share: Save:

জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি নতুন করে গড়ে দেওয়ার টাকা দিতে চায় রাজ্য সরকার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার অনুমতি দিচ্ছে না। বুধবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে রাতে রাজভবন থেকে বেরিয়ে এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরেই কমিশনের তরফে রাজ্যকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে যে, জলপাইগুড়িতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার টাকা দেওয়ার অনুমতি সরকারকে দেওয়া হবে না। এ প্রসঙ্গে অসমের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বাংলার প্রতি আরও এক বার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

অভিষেক জানিয়েছেন, আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীনই অসমে বিহু উৎসব পালনের জন্য টাকা দেওয়ার অনুমতি কমিশন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত, দুপুরে কমিশনের তরফে রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ, যাঁদের ঘর মাটিতে মিশে গিয়েছে, তাঁদের বাড়ি তৈরির টাকা রাজ্য দিতে চাইলেও কমিশন অনুমতি দেবে না। রাজ্যকে বলা হয়েছে, ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যাবে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির জন্য টাকা দেওয়া যাবে। অল্প ক্ষতি হলে পাঁচ হাজার টাকা এবং বেশি ক্ষতি হলে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়া যাবে না। আমার প্রশ্ন, এরা বাংলা বিরোধী নয় তো কারা বিরোধী?’’

এর পরেই অসমের প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন দেখিয়ে বলেন, ‘‘অসমে বিহু পালনের জন্য গত পরশু ওই রাজ্যের ২০০০টি কমিটিকে কমিশন দেড় লক্ষ টাকা করে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন উৎসব পালনের জন্য এই টাকা দেওয়া হল। উৎসব নিয়ে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলার যখন প্রয়োজন, তখন কমিশন অনুমতি দিল না। কারণ বাংলায় বিজেপির সরকার নেই। অসমে রয়েছে। এ থেকেই প্রমাণিত, বিজেপি বাংলা-বিরোধী।’’

রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, সিভি আনন্দ বোস তাঁদের জানিয়েছেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে তিনি যোগাযোগই করতে পারেননি। বাকি দুই কমিশনারের সঙ্গে রাজ্যপালের কথা হয়েছে। বাংলার সমস্যার কথা তিনি তাঁদের জানিয়েওছেন। কিন্তু তার পরেও বুধবার দুপুরে কমিশন রাজ্য সরকারকে জলপাইগুড়িতে বাড়ি বানানো যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। অভিষেকের কথায়, ‘‘মোদী সরকারের কাছে বাংলার রাজ্যপালের কোনও গুরুত্বই নেই। তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারও তাঁর ফোন তোলেন না। আসলে তিনি বাংলার হয়ে দাবিদাওয়া জানাবেন, তাই তাঁর কথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’’

জলপাইগুড়ির ঝড়ে ১৬০০ পরিবারের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিষেক। কমিশনকে আক্রমণ করে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বাংলার মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরকারে এনেছেন। তাই ওদের (বিজেপি) গাত্রদাহ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে ভোটের আগে যে ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। ওরা অসমের টাকা ছাড়ছে, বাংলায় যাঁরা সর্বস্বান্ত, তাঁদের টাকা দিতে দিচ্ছে না।’’ এ বিষয়ে প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপও চাইবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল সেনাপতি।

অভিষেক জানিয়েছেন, শুক্রবার তিনি জলপাইগুড়িতে যাবেন এবং সভা করবেন ধূপগুড়িতে। সেখানে ১৬০০ পরিবারের প্রতিনিধির সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। সোমবার তৃণমূলের যে প্রতিনিধিরা দিল্লিতে গিয়ে কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, তাঁরাও ধূপগুড়ির সভায় থাকবেন এবং নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা শোনাবেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক।

কিছু দিন আগে এনআইএর এসপি ধনরাম সিংহের বিরুদ্ধে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। সে প্রসঙ্গে অভিষেক বুধবার বলেন, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি যে সে দিন ধনরামের বাড়িতে গিয়েছিলেন, আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। ভোটের আগে বাজার গরম করতে আমরা সেটা প্রকাশ করব না। ফুটেজ আমরা দু’চার দিনের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে জমা দেব।’’

ডায়মন্ড হারবারে এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি বিজেপি। সেই বিষয়টিকেও কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে না পেলে ইডি বা সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে ওঁরা প্রার্থী করতে পারেন। বিজেপি আসলে মাঠ ফাঁকা করতে চায়। কিন্তু ফাঁকা মাঠেও ওরা গোল দিতে পারবে না। মানুষ ওদের আটকে দেবে।’’

বুধবার বালুরঘাটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। তিনি জানান, শাহ বালুরঘাটের নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন। তিনি বালুরঘাটকে বলেছেন ‘বেলুরঘাট’। অভিষেকের কথায়, ‘‘বাংলার একটা লোকসভা কেন্দ্র, যেখানে উনি প্রচার করতে এসেছেন, তার নামটা পর্যন্ত ভুল বলবেন! উনি না হয় বাংলা জানেন না, বোঝেন না, বাংলার সংস্কৃতি চেনেন না, কিন্তু ওই মঞ্চেই তো ছিলেন বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী। তিনি কেন ওঁকে গিয়ে নামটা ঠিক করে উচ্চারণ করতে বললেন না? এক বার নয়, পাঁচ বার ভুল নাম উচ্চারণ করেছেন শাহ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy