অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এক বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ করতে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মথুরাপুর লোকসভার অন্তর্গত কুলপিতে সভা করতে গিয়ে বিজেপির উদ্দেশে কটাক্ষের সুরেই অভিষেক প্রস্তাব দেন, ‘‘বিজেপি ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী পাচ্ছে না! চারটি কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী দিতে পারেনি। আমি বলব, মেঘের আড়াল থেকে খেলে লাভ নেই। ইডি, সিবিআই, এনআইএ এবং ইনকাম ট্যাক্সের ডিরেক্টরকে ওই চার কেন্দ্রে প্রার্থী করে দিন। ওঁরা অনেক তল্পিবাহকতা করেছেন। মেঘনাদের মতো মেঘের আড়ালে না থেকে এ বার আসুন জনতার দরবারে, লড়াই হোক।’’
বিজেপি এখনও রাজ্যের চারটি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। তার মধ্যে অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার ছাড়াও রয়েছে বীরভূম, আসানসোল এবং ঝাড়গ্রাম।
অভিষেকের বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপিও। পদ্মশিবিরের সদ্যনির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যে সন্তান মায়ের গর্ভে রয়েছে, তারও ইডি, সিবিআই শুনতে শুনতে বোধ হয় মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে কাঁদার বদলে সে-ও ইডি, সিবিআই বলে উঠবে। এ বার তো তৃণমূল অন্তত নতুন কিছু বলুক!’’
কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী তথা রাজপরিবারের কূলবধূ অমৃতা রায়ের সঙ্গে কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শনিবার তাকেও নিশানা করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির প্রার্থীকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ইডি যে তিন হাজার কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে, তা মানুষের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। একই কথা তিনি বলেছেন তামিলনাড়ুর এক প্রার্থীকেও। আবার একটা ভোট এসেছে, আাবার একটা জুমলা নিয়ে হাজির হয়েছে! সারদার তদন্ত তো কবে থেকে করছে! একটা টাকাও মানুষকে ফেরত দিয়েছে?’’
লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থবৃদ্ধি নিয়ে বিজেপি যে কথা বলেছে, কুলপির সভা থেকে তা নিয়েও সরব হয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, ‘‘বিজেপি বলছে ওরা ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার করে দেবে। ওরা তো দেশের ২৭টা রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। একটা রাজ্যেও করেছে? বিজেপি বলুক গ্যাস দেবে বিনামূল্যে! এই ঘোষণা করতে পারলে ৪২টি কেন্দ্রে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেব। ওপেন চ্যালেঞ্জ রইল।’’ বিজেপির শমীক অবশ্য পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রয়োজন নেই। কারণ, সেখানে মানুষকে ভাতা দিয়ে তুষ্ট রাখতে হয় না।’’
মথুরাপুর লোকসভায় তৃণমূল এ বার প্রার্থী করেছে তরুণ নেতা বাপি হালদারকে। গত তিন বারের সাংসদ চৌধুরীমোহন জাটুয়াকে শারীরিক কারণে আর টিকিট দেয়নি দল। কুলপির সভা থেকে মথুরাপুরের ব্যবধানও বেঁধে দিয়েছেন অভিষেক। গত বার তিন লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন জাটুয়া। এ বার বাপির ব্যবধান সাড়ে তিন লক্ষ করার ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি। সেই সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেছেন, ‘‘তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে ২০০১ সালে জেলার ২৮টির মধ্যে ১৪টি জিতেছিল জোড়াফুল। তার পর ২০০৮ সালের পঞ্চায়েতে জেলা পরিষদ জিতে এই জেলাই পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। যত দিন গিয়েছে, তৃণমূল তত এই জেলায় বেশি বেশি করে শক্তিশালী হয়েছে। এ বারেও তার প্রমাণ দিতে হবে।’’ নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের পাশাপাশি মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের উন্নয়নের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘‘আমি কথা দিয়ে গেলাম, ডায়মন্ড হারবারের মতো করেই মথুরাপুরেও উন্নয়ন করব। সে দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy