প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের মৃত্যু রহস্যে নয়া বিতর্ক। তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কিছু ব্যক্তির মনোমতো তৈরি করতে বিশেষজ্ঞদের প্রভাবিত করা হয়েছিল বলে এ বার অভিযোগ উঠল। এইমস-এর ফরেন্সিক সায়েন্স বিভাগের প্রধান সুধীর গুপ্ত সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (ক্যাট)-এর কাছে জমা দেওয়া এক হলফনামায় জানিয়েছেন, সুনন্দার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরিতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এইমস-এর চিকিৎসকদের যে বোর্ড সুনন্দার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরি করেছিল সুধীর ছিলেন তাঁর প্রধান। হলফনামার কথা প্রকাশ্যে আসতেই এইমস-এর কাছে ঘটনার সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। যদিও সুধীর গুপ্তের অভিযোগ নিয়ে এ দিন কোনও মন্তব্য করেননি শশী তারুর।
গত মাসের ৩০ তারিখে ক্যাট-এর কাছে জমা দেওয়া ওই হলফনামায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং এইমস-এর তৎকালীন সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সুধীর। বুধবার এ নিয়ে যদিও তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “এটি বিচারাধীন বিষয়। তাই কোনও মন্তব্য করব না। আমি সরকারি কর্মী। যা বলার যথাযোগ্য জায়গায় জানিয়েছি।” সম্প্রতি তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। হর্ষ বর্ধন এ দিন বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ওই চিকিৎসক তাঁর পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছিলেন। একটি চিঠিও জমা দিয়েছিলেন তিনি।” কিন্তু সুনন্দার ময়নাতদন্ত নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সংবাদমাধ্যমে হলফনামার কথা জানতে পেরেই এইমস-এর কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সুনন্দার মৃত্যু নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। এর মধ্যে ওই চিকিৎসকের হলফনামা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্সি জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। ক্যাট-এর কাছে জমা দেওয়া ওই হলফনামা পরীক্ষা করে দেখা হতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে সুধীর গুপ্তকেও।
গত ১৭ জানুয়ারি দিল্লির দ্য লীলা প্যালেস হোটেলের ৩৪৫ নম্বর স্যুইটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সুনন্দাকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিকিৎসকেরা জানান, অতিরিক্ত মাদক সেবনেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পাশাপাশি তাঁরা জানান, সুনন্দার শরীরে আঘাতের কিছু চিহ্নও মিলেছে। সেই সময় সুধীর গুপ্ত সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, “আঘাতের চিহ্ন থাকাটা বড় কথা নয়। দেখতে হবে, সেই আঘাতের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না।” ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিষক্রিয়ার কারণ উল্লেখ করা হলেও দিল্লির সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অলোক শর্মা পুলিশকে আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা, খুন সব ক’টি দিককেই সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত চালাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে এই তদন্তের ভার দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy