বন্যায় মৃতদের জন্য প্রার্থনা শ্রীনগরে।
প্রবল বন্যায় জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষতির মুখে পড়ল আপেল চাষ। অ্যাসোচামের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা।
বন্যায় ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বহু চাষের জমি। নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু আপেল গাছ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বারামুল্লা, কুপওয়ারা এবং সোপোর জেলা। রাজ্যের মধ্যে এই তিন জেলাতেই সবচেয়ে বেশি আপেল উত্পাদন হয় ।
ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতির হিসেব নিতে সম্প্রতি সমীক্ষা শুরু করে অ্যাসোচাম। সেই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভূসর্গের প্রধান অর্থকরী ফসল আপেল। বার্ষিক কৃষি উত্পাদনের সিংগভাগ জুড়েই থাকে আপেল। প্রতি বছর রাজ্যে উত্পাদন হয় প্রায় পৌনে দু’ লাখ মেট্রিক টন আপেল। আয় হয় প্রায় বারোশো কোটি টাকা। আপেল চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় ৩০ লাখ মানুষ।
কাশ্মীরি আপেলের চাহিদা শুধুমাত্র দেশে নয় বিদেশেও রয়েছে। বন্যায় আপেল চাষে ক্ষতি হওয়ায় পাইকারি এবং খুচরো বাজারে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই আপেলের প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। উত্সবের প্রাক্কালে যা চিন্তার ভাঁজ ফেলছে ক্রেতা-বিক্রেতা দু’য়ের কপালেই।
অন্য দিকে, বন্যায় ভেঙে পড়েছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। উপত্যকা জুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১২৭৬টি সরকারি স্কুল। এর মধ্যে ২০০টি স্কুলবাড়ি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে। আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারের উপর স্কুলবাড়ি।
রাজ্যের তরফে স্কুলবাড়িগুলি মেরামতের জন্য ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের শিক্ষা অধিকর্তা এইচ আর ফাখরু।
জল যন্ত্রণার ছবি। শ্রীনগরে।
নিচু এলাকাগুলিতে এখনও জল জমে থাকায় স্কুলগুলিকে পঞ্চায়েত অফিস অথবা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি স্কুল ভেঙে পড়েছে রিয়াসি জেলায়। এখানে ভেঙে পড়েছে ২৮৮টি স্কুল। তালিকায় নাম রয়েছে পাক সীমান্ত সংলগ্ন পুঞ্চ, রাজৌরি এবং উধমপুর জেলা। শ্রীনগর শহরেও জল জমা থাকার জন্য ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা।
শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও। রাজ্যের অন্য প্রান্তের পাশাপাশি সঙ্কটে পড়েছে রাজধানী শ্রীনগরও। বন্যার ভ্রুকুটির থেকে রেহাই মেলেনি জিবি পন্থ হাসপাতালেরও। ব্রিগেডিয়ার এনএস লাম্বার মতো কয়েক জন সেনা চিকিত্সক অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। খুলে দেওয়া হয়েছিল ৯২ বেস সেনা হাসপাতালের দরজা। দিন রাত এক করে বিনা পয়সায় অসুস্থদের সেবা করেন সেনা চিকিত্সকরা। সেনাবাহিনীর তরফে রোগীদের জন্য ওযুধের পাশাপাশি রোগীদের পরিজনদের জন্যও খাবার এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়।
ছবি: পিটিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy