বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে এম জে আকবর। ছবি: পিটিআই।
বিজেপি-র অভ্যম্তরীণ কোন্দল আরও প্রকাশ্যে এল।
বিজেপি-র প্রাক্তন মন্ত্রী যশোবন্ত সিংহ শনিবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে দলীয় নীতি নিয়ে কারও নাম না করেও যে ভাবে মুখ খুললেন, তাতে অন্তত এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তিনি এ দিন বলেন, “দলে এখন স্পষ্ট ভাবে দু’টি গোষ্ঠী। এক দল আসল আর অন্য দল নকল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে নকলরাই এই মুহূর্তে দল চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, দলে যাঁরা সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন, তাঁদের কাছে দলীয় টিকিট পাওয়াটা রেল বা বিমানের টিকিট পাওয়ার থেকেও সহজ।”
পছন্দের কেন্দ্রে টিকিট না-মেলায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দার্জিলিঙের বিদায়ী সাংসদ যশোবন্তের বিরোধের সূত্রপাত শুক্রবার। জোধপুর, চিতোরগড় এবং দার্জিলিঙের পর এ বার তিনি তাঁর জন্মস্থান রাজস্থানের বাড়মের থেকে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই দিন দিল্লিতে দলের পক্ষ থেকে বাড়মেরের প্রার্থী হিসেবে সদ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সোনারাম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ হন বিজেপি-র তিন বারের সাংসদ এবং এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অসন্তোষ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে তিনি বিজেপি ছেড়ে দিতে পারেন বলেও খবর ছড়ায়। তবে কি তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন? এমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেননি খোদ যশোবন্ত। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার বাড়মের পৌঁছনোর পর সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
যশবন্ত সিংহ
লালকৃষ্ণ আডবানী
মুরলীমনোহর জোশী
যদিও যশোবন্তের দলছাড়ার জল্পনা নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নন বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ এ দিন বলেন, “যশোবন্ত সিংহ দলের এক জন প্রবীণ নেতা। আমরা তাঁকে যথেষ্ট সম্মান করি। নির্বাচনের টিকিটের নিরিখে তাঁর মর্যাদার পরিমাপ করা যায় না। দল তাঁর কাজ এবং অভিজ্ঞতার যথাযথ ব্যবহার করবে।” যদি যশোবন্ত সিংহ বিজেপি ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে বাড়মেরে লড়াই করেন, সে ক্ষেত্রে দল কি তাঁকে বহিষ্কার করবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে রাজনাথ জানান, অনুমানভিত্তিক কোনও বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে পারেন না।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী তালিকায় একটা বিষয় স্পষ্ট, বর্ষীয়ান রাজনীতিকদের নাম সেখানে প্রায় নেই। সেখানে যশোবন্ত সিংহ, লালজি টন্ডন, যশবন্ত সিন্হা, কল্যাণ সিংহের মতো প্রবীণ নেতাদেরও রাখা হয়নি। ব্যতিক্রম শুধু লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলীমনোহর যোশী। এরই প্রেক্ষিতে এ দিন যশোবন্ত বলেন, “দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি, এই মুহূর্তে দল যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে বিজেপি-র আদর্শগত কোনও মিল নেই।” শুধু তাই নয়, আরও এক ধাপ এগিয়ে যশোবন্ত মন্তব্য করেন, “বিজেপি এখন পুরোপুরি বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে। দলীয় আদর্শের প্রতি তাঁদের ন্যূনতম সম্মান নেই।”
যশোবন্তের এই বহিরাগত তত্ত্ব পেশের দিনই ঘটনাচক্রে বিজেপিতে যোগ দিলেন লেখক এবং সাংবাদিক এম জে আকবর। এ দিন দিল্লিতে এ কথা জানিয়েছেন রাজনাথ সিংহ। একদা কংগ্রেস সাংসদ হিসেবে আকবরের পরিচিতি ছিল। কিন্তু হঠাত্ বিজেপিতে কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বর্ষীয়ান এই সাংবাদিক বলেন, “আমি রাজনীতিতে নীতির কারণেই ফিরে এলাম। সকলেই জানেন, এই মুহূর্তে আমাদের দেশ গভীর সঙ্কটের মুখোমুখি। দেশের জন্য সামান্যতম কিছু করতে পারার এটাই আমার কাছে একটা সুযোগ।” দেশের কাজে এই নেমে পড়াটাকে ‘পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ হিসেবেই দেখছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর একদা ঘনিষ্ঠ আকবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy