দিল্লিতে ফের ধর্ষণের অভিযোগ। প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।
পরিবহণ দফতরের কোনও বৈধ অনুমতি ছাড়াই রাজধানীতে উবের ট্যাক্সি চলত। শুধু উবের নয়, দিল্লির বুকে ওয়েব-নির্ভর যে ক’টি সংস্থা এই ধরনের পরিষেবা দেয়, তাদের বেশির ভাগেরই সরকারি অনুমোদন নেই। মঙ্গলবার এমন তথ্যই উঠে এল দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাসি-র কথায়। সোমবারই উবের ট্যাক্সি পরিষেবা নিষিদ্ধ করেছে দিল্লি প্রশাসন। পুলিশ সূত্রে খবর, শহরে চলা আরও ২০টি এই ধরনের সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে দিল্লি প্রশাসন।
গত শুক্রবার উবের-এর ট্যাক্সিচালক শিবকুমার যাদব এক তরুণী যাত্রীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় গ্রেফতার হয় ওই চালক। এর পরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য প্রশাসন। সোমবার উবের-এর জেনারেল ম্যানেজার গগন ভাটিয়াকে ডেকে পাঠায় পুলিশ। দিল্লির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজেন্দ্রকুমার যাদবের নেতৃত্বে তদন্তকারী একটি দল তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু, তাঁর জবাব তাদের সন্তুষ্ট করতে না পারায় এ দিন ফের তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গগনের কাছে তাঁরা জানতে চাইবেন, অ্যাপস-এর মাধ্যমে যাত্রী এবং ট্যাক্সিচালকের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার পরে কোম্পানির কী ভূমিকা ছিল? যদি কোনও চালক এই ধরনের অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন সে ক্ষেত্রে উবের-এর দায় কতটা? কোম্পানির ব্যবসার ধরন, কী ভাবে কাজ করে এবং কারা এর উদ্যোক্তা— এ সবই জানতে গগনকে এ দিন বেশ কিছু কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
সোমবার কী জানিয়েছিলেন গগন?
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন তিনি প্রথমে জানান, ভারতে উবের-এর শীর্ষপদাধিকারী কেউ নেই। গগন নিজে ইউরোপ, মধ্য প্রাচ্য এবং এশিয়ার দায়িত্বে থাকা এক কার্যনির্বাহীকে রিপোর্ট করেন বলে তাঁর দাবি। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এ দিনও যদি গগনের কাছ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না মেলে, তবে ওই কার্যনির্বাহীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হতে পারে। তাঁর দাবি, মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট-এর বেশ কয়েকটি ধারা ওই কোম্পানি অমান্য করেছে।
একই কথা এ দিন শোনা গিয়েছে পুলিশ কমিশনার বি এস বাসির কণ্ঠে। উবের-এর পরিচালন পদ্ধতিতে বেশ কিছু অসঙ্গতি নজরে এসেছে বলে দাবি করেন বাসি। এই ঘটনায় কোম্পানিটি তার দায়িত্ব যথাযথ পালন করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়: “ওই কোম্পানিটি যাত্রীদের সঙ্গে ট্যাক্সিচালকদের যোগাযোগ করিয়ে দিত। যে যাত্রী পরিষেবার কথা বলা হত তা-ও মানা হয়নি। ফলে, যে দায়িত্ব ওই কোম্পানিটির ছিল তা কোনও ভাবেই পালন করা হয়নি।”
তবে এর পরেই বাসি যে কথাটি বলেন, তাতে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদেরও চোখ কপালে উঠেছে। উবের-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থার এই ধরনের পরিষেবা দেওয়ার কোনও প্রশাসনিক অনুমতিই নেই বলে এ দিন বাসি দাবি করেন। তাঁর কথায়, “ইন্টারনেট পরিষেবা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গেই এই ধরনের অ্যাপ-নির্ভর পরিষেবা গোটা বিশ্বে চালু হয়েছে। উবের তাদের অন্যতম। কিন্তু তারা এই শহরে রাজ্য পরিবহণ দফতরের কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই কাজ করত।” কিন্তু কী ভাবে? তার কোনও ব্যাখ্যা দেননি পুলিশ কমিশনার।
অন্য দিকে, ধৃত ট্যাক্সিচালক শিবকুমার যাদবের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েও এ দিন মুখ খুলেছে পুলিশ। তাদের দাবি, যে নথিপত্র দেখিয়ে ওই লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল তা ভুয়ো।
কী ভাবে ভুয়ো কাগজপত্র দেখিয়ে মিলল লাইসেন্স? পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy