আদালত চত্বরে পুলিশের ঘেরাটোপে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খান। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
হল্লাকর্মীদের দিয়ে হা রে রে রে চিৎকার, গাড়িতে ধাঁই-ধপাধপ চাপড় সবই জলে গেল। মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতের বাইরে কলকাতা পুলিশের যাবতীয় কৌশলে চোনা ফেলে এ বারও সারদাকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়কে জড়িয়ে ফের মন্তব্য করে গেলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খান। পুলিশের ঘেরাটোপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আসিফ বললেন, “মদন এখনই জেলে ঢুকবে। আমি বেরোলে, মুকুল ঢুকবে। তার পরেই মমতা।”
এর আগে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের কথা যাতে সংবাদমাধ্যমের কানে না পৌঁছয় সে জন্য বর্গিদের মতো হা রে রে রে চিৎকার করা এবং মড়াকান্নার জন্য পেশাদার রুদালির মতো হায় হায় চিৎকার করার জন্য বিভিন্ন থানা থেকে আদালত চত্বরে আনা হয় বাছাই করা পুলিশকর্মীদের। মুখে চিৎকার করা ছাড়াও তাঁরা পুলিশের গাড়িতে চাপড় মেরে হল্লা করে কুণালের আওয়াজ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কিন্তু এর মধ্যেও কুণাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সহকর্মীদের জড়িয়ে নানা বিস্ফোরক মন্তব্য করে গিয়েছেন। ওই সব চেষ্টা কার্যত কাজ না করায় গত ১ ডিসেম্বর শেষপর্যন্ত পুলিশ গলা টিপে ধরে কুণালকে গাড়ির মধ্যে তুলেছিল। আসিফের ক্ষেত্রে অবশ্য এখনও তেমন ভাবে বাহুবল প্রয়োগ করেনি পুলিশ। তবে মুখ্যমন্ত্রী ‘ডাকাতরানি’ বলার পর থেকে হল্লাকর্মীদের এনে তাঁর কণ্ঠ চাপা দেওয়ার সব চেষ্টাই চলেছে। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কী হয়েছে এ দিন?
সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আসিফকে কড়া পাহারায় শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের গাড়ি আদালত চত্বরে ঢোকা মাত্র এন্টালি থানার পুলিশ জায়গাটি ঘিরে ফেলে। গাড়ি থেকে আসিফকে নামানোর আগেই তিনি বলেন,“আমি যে দিন বের হব (জেল থেকে), সে দিন বাকিরা ঢুকবে। আমাকে যাঁরা ঢুকিয়েছেন, তাঁরা সে দিন ঢুকবেন।” আসিফ এটুকু বলার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ হা রে রে রে শুরু করে দেয়। তবে আসিফ এই চিৎকারের মধ্যে আর কোনও কথা বলার চেষ্টাও করেননি।
আদালতের লকআপের ভিতরে অবশ্য আগাগোড়াই চুপচাপ ছিলেন আসিফ। দুপুর তিনটে নাগাদ শিয়ালদহের এসিজেএম বিচারক অর্পিতা ঘোষের এজলাসে বেনিয়াপুকুর থানার একটি মামলায় আসিফ খানের আইনজীবী জামিনের আর্জি জানান। আসিফের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময়ে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এই মামলাটি দায়ের করেছিল পুলিশ। এই মামলায় বিচারক এ দিন আসিফের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পেলেও আসিফ অবশ্য এখনই জেল থেকে বের হতে পারছেন না। কারণ, অন্য একটি প্রতারণার মামলাতে এখনও তাঁর জামিন মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy