ভাঙড়ে জোড়া খুনের ঘটনায় শনিবার আরও এক জনকে গ্রেফতার করল লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম দিলীপ মণ্ডল ওরফে বিল্লে। এলাকায় বিল্লে আরাবুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ভাঙড়ের তৃণমূল কর্মী রমেশ ঘোষাল খুনের ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিন তাঁকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
গত ২৫ অক্টোবর ভাইফোঁটার দিন ভাঙড়ের বেঁওতা-১ গ্রামে নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন রমেশ। এর পর দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় ভাঙড়ের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান পাঁচু মণ্ডলে বাড়িতে। ভয় পেয়ে সপরিবার পালানোর সময় পাঁচুকে তাড়া করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশি জেরায় পরে পাঁচুবাবু জানান, তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সেই সময় তাঁরা পাশের নয়ানজুলিতে লাফিয়ে পড়লে সেই গুলি গিয়ে লাগে বাপন মণ্ডল নামে অন্য এক তৃণমূল কর্মীর গায়ে। কোনও মতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন পাঁচু। অভিযোগ ওঠে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের অনুগামীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় এ বিষয়ে নিহতদের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে গেলে তাঁদের কাছে থেকে সাদা কাগজে স্রেফ সই করিয়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, আরাবুলের নির্দেশেই পুলিশ দুই পরিবারকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে। পরে সেই অভিযোগপূত্র পূরণ করেন তৃণমূলেরই এক কর্মী। এই অভিযোগ যেমন বাপনের মা চৈতালীদেবীর, তেমনই রমেশবাবুর স্ত্রী আশাদেবী ও তাঁর মেয়ে পারমিতারও। তবে আশাদেবী জানিয়েছিলেন, পুলিশের চাপাচাপি সত্ত্বেও তাঁরা জোরজবরদস্তি অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পেরেছিলেন।। পরে বারুইপুর মহকুমা আদালতে বিচারকের কাছে আরাবুল-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় রমেশের পরিবার। আরাবুল ছাড়াও যাঁদের মধ্যে ছিলেন বেঁওতা-১ পঞ্চায়েত প্রধান সৌমেন নস্কর, ভজ মণ্ডল, শঙ্কর মণ্ডল ওরফে রাজু এবং দীনবন্ধু মণ্ডল। এই চার জন খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং আরাবুল খুনের মূল চক্রী বলেও দাবি জানান তাঁরা।
আশাদেবীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার কুতুবুদ্দিন গাজি ও আলম শাহাজি নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে সোমবার ধরা পড়ে পিনাকী মণ্ডল নামে আরও এক জন। এর আগে খুনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতেরা হলেন— পাঁচু মণ্ডল, তাপস মণ্ডল, রঞ্জিত মণ্ডল, শান্তনু ঘোষাল, বাপি গাজি, দীপঙ্কর বিশ্বাস এবং নিমাই বিশ্বাস। এঁদের প্রত্যেককেই পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছিল বারুইপুর মহকুমা আদালত। শুক্রবার নিহত রমেশ ঘোষাল ও বাপন মণ্ডলের খুনের ঘটনায় বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল প্রাক্তন প্রধান পাঁচু মণ্ডল ও তাঁর দুই ছেলেকে। বিচারক ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy