Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Semester system in primary education

প্রাথমিকে হলিস্টিক-মূল্যায়ন, পাশাপাশি সিমেস্টার পদ্ধতি চালু নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষক মহলের

বছরের শুরুতে হাজিরার খাতা কী ভাবে কেনা হবে, তা নিয়ে চিন্তিত প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকেরা। স্কুলগুলির পরিকাঠামগত অবস্থাও খারাপ। এই অবস্থায় সিমেস্টার পদ্ধতি কতটা কার্যকরী হবে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে।

নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৯
Share: Save:

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শুরু হতে চলেছে ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার পদ্ধতি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রাথমিক স্কুলগুলির আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা নেই। বছরের শুরুতে হাজিরা খাতা কী ভাবে কেনা হবে তা নিয়ে চিন্তিত প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকেরা। স্কুলগুলির পরিকাঠামোগত অবস্থাও খারাপ। এই অবস্থায় সিমেস্টার পদ্ধতি কতটা কার্যকরী হবে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে।

নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহনদাস পণ্ডিত বলেন, “প্রাথমিকের স্কুলগুলিতে কম্পিউটার নেই, ইন্টারনেট ব্যবস্থা নেই, এমনকি কম্পোজিট গ্রান্টের টাকাও দিচ্ছে না সরকার। তারই মাঝে এক নয়া পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আসা হল। আসলে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকেই তুলে দিতে চাইছে সরকার।”

শিক্ষকমহলের একাংশের বক্তব্য, ২০১৯ সালে পঞ্চম শ্রেণির ১৯ হাজার পড়ুয়াকে প্রাথমিকে যুক্ত করা হয়েছে। চলতি বছরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির আর‌ও আট হাজার পড়ুয়াকে ধাপে ধাপে প্রাইমারিতে যুক্ত করা হবে, সে কথা ঘোষণা করেছে সরকার। পড়ুয়া সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বেশির ভাগ স্কুলগুলিতে ক্লাসরুম নেই, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নেই, এক বিষয়ের শিক্ষক একাধিক বিষয় পড়িয়ে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আবার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড চালু করার। তা হলে প্রশ্ন উঠছে এই দুই ব্যবস্থাই কি এক সঙ্গে চলবে? সে ক্ষেত্রে তো শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠবে।”

কয়েকদিন আগেই হলিস্টিক রিপোর্টের জন্য জেলায় জেলায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। জানুয়ারি থেকে যে শিক্ষাবর্ষ চালু হচ্ছে তাতে এই পদ্ধতিতে পঠন-পাঠন এবং মূল্যায়ন করার কথা স্কুলগুলির। আর তারই মাঝে হঠাৎ সিমেস্টার পদ্ধতি চালুর কথা ঘোষণা করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে সরকার চূড়ান্ত দিশাহীন হয়ে পড়েছে। পরিকাঠামোহীন পরিষেবাহীন ব্যবস্থাপনা কখন‌ও আধুনিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না। এতে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষতি হবে বলে মনে করছে শিক্ষকমহল।

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “প্রাথমিকে সিমেস্টার প্রথা চালু হলে নতুন হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডের সঙ্গে তার কোন‌ও মিল থাকবে না। এর ফলে প্রতিটি শ্রেণির জন্য তৈরি হওয়া প্রায় ৬০/৭০ লক্ষ হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড নষ্ট হবে। বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হবে। শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির সঙ্গে কোন‌ও আলোচনা না করেই হঠাৎ করে এই পরিকল্পনা।”

বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশ্ন, ‘‘প্রাথমিক স্তরে সিমেস্টার পদ্ধতি হচ্ছে। মাঝখানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি কিন্তু সিমেস্টার পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হচ্ছে না। বিভিন্ন স্তরে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যায়নের ফলে পড়ুয়াদের মধ্যেও তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Semester system in Primary WB Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy