Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Lifestyle education in Schools

আরজি কর-কাণ্ডের প্রভাব, ফের স্কুলস্তরে চালু হতে পারে জীবনশৈলী শিক্ষা

শিক্ষক মহলের একটি বড় অংশ মনে করছেন স্কুল স্তর থেকে এটি সিলেবাসে বাধ্যতামূলক করা হোক। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফ থেকে সিলেবাস কমিটির কাছে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

সংগৃহীত চিত্র।

অরুণাভ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২৪
Share: Save:

আরজি কর-কাণ্ডের পর জীবনশৈলী শিক্ষা রাজ্যে স্কুল স্তরে ফিরিয়ে আনার ভাবনা শুরু হয়েছে। শিক্ষক মহলের একটি বড় অংশ মনে করছেন স্কুল স্তর থেকে এটি সিলেবাসে বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফ থেকে সিলেবাস কমিটির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, “আমাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই সিলেবাস কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে। যাতে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জীবনশৈলী এবং আত্মরক্ষা। আমরা চাই বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ধরনের বিষয় পাঠ্যবইতে বাধ্যতামূলক করা হোক। আমরা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি, দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হবে শিক্ষা দফতরকে।’’

কোন কোন বিষয় পাঠ্যক্রমে রাখলে ক্লাসে শিক্ষকদের পড়ানোর ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে আবার পড়ুয়াদেরও বয়ঃসন্ধিকালে যে বিষয়গুলি জানা প্রয়োজন তা সঠিক ভাবে জানানো যাবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিলেবাস কমিটির এক আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যে স্কুলস্তরে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে বেশ অংশে জীবন শৈলী সংক্রান্ত কিছু জিনিস পড়ানো হয়ে থাকে। তা ছাড়াও কী কী প্রয়োজন তা নিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশন একটি রিপোর্ট তৈরি করছে। সেই রিপোর্ট স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে জমা দেওয়া হবে তার পর আমাদের কাছে এলে আমরা তা নিয়ে সিলেবাসে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করব।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে শিশুরা অনেক তাড়াতাড়ি অনেক কিছু শিখতে পারে। সেই শেখা এবং বইয়ের তথ্য থেকে পড়ে শেখা অনেকটা তফাৎ রয়েছে বলে মনে করছে শিক্ষক মহল।

পার্ক ইন্সটিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘কো-এডুকেশন ও জীবনশৈলী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে স্কুলস্তর থেকেই। কেরলে ইতিমধ্যে এই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। ছোট থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা করলে বয়সন্ধির পর যে অভিব্যক্তি তৈরি হয় তা অনেকটাই কম হবে। আর তার সঙ্গে এই জীবনশৈলী শিক্ষা যুক্ত হলে সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে।’’

২০০৯-১০ সালে বাম আমলে জীবনশৈলী শিক্ষা চালু করা হয়। স্কুল স্তরের জন্য বইও ছাপানো হয়েছিল। তবে সেটি বাধ্যতামূলক না হওয়ায় সিলেবাসে পরবর্তীকালে কার্যকরী হয়নি বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘বাম আমলেই জীবনশৈলী শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। বয়ঃসন্ধির ছেলে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে। কিন্তু কিছু শিক্ষক সংগঠনের বিরোধিতায় তা সর্বত্র চালু করা যায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বরং নীতি শিক্ষায় ও সামাজিকীকরণের শিক্ষায় জোর দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’’

সূত্রের খবর, মূলত এখানে বয়ঃসন্ধিকালে যে বিষয়গুলি নিয়ে মানুষ শিশু মনে বেশি প্রশ্ন জাগে সেইগুলো সিলেবাসে রাখার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, কোনটা ভাল স্পর্শ বা খারাপ স্পর্শ সেই বিষয়েও সিলেবাসে যুক্ত করা হবে। আত্মরক্ষার পাঠও যুক্ত করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে স্কুল স্তর থেকে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘সিলেবাস কমিটি পুরো বিষয়টি দেখছে। আলোচনার ভিত্তিতে যদি জীবনশৈলী, আত্মরক্ষার বিষয়টি সিলেবাসে আনা যায় তা হলে আমরা নিশ্চয়ই করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE