রাজ্যের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়। এ বার সেই স্কুলেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে চালু করা হবে কমার্স বা বাণিজ্য বিভাগ। এতদিন কলা বিভাগ বা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ থাকলেও এই শিক্ষাবর্ষ থেকে পড়ুয়ারা বাণিজ্য বিভাগেও ভর্তি হতে পারবেন।
পরের মাসের শুরুর দিকে রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার সম্ভাবনা। তার আগেই পড়ুয়াদের জন্য এমন ঘোষণা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের। প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, রাজ্যে রামকৃষ্ণ মিশনের অন্য কোনও বিদ্যালয়ে এখনও বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়নি। এই প্রথম তাঁদের কোনও বিদ্যালয়ে নানা বিষয় পড়ানো হবে।
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইষ্টেশানন্দ বলেছেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা প্রতি বছর মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফলাফল করে। এ বার তাঁদের জন্য আরও খানিকটা ‘অপশন’ বাড়ানোর কথা ভেবেছি আমরা।”
রাজ্যের অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি স্কুলে কলা বা বিজ্ঞান বিভাগের পাশাপাশি বাণিজ্য বিভাগও রয়েছে। মূলত ভবিষ্যৎ পেশাজগতের কথা ভেবেই পড়ুয়াদের একাংশ কলা বা বাণিজ্য বিভাগ বেছে নেয়। এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেছেন, “আমরা দেখি পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই শুধু চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। আবার কিছু ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করা, গবেষণা করার কথাও ভাবে। কিন্তু একটা সমাজ গঠনে তো সমস্ত পেশারই যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। যে কোনও সংস্থায় অর্থকরী দিক দেখভালের জন্য কিন্তু একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই বাণিজ্য শাখার গুরুত্বকেও লঘু করে দেখলে চলবে না।”
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানানো হয়েছে, একেবারে শুরুর দিকে নরেন্দ্রপুরের আবাসিক বিদ্যালয়ে শুধুই বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হত। ২০২০ থেকে চালু হয় আর্টস বা কলা বিভাগ। এ বার এ বছর থেকে শুরু হচ্ছে বাণিজ্য বিভাগ।
স্বামী ইষ্টেশানন্দ বলেছেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের জন্য অনলাইন মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বাণিজ্য বিভাগে অ্যাকাউন্টেন্সি, কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন এবং অর্থনীতির মতো বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বছর বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় যে গণিত বিষয়— বিজ়নেস ম্যাথমেটিক্স অ্যান্ড বেসিক স্ট্যাটিস্টিক্স চালু করেছে, তাও পড়ার সুযোগ পাবে তারা।”
আবাসিক বিদ্যালয়ে বাংলা এবং ইংরেজি— উভয় মাধ্যমেই সমস্ত বিষয় পড়ানো হবে। আগ্রহীদের থেকে আগামী ৬ মে পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। এর পর ১০ মে বিদ্যালয় আয়োজিত প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হবে।