প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকা সংগৃহীত ছবি
শিক্ষাদানই শুধু নয়, ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। তবে বহু বছর বিদ্যালয়ে পড়ানোর পর প্রাত্যহিক রুটিনে একঘেয়েমি আসতে পারে অনেকেরই। তখন যদি আরও ভিন্ন ধরনের এবং উচ্চ পদমর্যাদার চাকরিতে কেউ যেতে চান, তা হলে প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকার পদমর্যাদাটির কথা ভেবে দেখতে পারেন। প্রধান শিক্ষকের পদটি একই সঙ্গে খুব দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা দাবি করে। প্রধান শিক্ষক শুধু স্কুলগুলির প্রধান প্রশাসক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন না, একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবেও তাঁর ভূমিকা প্রচুর।
প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা :
একটি বিদ্যালয় কী ভাবে চলবে, ভর্তি প্রক্রিয়া কেমন হবে, কী ধরনের নীতি মেনে চলা হবে বা বাজেট কেমন হবে ইত্যাদির পরিকল্পনা করার দায়িত্ব এক জন প্রধান শিক্ষকের। এই বিষয়গুলিতে অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা করেই পরিকল্পনা করতে হয় প্রধান শিক্ষকদের।
এ ছাড়াও, প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের সমস্ত কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে সাহায্য করেন। তার বাইরে, শিক্ষাদানের পদ্ধতি,ক্লাসের ও পরীক্ষার সময়সূচি তৈরি করা, বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থার নানা দিকে নজর রাখা,শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া, বিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিচালন ব্যবস্থার দিকে নজর রাখা-- এই সমস্ত দায়িত্বও প্রধান শিক্ষকদের পালন করতে হয়। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার আয়োজন করে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকা পদে আবেদন জানানোর জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা :
পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকা পদে নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে গেলে কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি পাশ করতে হবে। এ ছাড়া, রাজ্য সরকার দ্বারা স্বীকৃত কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ব্যাচেলর অফ টিচিং, বিএড বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বেসিক ট্রেনিং ডিগ্রি প্রাপ্ত হতে হবে।
কাজের অভিজ্ঞতা :
এ ছাড়াও, এই পদে আবেদন জানানোর জন্য বিদ্যালয়ে ন্যূনতম ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকাও আবশ্যক।
বয়ঃসীমা :
এই পদে আবেদন জানাতে গেলে চাকরিপ্রার্র্থীদের সর্বোচ্চ বয়স ৫৫ বছর হতে হবে। সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে বয়সের কিছু ছাড় দেওয়া হয়।
লিখিত পরীক্ষা :
এই পদের জন্য একটি এক ঘন্টার লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়, যাতে ৬০ নম্বর ধার্য করা হয়। এই পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নে ১ নম্বর করে থাকে এবং কোনও উত্তর ভুল হলে তার জন্য কোনও নম্বর কাটা হয় না।
বিষয় :
যে যে বিষয়ের উপর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেগুলি হল-- সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি, গণিত, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার নানা বিষয়। প্রতিটি বিষয়েই ১৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকে লিখিত পরীক্ষায়।
নির্বাচন প্রক্রিয়া :
প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ার সময় লিখিত পরীক্ষায় ৬০ নম্বর, শিক্ষগত যোগ্যতা ও পেশাদারি কোর্সের উপর ২৮ নম্বর, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় ৫ নম্বর ও ইন্টারভিউয়ে ৭ নম্বর বরাদ্দ করা হয়। এ ক্ষেত্রে, প্রাপ্ত মোট নম্বরের উপর ভিত্তি করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
কাজের অভিজ্ঞতার জন্য ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় কোনও নম্বর দেওয়া হয় না। কাজের অভিজ্ঞতা যদি ২০ বছর হয়, সে ক্ষেত্রে ৩ নম্বর বরাদ্দ করা হয় এবং যদি সেটি ২০ বছরের উপর হয়, সে ক্ষেত্রে ৫ নম্বর ধার্য করা হয়। নির্বাচিত প্রার্থীদের শিক্ষানবিশির সময়টি শেষ হলে তাঁরা পূর্ণ সময়ের জন্য নিযুক্ত হন।
মাসিক বেতন :
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়গুলিতে প্রধান শিক্ষক পদে কমিশনের বেতন কাঠামো অনুযায়ী মাসিক বেতন দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ভাতা বাবদ অর্থও প্রধান শিক্ষকেরা পান। আনুমানিক, সর্বমোট ৮৩০০০ টাকা মাসিক বেতন পান প্রধান শিক্ষকেরা।
অতএব, উপরোক্ত তথ্যগুলি মাথায় রেখে সম্মানজনক এই পদে আবেদন জানাতেই পারেন শিক্ষকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy